Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Sunday
June 08, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
SUNDAY, JUNE 08, 2025
পাড় হতে ক্রমাগত বিচ্যুত হই 

ইজেল

মানস চৌধুরী
23 July, 2022, 11:50 am
Last modified: 23 July, 2022, 04:44 pm

Related News

  • ফেরি থেকে সিএনজি-অটোরিকশা নদীতে, নিখোঁজ শাশুড়ি-পুত্রবধূর মরদেহ উদ্ধার
  • রেমিট্যান্স পাঠিয়ে সন্দ্বীপের প্রবাসীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন: ড. ইউনূস
  • ৯ ঘণ্টা পর দুই নৌরুটে ফেরি চলাচল শুরু
  • ৩ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর ফেরি চলাচল স্বাভাবিক
  • ঘন কুয়াশায় ২ নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ, মাঝ নদীতে ৪ ফেরি

পাড় হতে ক্রমাগত বিচ্যুত হই 

মোটরবাইক তখন তেমন একটা দেখা যেত না। একটা বা দুইটা কোনো ফেরিতে দেখা গেলে, কেবল আমি নয়, অনেক যাত্রীর চোখই সেগুলোতে আটকে থাকত। তবে আমার মনে পড়ে কোনো কোনো ফেরিতে এমনকি দুইটা মাত্র বাস-ট্রাকের জায়গা থাকত। কিছু ফেরিঘাটে আমাদের নামতে হতো।
মানস চৌধুরী
23 July, 2022, 11:50 am
Last modified: 23 July, 2022, 04:44 pm

আরিচায় আটক
ঘুমিয়ে ছিল যারা, কেউই সকালে চোখ খুলে স্থির বাসের কথা ভাবেনি। ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া যাকে বলে। 'কই আসছি' ছিল সাধারণ প্রতিক্রিয়া। আমি খুব বেশি ঘুমাইনি। বা অল্প অল্প ঘুমেও পরিস্থিতি পর্যালোচনার মতো সজাগ মাথা ছিল। দলপতির মাথা বলে খানিকটা। 

খানিকটা রাস্তাঘাটে আমি এ রকম থাকা রপ্ত করেছি বলে। এটা হচ্ছে আরিচাঘাটের বিরল সেসব দিন, যখন ফেরি পারাপারের কোনোরকম হিসাব-নিকাশ আর ব্যবস্থাপনাই বিশেষ কাজ করে না। একে তো শীতের কুয়াশা, তার মধ্যে পদ্মার বুকে চর বাড়ার কারণে ফেরিজাহাজের পথ পরিবর্তনÑসব মিলে রাত্রিকালে শয়ে শয়ে গাড়ি আটকা পড়ে গেছে। 

চারপাশে ঘন কুয়াশা। কুয়াশার আস্তর আর জলরাশির সীমানা আর ধূসর আকাশ সব মিলে মিশে একটা অটুট মায়াবী ক্যানভাসের মতো। ফেরিজাহাজের চূড়াগুলো আর অবয়ব আধাপ্রকাশ্য আধাসুপ্তভাবে দেখা যায়। তাতে দারুণ এক চিত্রপটের মতো লাগছিল সেগুলোকে।

তবে নদীগর্ভে ওই জাহাজগুলো দেখার জন্য আমাদের বাসটাকে অন্তত নদীপ্রান্ত পর্যন্ত আসতে হয়েছে। দফায় দফায়, কুঁতে কুঁতে, শেষ রাত্তিরে, যখন আমার দলের অধিকাংশ সাথি ঘুমোচ্ছিল, আমাদের বাসখানা ধীরে ধীরে নদীপ্রান্তে পৌঁছাচ্ছিল। এদের সকলের ঘুমভাঙা মুহূর্তে আমরা নদীপ্রান্তে। 

কিন্তু বাস্তবে সকলেই তখন থাকতে আশা করেছিলেন বেনাপোল/পেট্রাপোলের দেশ-পারাপার অফিসের সামনে। হিসাব অনুযায়ী তা-ই হয়। ২০০৭-এর কথা হবে। আমি বিদেশবাস শেষে ফেরার পর, বিশ্ববিদ্যালয়ে নৃবিজ্ঞান বিভাগের বয়োজ্যেষ্ঠ শিক্ষকেরা অনুরোধ করলেন যেন এমএ ক্লাসের শিক্ষার্থীদের তথাকথিত সার্ক-ভ্রমণের সাথি আমি হই। কেউ হতে চাইছিলেন না বলে ৪ মাস ধরে অনুমতি পেয়েও তারা বসে আছে। আবার কোনো শিক্ষক সাথে না গেলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও অনাপত্তিপত্র দেয় না। 

আমি নিজে অতিশয় ভ্রমণ-অনিচ্ছু ধরনের লোক। দলেবলে তো আরও নই। ছলে-বলে-কৌশলে আমি সকল প্রকারের দলে-বলে না-থাকা রপ্ত করেছি। কিন্তু আড়াই বছরের বিচ্ছেদের ভারেই হোক, কিংবা কর্তব্যনিষ্ঠার কারণেই হোক এই পনেরোজনের দল নিয়ে আমি তথাকথিক সার্কের দেশে তথাকথিত শিক্ষাভ্রমণে বের হয়েছি। এটা বাস্তবে ভারতে ঘুরে বেড়ানোর দুর্বার বাসনা হিসেবে দেখাই সঠিক হবে। আর্থিকভাবে সেটা এদের জন্য সম্ভবপর ছিল। আর ঘুরে শিক্ষা পাবার বিষয়টা আমি কমবেশি মুসাফিরদের জন্যই বরাদ্দ রাখি, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বেলায় 'ধান্দা' হিসেবে দেখি; বড়জোর 'কোমল ধান্দা'। 

ফেরিতে বাস পারাপারের বৃত্তান্ত বাংলাদেশে যাঁরা জানেন, তাঁরা এসব দীর্ঘ অপেক্ষার বিষয়ে অবগত ও প্রস্তুত থাকেন। শীতকালে তো বটেই। আমার বেলাতে সেটাও দরকার পড়ে না। আমি অপ্রস্তুত অবস্থাতেও আনন্দে থাকতে পারি। নামলাম, বাসে বসে থাকার মানে নেই বলে। নদীপাড়ে গাড়ির সারি জমে আছে বলে ঘুম ভাঙতে না ভাঙতেই আশপাশের গ্রামবাসীরা মানুষের মেলা দেখতে চলে এসেছেন। শিশুরাই বেশি। দেখা গেল কজন পুলিশ অফিসারও। 

রাতজাগা এসব পুলিশের মধ্য থেকে কর্তাস্থানীয় একজন আমাকে দেখে এগিয়ে এলেন। তাঁর হাঁটার ভঙ্গিতে মনে হলো তিনি কর্তাস্থানীয় হবেন। আমার বিব্রত হতেই হলো তাঁকে চিনিনি বলে। আর তিনি সপ্রতিভ থাকলেন সাবেক জাহাঙ্গীরনগরীয় হিসেবে আমাকে চিনলেন বলে। তিনি মানিকগঞ্জের এএসপি বা এ রকম কিছু ছিলেন। কী যে নাম তাঁর, আজ আর মনে পড়ছে না। তাতে তিনি বা পাঠক সকলেই নিশ্চয় ক্ষমা করবেন আমাকে। 

আমি ভাবলাম, এই সার্কপ্রীতিসম্পন্ন কিংবা পীড়িত যুবক-যুবতীদের মনোরঞ্জনের জন্য খেঁজুর রস খাওয়ানো যেতে পারে। আমার ভাবনা প্রকাশ করতে দেরি হলো না। পুলিশ অফিসার, আশপাশের গ্রামবাসী প্রায় আসামি পাকড়াও করে আনার মতো ঠিলাওয়ালা এনে জড়ো করলেন। দেখলাম, আমার টার্গেট পপুলেশন ততটা রসগ্রাহী বা রসাগ্রহী নয়। আমি ভাবলাম হয়তো বাথরুম-আশঙ্কাতে। কিন্তু এই পনেরোজনের অনেকেই ঘোষণা দিলেন 'কখনো খাই নাই তো স্যার, সেই জন্য...।' এই রকম সত্যভাষণের পর দমে যাবার কথা। 

তবে আমার ইচ্ছা হয়েছিল যে উৎসাহী সকল আয়োজক, এমনকি পুলিশদেরও খেঁজুরের রস খাওয়াই। অন্তত জারিত হবার আগপর্যন্ত বাংলাদেশে খেঁজুর রস শরম বা আইন কোনোটাতেই আটকে যায় না। তবে এই কাজ করার জন্য আমার বেতন কিংবা ঠিলার পরিমাণ কোনোটাই বিশেষ সহায়তা করেনি।

এরপর আমাকেই দেখা গেল, ঢাকা থেকে ঘণ্টা দশেক পরেও আরিচার ফেরিঘাটে আটকে থাকা অবস্থায়, অত্যন্ত খুশিমনে, কুয়াশার ধূসর চিত্রপ্রবাহের মধ্যে, ফেরিজাহাজের পশ্চাৎপটে বেশ কয়েক গেলাশ খেঁজুর রস খেতে। ফেরিঘাটে সকল ক্রিয়াই সংগত, সঙ্গমুখর আর সচ্ছন্দ।  

কামারখালির সন্দেশ
সড়ক আর নদীর সম্পর্কবিষয়ক অনেকখানি আলাপ জুড়ে থাকত ওই সব ছোট ছোট চাকরিজীবীদের। কিংবা হয়তো বড় বড় চাকরিজীবীদেরও থেকে থাকতে পারে। কিন্তু অনেক বড় চাকরিজীবী দেখার অবকাশ আমার হয়েছে খুবই কম। আসলে হয়ইনি তেমন। যত দিনে বড় বড় চাকরিজীবীদের দু-চারজনকে স্বচক্ষে দেখতে শুরু করেছি, তত দিনে সড়কপথ আর নদীপথের সম্পর্ক গুরুতর বদলে গেছে।

কিন্তু চাকরিজীবীদের আলাপে আরেক মাত্রায় সড়ক আর নদী এসে হাজির হয়েছে। সড়কপথের সাফল্যের জয়গাথা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এসব কাহিনিতে। কত দ্রুত কোথা থেকে কোথায় চলে যাওয়া যায় এর একটা পাল্লাপাল্লির কাহিনী। 

আর এসব কাহিনীতে ফেরি পারাপারের বদলে সেতুর নির্মাণ বড়সড় অর্জন বলে বিবেচিত। বড় শহর থেকে বৃহত্তর পিতৃবংশের বাড়িতে কিংবা শ্বশুরবংশের বাড়িতে যাবার সুলভ ব্যবস্থা হিসেবে নতুন নতুন সেতু লাগাতার গল্পসূত্র সরবরাহ করে থাকে। কিংবা পরের প্রজন্মের হলে দাদাবাড়ি বা নানাবাড়ি। এমনকি বড় চাকরিজীবীদেরও এসব আলাপ আছে। এমনকি সমকালেও আছে।

কিন্তু আমি বলছি সেই ৪০-৪৫ বছর আগের কথা; আর ছোট সব চাকরিজীবীদের কথা। আমার বাবা ছিলেন সেই ছোট চাকরিজীবীদের দলে, সরকারি স্কুলের এক শিক্ষক, যিনি মেহেরপুর থেকে বরগুনা যাবার চেষ্টাতে দুই ছেলে মেয়ে স্ত্রী আর কতগুলো পোঁটলাসমেত পূজার ছুটিতে রওনা দিতেন।

বাবার মেহেরপুর বদলিকে তিনি ও মা চিরকালই একটা শত্রুতামূলক তৎপরতার ফলাফল হিসেবে দেখে এসেছিলেন। পরিস্থিতির বিচারে হয়তো সে রকম বলাই চলে। স্কুলশিক্ষকদের এত দূরগামী কোথাও সাধারণত বদলি দেয়া হয় না। কিন্তু এসব বিচার করবার কোনো সামর্থ্য ওই বয়সটাতে আমার ছিল না। বরং পূজার ছুটির জন্য টানটান অপেক্ষার কথা মনে করতে পারি।

অন্তত মেহেরপুর বদলি হবার ৩-৪ বছর পর্যন্ত, যত দিন না আমার নানি ও মামারা ইন্ডিয়া পাড়ি জমিয়েছেন। বাবার পিতৃভূমি পিরোজপুর না যাবার নানাবিধ কারণ ছিল, সবচেয়ে বড় কারণ সম্ভবত এই যে তিনি মাতৃহীন ছিলেন ছোট থেকে। কিন্তু আরেকটা কারণ নিশ্চয়ই এটা, বড় হয়ে যা আরও বুঝতে পারি যে তিনি চাইতেন মা যেন বরগুনাতে তাঁর ভাই-বোন আর মায়ের সাথে এই সময়টা কাটাতে পারেন। 

পূজার বিষয়টা কেবল বাবার ছুটির প্রসঙ্গ নয়। বরং সামান্য যে টাকাটা তিনি বোনাস হিসেবে পেতেন, তার বাইরে কোনো ভ্রমণ পরিকল্পনা করার উপায় তাঁদের ছিল না। আগের কদিন মা-বাবার অনেকগুলো সভা হতো। বড় হয়ে বুঝেছি, সেগুলো ছিল ম্যানেজমেন্ট এবং ফিন্যান্স মিটিং।

ছোট বাসার মধ্যে আমি বা আমার ছোট বোন এসব মিটিংয়ের সদস্য ছিলাম না। কিন্তু তাঁদের নানাবিধ আলাপের টুকরা নিয়ে আমরা উত্তেজিত হতাম। অথবা মামাবাড়ি যাবার জন্য আমাদের এমনিতেই টইটুম্বর উত্তেজনা থাকতই। নানাবিধ সেসব আলাপের মধ্যে ফেরিঘাট বিষয়ও আসত। ফিন্যান্স বা ম্যানেজমেন্ট-বিষয়ক কোনো উপাদান এগুলোর সরবরাহ করতে পারার কথা নয়। এগুলো হয়তো আনুষঙ্গিক আলাপ। কিংবা চূড়ান্ত বিচারে হয়তো ম্যানেজমেন্টেরও। 

যা মনে হয়, বাবা ঠিক দুঃসাহসী লোকদের কাতারে পড়েন না। ঝিনাইদহ থেকে বরিশাল যাবার পথে পাঁচটা নদী পড়ে, যার কোনোটাতেই সেতু ছিল না। বা সবগুলোতেই ফেরি পারাপার ছিল। এই পাঁচটা ফেরির নাম আমি ওই বয়সেও বাবার কাছ থেকে কয়েকবার মুখস্ত করার চেষ্টা করেছিলাম। সম্ভবত কিছুদিন মুখস্ত ছিলও। তবে আমার ধারণা, স্মৃতিভ্রষ্ট হবার আগপর্যন্ত বাবা আজীবনই পারতেন।

আমি এখন একটারও নাম মনে করতে পারি না, কামারখালি ছাড়া। সম্ভবত বাবার লাগাতার উৎকণ্ঠাভরা মাথায় ওই নদীগুলো ফেরিসমেত হাজির হয়ে থাকত। হয়তো সেসব উৎকণ্ঠার একটা পর্যালোচনা হিসেবে বাবা সেগুলো আলাপে আনতেন। ছোট ছোট ফেরিতে চারটা করে বাস বা ট্রাক উঠতে পারত। কিছু যাত্রী যাঁরা পায়ে হাঁটা মানুষ আর নদী পারাপারের জন্য ফেরি ব্যবহার করতেন। 

মোটরবাইক তখন তেমন একটা দেখা যেত না। একটা বা দুইটা কোনো ফেরিতে দেখা গেলে, কেবল আমি নয়, অনেক যাত্রীর চোখই সেগুলোতে আটকে থাকত। তবে আমার মনে পড়ে কোনো কোনো ফেরিতে এমনকি দুইটা মাত্র বাস-ট্রাকের জায়গা থাকত। কিছু ফেরিঘাটে আমাদের নামতে হতো। অন্তত, বাসচালকেরা চাইতেন যাত্রীরা যাতে নেমে যান। রাস্তার থেকে নদীগর্ভ অনেকটা ঢাল, কিংবা রাস্তা দুর্দশাগ্রস্ত যখন, তখন বাসচালকেরা বাসের ওজন কমাতে চাইতেন। কিংবা হয়তো যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাইতেন। কিন্তু ওই বয়সে সেগুলোতে বিরক্ত হতাম আমরা। 

কিন্তু বাবা নামতেন। যেগুলোতে নামার বাধ্যবাধকতা ছিল না সেগুলোতেও। এটাকে তিনি তাঁর পান খাবার একটা সুযোগ হিসাবে নিতেন। তিনি পকেটে কয়েকটা পান নিয়ে আসতেন। কিন্তু বড় হবার পরে বুঝেছি, নিজে যখন যত্রতত্র চা খেতে নামি, নানান জায়গার পান খাবার ইচ্ছাটা আসলে একটা রোমাঞ্চমূলক তৎপরতা। আর নামতেন যেসব ফেরিঘাটে প্রসিদ্ধ মিষ্টি পাওয়া যেত তা কিনতে। যেমন কামারখালির সন্দেশ। শাশুড়ি-শালা-শালীর জন্য কিংবা ফিরবার পথে হলে আমাদের জন্য। 

যেন একটা কল্পদৃশ্যের মতো: ফেরি তুমুল গর্জন তুলেছে, ভেঁপু বাজতে শুরু করেছে আশপাশের সকল শব্দছন্দকে তছনছ করে, জলের মধ্যে প্রপেলারের ভীতিপ্রদ আওয়াজ শুরু হয়ে গেছে, যেন বা ফেরিটা তখন এক ইঞ্চি, দুই ইঞ্চি করে পাড় থেকে সরে যেতে শুরু করেছে; বাবা তখনো মিষ্টির দোকানের সামনে দাম চুকাচ্ছেন, বাসের জানালা দিয়ে আমরা দেখছি, ফেরি আরও দুই ইঞ্চি সরে গেল। আর আমার ছোট্ট বুকটার মধ্যে ঢাকের শব্দের মতো জোরে হৃৎপি- নড়ছে। ধুকপুক, ধুকপুক, ধুকপুক...


     
সেতুর দিকে চেয়ে-থাকা ব্যথাতুর চোখ  
অনেকগুলো বিদেশি শব্দের মতোই ফেরি খুবই দ্রবীভূত হয়ে যাওয়া একটা বাংলা শব্দ। ফেরির সাথে ঘাট শব্দটার শব্দবন্ধ ঘটিয়ে এই অঞ্চলে নদীপাড়ের ওই ভৌত জায়গাটাকে নির্দিষ্ট করে ফেলা যায়। কিন্তু পারাপারের বাহনটার চরিত্র নির্ধারণ করার জন্য আরেক রাস্তা লাগে। সেখানে ফেরিজাহাজ না বলেও যন্ত্রচালিত নদী পারাপারের বাহনটাকে বোঝানো যেতে পারে, কিন্তু যন্ত্রচালিত নয় এমন বাহনকে বোঝানোর জন্য অন্তত ফেরিনৌকা বলতে হবে। বা কাছাকাছি কিছু একটা।

'পারানির নৌকা' এমনিতেও নদীগর্ভ বাংলাদেশের বহু প্রাচীন ভাষা। সাহিত্যে খেয়া বলে একটা পদ আছে, যা আসলে ইংরেজি ফেরি শব্দের সমরূপ। কিন্তু মনে হয় না যে সৃজনশীল সাহিত্যের বাইরে আদৌ এই শব্দটা দিয়ে আর কেউ কোনো কিছু বুঝিয়ে থাকেন। 

তার মধ্যে নজরুলের 'খেয়া পারের তরণী' ফেরিঘাট বা ফেরিনৌকাকে সামান্যই আশ্রয় করেছে। তিনি বরং তাঁর ইসলামিক ইমানের স্বাক্ষর রেখেছেন যেসব কবিতায়, এটা তার মধ্যকার একটি। রবীন্দ্রনাথের কাব্যগ্রন্থ 'খেয়া' তাঁর চর্চিত রোম্যান্টিকতার মধ্যেই দারুণ বেদনা-উদ্ভাসিত এক কাব্য। অজস্র মানুষের পারাপার, তাঁদের নানাবিধ চিত্তপ্রবাহ, আর সেসবের সাথে বাস্তুর সম্পর্ক ও বিচ্ছেদ এসব নিয়ে তিনি ভাবিত ছিলেন এই কাব্যগ্রন্থে। কিন্তু তাঁর কাব্যপাঠ আজকেই সেরে ফেলতে হবে, এ রকম চাপ নিচ্ছি না; খুব জরুরি মনে হলে তা আরেক দিন হতে পারবে। 

সাধারণত নদীগামী নৌকা আর পারানির-নৌকা আলাদা হয়ে থাকত। এখনো থাকে। এদের গতিপথ ভিন্নমুখী। পারানির-নৌকা অবধারিতভাবে নদীকে উল্লম্ব করে কেটে চলাচল করে। অবধারিতভাবে তা নির্দিষ্ট তোলার টাকা সংগ্রহ করে। অবধারিতভাবেই এই নৌকা চালিয়ে মানুষ পারাপার করার জন্য বার্ষিক ইজারা নিতে হয়। অন্তত কলোনিয়াল ব্যবস্থাপনার সময় থেকে এই বন্দোবস্ত হবার কথা। এসব পারানির নৌকা এখনো সেতু না তৈরি হওয়া অজস্র নদীনালাতে বিরাজিত আছে। 

তুলনায়, খালে তৈরি হয় 'কম্যুনিটি' সেতু, বাঁশ কিংবা সুপারিগাছের শরীর দিয়ে। তারপরও ফেরিনৌকা বললে, নিছক একটা নৌকার ভৌতদেহের তুলনায় দৃশ্যকল্প হাজির হবার কথা পাশাপাশি দুই বা তিন নৌকার দেহের ওপরে সারবাঁধা বাঁশের মাচা বসিয়ে একটা অখ- বানানো-যান।

সেই মাচাটা এত বড় যে তার ওপর মানুষ, সাইকেল, মোটরবাইক, গরু-মহিষ উঠে পার হতে পারে। এমনকি সদ্যকৃত মোটরগাড়ি কেউ গ্রামে দেখাতে নিয়ে এলেও সেটা এ রকম মাচা-ফেরিনৌকায় চড়তে পারে। এখন না পারলেও কখনো চড়েছিল। তারপর বড় বড় বাঁশের লগি দিয়ে নদীগর্ভের কাদামাটির মধ্যে খুঁটি গেঁড়ে- গেঁড়ে একাধিক মাঝি সেই জোড়ানৌকা নদী পার করাচ্ছেন, গরু-মানুষ-গাড়িসমেত। 

প্রতিবার বাঁশের লগি মাটিতে পুঁতে আগানোর সময় তাঁদের কণ্ঠনালির পাশের পেশিগুলো তীব্র-তীক্ষè হয়ে উঠছে। এগুলো সাধারণভাবে বাংলাদেশের শরীরের দিকে সাধারণ মনোযোগ দিলেই জানা যায়। নতুন কোনো কথা নয়। কিন্তু আমি ভাবছিলাম অন্য একটা সম্ভাবনার কথা। হয়তো কল্প-সম্ভাবনা। অন্তত আমার এ রকম কিছু মনে পড়ছে না। 

আমার সামান্য-পড়া মাথাতে এখন এমন কোনো ছোট গল্প মনে পড়ছে না, যেখানে কোনো পারানির মাঝিকে নায়ক পেয়েছি। আমার ধারণা, এটা নিছকই আমার পড়ার দৌড় ছোট বলে, কিংবা আমার স্মৃতিশক্তির প্রখরতার অভাবে ঘটছে। নাহলে এই দুর্দান্ত পরিক্ষেত্রের দুর্দান্ত 'নায়ক'কে নিয়ে কেউ গল্প না লেখার কথা নয়। কে হতে পারেন? ইছামতীতে এ রকম কেউ আছেন? তিস্তাপাড়ের বৃত্তান্ততে? কিংবা পদ্মার পলিমাটিতে? এখন কি এসব আবার খুঁজে খুঁজে দেখব এই রচনার সময়ে? কেন দেখব? 

তা ছাড়া আমি তো খুঁজছি একটা আস্ত ছোট গল্পের পারাপারকারী নায়ক। উপন্যাসের অজস্র দৃশ্যপটের মধ্যকার একটা দৃশ্যপটে মাত্র তাঁকে দেখতে চাইছি না। যদি থাকে, হয়তো, কার রচনায় থাকবে? সুবোধ ঘোষ? এসব উচ্ছ্বলতা মাথার কোষগুলোর ইচ্ছানিরপেক্ষ নড়াচড়া মাত্র।

এসব জিজ্ঞাসার সুনিশ্চিত মীমাংসা হয় না। হতে পারে কেবল নতুন অভিনিবেশ, কিংবা গবেষণা। কিন্তু আমাদের সকল অনুভূতি-ভাবনাই গবেষণায় পর্যবসিত হওয়াও তো কাজের কথা নয়। গবেষণারাজি নানাবিধ সারকথার কাছে আমাদের নিতে পারে নিশ্চয়ই, কিন্তু অসাড় মনের সুপ্ত উচ্ছ্বলতাগুলোরও তো অনেক গুরুত্ব! 

আমার ভাবতে ভালো লাগছে, যে-গল্পটা না লেখা হয়ে থাকলেও যেন বা লেখা আছে, হয়তো সুবোধ ঘোষই লিখেছেন, কিংবা শরৎচন্দ্র লিখলেও ক্ষতি নেই; আবার মশিউল আলম লিখে থাকলেও একই রকম অমূল্য, যেখানে একজন বা দুজন ঘাট-পারানির মাঝি প্রতিদিন পারাপারের সময় তাকিয়ে থাকেন নতুন বসানো সেতুর পিলারগুলোর দিকে। তাঁরা দেখতে থাকেন অনাগত দিনের কংক্রিটের সেতুখানা।

এসব দর্শনে তাঁদের মনের ভাবনাপ্রবাহ যেন বা আমরা সবটা বুঝে উঠতে পারছি না; পারছেন না এমনকি সুবোধ ঘোষও। কিন্তু এই যে অনাগত সেতুটার রূপসামর্থ্যের দিকে তাকিয়ে থাকা, কিংবা সেটা নিয়ে আলাপের প্রবাহ, কিংবা চূড়ান্ত বিচারে হয়তো আলাপহীনতা, নৈঃশব্দ্য এর সাথে চাকরিজীবীদের সেতু-আলাপের সঙ্গে কোনোই নৈকট্য থাকার কথা নয়।     
     
'দিনের আলো যার ফুরালো, সাঁঝের আলো জ্বলল না'
যখন সড়কগুলো নিছকই পড়ে থাকে, ঘন ধূসর কালচে পিচের সড়ক, মনে হয় যেন বা ঘুমায়। অথচ ঘুমন্ত সড়ককে কখনো দেখার জন্য একটাও মানুষ আর জাগন্ত থাকেন না। কিংবা যখন জাগ্রত মানুষকুল সেই ঘুমন্ত সড়ককে দেখতে যান, তাঁদের সাথে যন্ত্রশকট থাকুক বা না থাকুক, অমনি সড়কের ঘুম ভেঙে যায়। নশ্বর মানুষকুলের কখনোই তাই ঘুমন্ত সড়ককে দেখা হয়ে ওঠে না। 

নদীকুল সেই অর্থে কখনোই ঘুমন্ত থাকে না। সবচেয়ে নিথর যে কাল, তখনো এর জলরাশি টুপটাপ ঝিলমিল কথা বলে চলে। কোনো মনুষ্যজাতির সদস্য তার শ্রোতা থাকুক বা না-ই থাকুক। ঘুমন্ত কিংবা জাগন্ত সড়কেরা নদীসমুখে এসে আকস্মিক বাধা পড়ে যায়। এই ছেদ সড়ক বা তার নির্মাতাদের এক অমোঘ পরিণতি। এর বিধিলিপি বদলানো যায় না। নদী সেখানে সার্বভৌম। আর ফেরিরা সড়কের যতিকে, কিংবা হয়তো নতিকে, নদীর সার্বভৌমত্বের সামনে মূর্ত করে তোলে।

এসব আমি জানতাম। তাই আমাদের ভাড়া করা সেডান গাড়ির চালককে আর কষ্ট দিতে চাইনি। আমি জানতাম কয়েক কদম হেঁটে গেলেই নদী পেয়ে যাব। আর সেখানে লোহার যন্ত্রটা দাঁড়িয়ে থাকবে, কিংবা আমরা দেখতে পাব যে সে নদীগর্ভে আছে। পরের বার ফিরে আসা পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করব। তারপর ফেরিতে পথচারী হিসেবে পার হব। আমরা মানে আমি আর আমার স্ত্রী, বন্যা।

আমি ৪২ বছর পরে 'দাদাবাড়ি' যাচ্ছি। সাথে আমার স্ত্রী যাবার সিদ্ধান্ত নিলেন। যাচ্ছি এক চাচাতো বোনের 'ক্রিয়াকর্মে'। জীবিতকালে যাঁর সঙ্গে কোনো সাক্ষাৎ স্পষ্ট মনে করতে পারি না, তাঁর মৃত্যু-উত্তর অনুষ্ঠানে। আমার দাদাবাড়ি আর মৃতা বোনের শ্বশুরবাড়ি কাছাকাছি গ্রাম।

আমরা বরিশাল বিমানবন্দর থেকে সেডান গাড়ি ভাড়া করে এই অভূতপূর্ব সফরটা করছি, যাত্রাপথ সহজকরণের স্বার্থে। কিন্তু আমাদের ভাড়া-গাড়ির পরহেজগার চালক এই অতিথিদের কিছুতেই ফেরি পর্যন্ত না এগিয়ে কর্তব্য শেষ করতে চান না। তিনি এক দোকানিকে তাঁর গাড়ি পাহারা দিতে বলে আমাদের সাথে নদীপথ পর্যন্ত যেতে থাকলেন। সম্ভবত তিনি আমাদের আগেই যন্ত্রফেরির গর্জন শুনতে পাচ্ছিলেন। ঘোষণা দিচ্ছিলেন যে এটা ধরতে পারলে আমাদের সময় বাঁচবে।

যেন আমরা আরেকটু দ্রুত পায়ে হাঁটি। তিনি সঠিক ছিলেন। আমাদের লাফ দিতে হয়নি। ভূমিপাড় থেকে ফেরি বিচ্যুত হবার আগের মুহূর্তেই আমরা ফেরিতে উঠতে পেরেছিলাম। নদীটা বলেশ্বরী। আর ফেরিঘাটের নাম সম্ভবত বেকুটিয়া। 

ফেরি চালু হলে আমরা জলরাশির দিকে তাকিয়ে থাকলাম। ইঞ্জিনের কোনায় ফেরিযন্ত্রে একটা দেয়ালের মতো বাঁকে নদীর কচুরিপানাগুলো দলা পাকিয়ে ঘুরছিল। ইঞ্জিনের গর্জনের মধ্যে অদ্ভুত এক মন্ত্রের মতো নিস্তব্ধতাও তৈরি হয়েছিল। আমরা অন্যান্য যাত্রীদের দিকে তাকালাম। কারও চেহারা বাসে-চড়া। কারও চেহারা ক্লান্ত। আরও কয় মিনিট পরে, যখন দুজনেই জলরাশির দিকে আবারও তাকিয়ে, বন্যা ওর মোবাইল ক্যামেরাতে দলা-পাকাতে-থাকা কচুরিপানাগুলোকে ভিডিও করতে থাকল। খামোকাই। আমিও সেই কচুরিপানা আর ঘূর্ণায়মান জলরাশি দেখতে থাকলাম। খামোকাই। 

আমরা যাচ্ছি 'বাড়িতে'। হোক ৪২ বছর পরে, তবুও তো 'বাড়ি'। হোক কোনো জমির হিস্যা আমার তাতে নাই, কিংবা বন্যারও। তবুও তা 'বাড়িই'। অথচ যে ভূমিপ্রান্ত হতে এই ফেরি বিচ্যুত হয়ে এসেছে, সেদিকটাকেই আমার বাড়ি মনে হতে থাকল। যেন বা এই যাত্রা এক জঠরবিযুক্তি। ফেরি যতই নদীর সেই প্রান্তে যেতে থাকল, যে প্রান্তের অল্প দূরেই আমার 'দাদাবাড়ি', ততই যেন বা পাড় থেকে ক্রমাগত বিচ্যুত হতে থাকলাম।

যেন বা ফেলে আসা ওই পাড়েই দাঁড়িয়ে রয়েছেন আমার মা, প্রায় কখনো দেখা না-হওয়া আমার পিতামহ, বাবার শৈশবে হারানো আমার পিতামহী, সদ্যমৃত আমার বাবা; এমনকি আমার বউ, যে কিনা তখন আমার পাশেই দাঁড়িয়ে ফেরির পাটাতনে রৌদ্রমাখা মুখে। যেন বা সকলের সাথে মহাকালের এক বিচ্ছেদলিপি লিখতে লিখতে যেতে থাকল ফেরিযানখানা! 

আদাবর। ৮ জুলাই ২০২২। বিকেল ৪:৩১  
 

 

Related Topics

টপ নিউজ

ফেরি

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • চীনের কাছ থেকে এবার স্টেলথ ফাইটার পাচ্ছে পাকিস্তান
  • পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বন্যার ফলে যেভাবে সৃষ্টি হয়েছিল ভূমধ্যসাগর
  • নির্বাচন আয়োজনের জন্য আগামী ঈদুল ফিতরের পর এক মাস সময় যথেষ্ট: বদিউল আলম মজুমদার
  • অনিরাময়যোগ্য রোগী যারা, কেমন কাটবে তাদের ঈদ
  • কোভিড-১৯: আবারও জনসমাগমপূর্ণ এলাকায় মাস্ক পরার পরামর্শ
  • কসাই নিয়ে কাড়াকাড়ি!

Related News

  • ফেরি থেকে সিএনজি-অটোরিকশা নদীতে, নিখোঁজ শাশুড়ি-পুত্রবধূর মরদেহ উদ্ধার
  • রেমিট্যান্স পাঠিয়ে সন্দ্বীপের প্রবাসীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন: ড. ইউনূস
  • ৯ ঘণ্টা পর দুই নৌরুটে ফেরি চলাচল শুরু
  • ৩ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর ফেরি চলাচল স্বাভাবিক
  • ঘন কুয়াশায় ২ নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ, মাঝ নদীতে ৪ ফেরি

Most Read

1
আন্তর্জাতিক

চীনের কাছ থেকে এবার স্টেলথ ফাইটার পাচ্ছে পাকিস্তান

2
আন্তর্জাতিক

পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বন্যার ফলে যেভাবে সৃষ্টি হয়েছিল ভূমধ্যসাগর

3
বাংলাদেশ

নির্বাচন আয়োজনের জন্য আগামী ঈদুল ফিতরের পর এক মাস সময় যথেষ্ট: বদিউল আলম মজুমদার

4
ফিচার

অনিরাময়যোগ্য রোগী যারা, কেমন কাটবে তাদের ঈদ

5
বাংলাদেশ

কোভিড-১৯: আবারও জনসমাগমপূর্ণ এলাকায় মাস্ক পরার পরামর্শ

6
ফিচার

কসাই নিয়ে কাড়াকাড়ি!

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net