কেন অবসর নেননি, জানালেন মাশরাফি

এটাই শেষ বিশ্বকাপ কিনা- বিশ্বকাপ শুরুর আগে থেকেই এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়েছে মাশরাফি বিন মুর্তজাকে। বিশ্বকাপের মাঝপথেও একই ধরনের প্রশ্ন। বিশ্বকাপের আগে বা মাঝেই যে কেবল এমন প্রশ্ন উঠেছিল, এমনও নয়। আগে থেকেই মাশরাফির অবসর নিয়ে আলোচনা ছিল। চারপাশের এতো এতো আলেচনায় বিরক্তই হয়েছেন বাংলাদেশের সাবেক এই অধিনায়ক।
অবসর নেবেন বলে মন স্থির করে ফেলেন মাশরাফি। ভেবেছিলেন ২০১৯ বিশ্বকাপে নিজেদের শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে ঘোষণাটা দিয়ে দেবেন। কিন্তু সেটা হয়নি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) চাওয়ায়। বিসিবি চায়নি পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে মাশরাফি অবসরের ঘোষণা দিক।
ঘরের মাটিতে কোনো ম্যাচ আয়োজন করে বাংলাদেশের সফলতম অধিনায়ককে বিদায় জানাতে চেয়েছিল বিসিবি। এ কারণে জিম্বাবুয়েকে এনে একটি ম্যাচ আয়োজনের কথা ভেবেছিল দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। ম্যাচটি আয়োজনে খরচ হতো ২ কোটি টাকার মতো। বিশ্বকাপে বিসিবির চাওয়ার গুরুত্ব দিলেও নিজের জন্য এতো টাকা খরচের ব্যাপারটি গ্রহণ করেননি মাশরাফি।
তাই অবসরও নেওয়া হয়নি। অবসরের এসব ব্যাপার নিয়ে ইউটিউব চ্যানেল 'নট আইট নোমান'- এ বিস্তারিত কথা বলেছেন মাশরাফি। গত মার্চে ওয়ানডে অধিনায়কত্ব ছাড়া মাশরাফি জানিয়েছেন, বিসিবির চাওয়ার কারণেই বিশ্বকাপে অবসরের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন তিনি।
মাশরাফি বলেন, 'বিশ্বকাপের শেষ ম্যাচে আমি অবসর নিতে চেয়েছিলাম। বিসিবি থেকে যদি কেউ এটা অস্বীকার করতে পারে, তাহলে আমার সামনা সামনি এসে লাইভে কথা বলতে হবে, আলাদা নয়। আমি আজ আপনাকে বলছি, তারা অন্যদিন বলবে, সেটা হবে না। আমি চেয়েছিলাম শেষ ম্যাচে অবসর নিতে। কিন্তু তখন এমন একটা কথা এসেছিল যে, এভাবে না হোক, সুন্দরভাবে হলে ভালো।'
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচটি আয়োজন নিয়ে মাশরাফি বলেন, 'জিম্বাবুয়েকে কত টাকা (২ কোটি) খরচ করে একটা ম্যাচ আয়োজন করার ব্যাপার ছিল। তখন আমার মনে হয়েছে, মাশরাফি হয়তো মাঠ থেকে অবসর নেওয়ার দাবিদার। কিন্তু একটা ম্যাচের জন্য ২ কোটি টাকার দাবিদার মাশরাফি নয়। যেখানে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের এই অবস্থা, সেখানে একটা ম্যাচের জন্য এতো টাকা তার প্রাপ্য নয়। তাই আমি তখন অবসর নিইনি। এরপর হয়তো আস্তে আস্তে চিন্তা-ভাবনায় পরিবর্তন এসেছে।'
মাশরাফি কখনই চাননি, তাকে আয়োজন করে বিদায় দেওয়া হোক। মাঠ থেকে অবসর নিতে পারলে তার ভালো লাগবে, কিন্তু কোনো আয়োজন চান না তিনি। সাবেক এই অধিনায়ক বলেন, 'ওই সময় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সেই ম্যাচের প্রস্তাব কেন নিইনি সেটা বললাম। আপনি যেটা বললেন, জিদ বিষয়টা ঠিক না। তবে এসব জিনিস মাথায় কাজ করেছে। আর আমাকে যে মাঠ থেকেই অবসর নিতে হবে, এমন কোনো প্রয়োজনীয়তাও দেখছি না।'