Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Friday
May 09, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
FRIDAY, MAY 09, 2025
মুর্তজা বশীরের শেষ স্বপ্ন

ইজেল

এস এম সাইফুল ইসলাম
21 August, 2020, 09:35 pm
Last modified: 22 August, 2020, 10:05 am

Related News

  • মুর্তজা বশীরের মূর্ত-বিমূর্ত নারীরা
  • মুর্তজা বশীরের শেষ আত্মপ্রতিকৃতি ও একটি সাক্ষাৎকার
  • ‘বশীর আর আমিনার অব্যক্ত ভালোবাসা’
  • মুর্তজা বশীরকে লেখা সাঈদ আহমদের অপ্রকাশিত চিঠি
  • বাবার সাথে কথোপকথন

মুর্তজা বশীরের শেষ স্বপ্ন

উপমহাদেশের খ্যাতিমান ভাষাবিদ, জ্ঞানতাপস ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ এবং মরগুবা খাতুনের কনিষ্ঠ পুত্র মুর্তজা বশীর ১৯৩২ সালের ১৭ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ফুলার রোডের বাসায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর শিক্ষা জীবন শুরু হয় ঢাকার নবকুমার ইন্সটিটিউশনে। এরপর তিনি বগুড়ার করোনেশন ইন্সটিটিউশন থেকে ম্যাট্রিক পাশ করেন।
এস এম সাইফুল ইসলাম
21 August, 2020, 09:35 pm
Last modified: 22 August, 2020, 10:05 am

মুর্তজা বশীর। পুরো নাম আবুল খয়র মুর্তজা বশীরুল্লাহ্। বাংলাদেশের চারুশিল্পের অগ্রভাগের ইতিহাসে তিনি একটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ও বড়সড় অধ্যায়। এমন একজন চিত্রশিল্পী তিনি, যাঁকে শুধু এই একটি পরিচয়ে পুরোটা ধরা যায় না। তিনি একাধারে অধ্যাপক, গবেষক, কবি, লেখক, চিত্রনাট্যকার, শিল্পনির্দেশক এবং মুদ্রা ও ডাকটিকিট বিশারদ। সত্যিকার অর্থে এ অঞ্চলে তাঁর মতো আর কেউ নেই। আমাদের কালে শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতি জগতে তিনি ছিলেন বহুমুখী প্রতিভাসম্পন্ন একজন আকর্ষণীয় কুশীলব।

বাংলাদেশে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে আধুনিক শিল্পকলা চর্চা শুরু হয় শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের আর্ট স্কুল প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে, ১৯৪৮ সালে। যা বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ হিসাবে খ্যাত। দুনিয়ার মূল শিল্পধারার সমান্তরালে বাংলাদেশের চারুশিল্পের প্রতিষ্ঠা এবং বিকাশের ক্ষেত্রে জয়নুল ও তাঁর কয়েকজন সহযোদ্ধা-শাগরেদ বিশেষ অবদান রেখেছেন। মুর্তজা বশীর তাঁদের মধ্যে অত্যন্ত স্বতন্ত্র এবং অনন্য সাধারণ হিসাবে বিবেচিত হয়ে ওঠেছিলেন। 

মুর্তজা বশীর (জন্ম ১৭ আগস্ট ১৯৩২- মৃত্যু ১৫ আগস্ট ২০২০)

উপমহাদেশের খ্যাতিমান ভাষাবিদ, জ্ঞানতাপস ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ এবং মরগুবা খাতুনের কনিষ্ঠ পুত্র মুর্তজা বশীর ১৯৩২ সালের ১৭ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ফুলার রোডের বাসায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর শিক্ষা জীবন শুরু হয় ঢাকার নবকুমার ইন্সটিটিউশনে। এরপর তিনি বগুড়ার করোনেশন ইন্সটিটিউশন থেকে ম্যাট্রিক পাশ করেন। সেই সময়ের একটি ঘটনা। ১৯৪৮ সাল। বশীর তখন দশম শ্রেনিতে পড়েন। বাড়ির বদ্ধ পরিবেশ তাঁর ভালো লাগছে না। হুটহাট করে বাড়ি থেকে পালিয়ে তিনি লক্ষ্ণৌ চলে গেলেন। সেখানে যাওয়ার ক'দিন পর বাড়ির জন্য তাঁর মন কাঁদে। কী আর করা! তিনি আবার বাড়ি ফিরে এলেন। বশীরের পিতা বাড়িতে তাঁকে দেখে শান্ত স্বরে জিজ্ঞেস করলেন— 'কোথায় গিয়েছিলে?' তিনি বললেন— 'লক্ষ্ণৌ'। তাঁর পিতা ধীর গলায় তাঁকে বললেন— 'আগ্রায় গিয়ে তাজমহল দেখতে পারতে। গ্রামার বইতে পড়েছো না— এমিনেন্ট, এমিনেন্ট প্রিন্সিপাল, নটোরিয়াস, ফেমাস'। তারপর বললেন— 'আইদার নটোরিয়াস অর ফেমাস, মাঝামাঝি কিছু হও আমি তা চাই না। ডোন্ট বি অ্যা মিডিওকার'। পিতার কাছে পাওয়া এটি ছিল বশীরের সারাজীবনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা।

 

দুই.

গোড়ার দিকে মুর্তজা বশীরের শিল্পী হবার আকাঙ্ক্ষা ছিলো না। কিন্তু ঘটনাচক্রে যা হবার তা-ই হলো। পার্টির নির্দেশে ১৯৪৯ সালে তিনি ঢাকার গভর্নমেন্ট ইন্সটিটিউট অব আর্টসে ভর্তি হন। কারণ তিনি কম্যুনিস্ট পার্টি সমর্থিত ছাত্র ফেডারেশনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। পার্টি থেকে তাঁকে নির্দেশ দেয়া হলো— পার্টির ভাবধারা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বশীর এটি গভীরভাবে আমলে নিলেন। তিনি জানতেন, শিল্পীদের মধ্যে তখন ততটা সমাজ সচেতনতা নেই। বেশিরভাগ শিল্পী বিশ্বাস করতেন, 'আর্ট ফর আর্ট সেক'। বশীর এই মতবাদে একেবারেই বিশ্বাসী ছিলেন না। বস্তুত সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে তিনি আঁকতেন। সভা, সমাবেশ, মিটিং, মিছিলসহ প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে তিনি অংশগ্রহণ করেছেন। ১৯৫০ সালের জুন মাস। বাম রাজনীতি করার কারণে বশীরকে গ্রেফতার করা হয়। পাঁচ মাস জেলে ছিলেন তিনি। তখনও ছবি আঁকার প্রতি তাঁর মমত্ববোধ তৈরি হয়নি। বরং রাত জেগে পোস্টার আঁকা ও স্ট্রিট কর্ণার মিটিংয়ের প্রতি তাঁর আকর্ষণ ছিল অধিক।

পিতা ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর সঙ্গে, ১৯৬৮

একদিনের ঘটনা। তিনি তখন সেকেন্ড ইয়ারের ক্লাসে সামনের সারিতে বসে ছবি আঁকার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তখন ক্লাস শিক্ষক আনোয়ারুল হক পিছন থেকে তাঁর ঘাড়ে টোকা দিয়ে বলেন— 'ওঠো'। বশীর প্রশ্ন করলেন— 'কেনো স্যার'? শিক্ষক বললেন— 'এখানে রাজ্জাক বসবে'। উল্লেখ্য, রাজ্জাক তাঁর সহপাঠি ও তিনি প্রতিবার ফার্স্ট হন। মন খারাপ করে জায়গা ছেড়ে দিয়ে বারান্দায় চলে আসেন বশীর। তাঁর অশ্রু গড়িয়ে পড়ে। তারপর শিক্ষক সফিউদ্দিন আহমেদ অশ্রুসিক্ত বশীরকে দেখে তাঁর মন খারাপের কারণ জিজ্ঞেস করেন। কারণ জানার পর সফিউদ্দিন স্যার তাঁকে বললেন— 'বাসায় এসো'। তারপর স্বামীবাগে সফিউদ্দিন আহমেদের বাসায় গিয়ে তিনি স্যারের অসংখ্য তেলরঙে আঁকা ছবি দেখলেন। তিনি মূলত উডকাট ও এচিং করতেন। শিক্ষক সফিউদ্দিন তখন তাঁকে তেলরঙে কাজ করার পরামর্শ দিলেন। তিনি বশীরকে শেখালেন কিভাবে তেলরঙে ছবি আঁকার জন্য ক্যানভাসের গ্রাউন্ড প্রস্তুত করতে হয়। এরপর  শিক্ষক আমিনুল ইসলামই তাঁকে তেলরঙে কাজ করার বিশদ পদ্ধতি শিখিয়েছেন।

শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের সঙ্গে। করাচি, ১৯৬২

জেল থেকে অক্টোবর মাসে ছাড়া পাওয়ার পরের একদিনের ঘটনা। বশীর ক্লাসে। জলরং বিষয়ের ক্লাস। তিনি কিছুতেই জলরং দিয়ে ছবি আঁকতে পারছিলেন না। তিনি শিক্ষক জয়নুল আবেদিন স্যারকে বললেন— 'আমাকে দিয়ে ছবি আঁকা হবে না'। আবেদিন তখন আমিনুল ইসলামকে ডেকে জানিয়ে দিলেন— আউটডোরে যাওয়ার সময় বশীরকে সঙ্গে নিয়ে যেতে। এরপর থেকে শিক্ষক আমিনুল ইসলামের সাথে তিনি বিভিন্ন জায়গায় যেতেন। আমিনুল চিত্রাঙ্কনের বিবিধ করণকৌশলসহ তেলরঙে ছবি আঁকার পদ্ধতি বশীরকে পুঙ্খানুপুঙ্খ শেখালেন। ক্রমে ক্রমে ছবি আঁকার প্রতি বশীরের মনোযোগ বাড়তে থাকে। আদতে এভাবেই তিনি শিল্পের প্রেমে পড়েন।

১৯৫২ সাল। মহান ভাষা আন্দোলনের বছর। এই সময় কলকাতা থেকে প্রকাশিত সুভাষ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত 'পরিচয়' পত্রিকায় ভাষা আন্দোলনের ওপর মুর্তজা বশীরের 'পারবে না' শীর্ষক কবিতা ছাপা হয়। এছাড়াও কলকাতা থেকে প্রকাশিত একুশের স্মরণিকায় 'ওরা প্রাণ দিল' কবিতাটি পুনর্মুদ্রিত হয়। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি। ভাষা আন্দোলনে বশীর সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। আবুল বরকতকে রক্তাক্ত অবস্থায় অন্যদের সঙ্গে তিনি হাসপাতালে নিয়ে যান। ২২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের ছাদে কালো পতাকা উত্তোলনকারীদের মধ্যে বশীর ছিলেন অন্যতম। ১৯৫২ সাল। একুশের অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি 'রক্তাক্ত ২১' শীর্ষক একটি লিনোকাট চিত্র আঁকেন। যা ১৯৫৩ সালে হাসান হাফিজুর রহমান সম্পাদিত 'একুশে ফেব্রুয়ারি' শীর্ষক সংকলনে প্রথম প্রকাশিত হয়। উল্লেখ্য, 'রক্তাক্ত ২১' চিত্রটি ভাষা আন্দোলনের ওপর আঁকা প্রথম চিত্রকর্ম হিসাবে বিবেচিত হয়েছে। 

দুই প্রেমিকার জন্য সংগীত,১৯৫৯

১৯৫৪ সাল। গভর্নমেন্ট ইনস্টিটিউট অব আর্টস থেকে বশীর চিত্রকলা ও ড্রয়িং নিয়ে প্রথম বিভাগে পাশ করার পর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশুতোষ মিউজিয়ামে একটি আর্ট অ্যাপ্রিশিয়েশন কোর্স সম্পন্ন করেন।

 

তিন.

১৯৫৬ সাল। মুর্তজা বশীরের প্রথম ইউরোপ যাওয়ার বছর। তিনি ফ্লোরেন্সের আকাদেমিয়া দ্য বেল্লি আর্ট থেকে ১৯৫৬- ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত চিত্রকলা বিষয়ে শিক্ষালাভ করেন। এছাড়া ১৯৫৭- ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত ফ্রেসকো নিয়ে অধ্যয়ন করেন। এখানকার শিক্ষাকাল তাঁর শিল্পীজীবনে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। ১৯৫৮ সালে ফ্লোরেন্সের গ্যালারি লা পারমানেন্তে মুর্তজা বশীরের প্রথম চিত্রপ্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। এরপর বাংলাদেশে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় তাঁর একটি স্মরণীয় ঘটনা আছে। ১৯৭১ সালের ১৬ মার্চ। শহীদ মিনার থেকে বাহাদুর শাহ পার্ক পর্যন্ত বাংলাদেশের চারু ও কারুশিল্পী পরিষদের উদ্যোগে একটি 'স্বা-ধী-ন-তা' মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। সেই মিছিলের নেতৃত্বদানকারীদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন মুর্তজা বশীর। ১৯৭১-১৯৭৩ সাল পর্যন্ত তিনি প্যারিসের ইকোল ন্যাশনাল সুপিরিয়র দ্য বোজার্ট থেকে মোজাইক বিষয়ে শিক্ষালাভ করেন। এছাড়া একই সময়ে ১৯৭২-১৯৭৩ সাল পর্যন্ত তিনি প্যারিসের আকাদেমি গোয়েৎস থেকে এচিং ও আকুয়াটিন্ট বিষয়ে অধ্যয়ন করেন। 

মুর্তজা বশীর শিল্পীজীবনে প্রথম অনুপ্রাণিত হয়েছেন ভিনসেন্ট ভ্যান গখের জীবন ও শিল্প অনুধাবন করে। এরপর তিনি প্রাক-রেনেসাঁ ও বাইজেন্টাইন শিল্পীদের কাজ দেখেও প্রভাবান্বিত হয়েছেন। এক সময় তিনি ইম্প্রেশনিজম দ্বারাও উদ্বুদ্ধ হন। তিনি নিত্য অনুসন্ধানী ছিলেন। কিছু একটি খুঁজেছেন তিনি প্রতিনিয়ত। আমেদের মদিগ্লিয়ানির কাজ দেখেও তিনি অভিভূত হয়েছেন। তবে সব শেষে তিনি ফিরেছেন পাবলো পিকাসোর কাছে। আদতে পিকাসোই ছিল বশীরের গভীর বিস্ময়, ঈর্ষা, প্রেম সব। মুর্তজা বশীর শুরু থেকেই নিজেকে বারবার ভেঙেছেন। এজন্য তিনি কখনোই একটি নির্দিষ্ট স্টাইল বা ঘরানার মধ্যে নিজেকে আটকে ফেলেন নি। বশীরের আঁকা উল্লেখযোগ্য সিরিজের মধ্যে রয়েছে- 'দেয়াল', 'শহীদ শিরোনাম', 'কলেমা তৈয়বা', 'পাখা', ও 'স্বর্গ'। তিনি 'বিমূর্ত বাস্তবতা' নামে একটি শিল্পধারার প্রবর্তক। বশীরের ডিসকোর্সে আগ্রহ। ফলত, তিনি ছবিতে বিমূর্তায়নের চেয়ে বিষয় ও অনুষঙ্গ নিয়ে গল্প নির্মাণ করেছেন অধিক। বলা ভালো, এটিই ছিল তাঁর আরাধনা। তাঁর ইট-পাথরের দেয়াল, নুড়িপাথর, পাখা সবকিছুই আদতে গল্প। সেইসব ছবিতে রং, গড়ন বা স্পেসের অধিক গল্প। এজন্য বশীরের ছবি স্মরণযোগ্য। মনে দাগ কেটে যায়। বোধ করি, এটিই তাঁর চিত্রকলার অন্তর্গূঢ় শক্তি।

স্বপ্নচারিতার গাথা, ১৯৫৯

তিনি সারাজীবন বলতে চেয়েছেন অনেক কিছু। চিন্তা, দর্শন, জীবন, মৃত্যু, দুঃখ— সবকিছু চিত্রে দেখানো সম্ভব নয় বলেই লিখেছেনও প্রচুর। তাঁর প্রকাশিত গল্পগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে- 'কাচের পাখির গান' ও 'গল্প সমগ্র'। কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে— 'ত্রসরেণু', 'তোমাকেই শুধু', 'এসো ফিরে অনুসূয়া', ও 'সাদায় এলিজি'। উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে— 'আল্ট্রামেরিন', 'মিতার সঙ্গে চার সন্ধ্যে', ও 'অমিত্রাক্ষর'। নির্বাচিত রচনার মধ্যে রয়েছে— 'মূর্ত ও বিমূর্ত', ও 'আমার জীবন ও অন্যান্য'। গবেষণাগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে— 'মুদ্রা ও শিলালিপির আলোকে বাংলার হাবশী সুলতান ও তৎকালীন সমাজ'। এছাড়া ভারতের বেনারস বিশ্ববিদ্যালয়ের 'জার্নাল অব দ্য নিউম্যাসটেকি সোসাইটি অব ইন্ডিয়া'য় প্রাক মুঘল যুগের মুদ্রার ওপর তাঁর বেশ কয়েকটি গবেষণাধর্মী প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়।

 

চার.

মুর্তজা বশীরের সঙ্গে আমার সখ্যতা পনেরো বছরের অধিক কাল। ২০০৫ সালে রাজেন্দ্রপুরের ব্রাক সিডিএম- এর বিশাল ক্যাম্পাসের বাংলোতে আমরা টানা দশদিন ছিলাম। সেখানে একটি আবাসিক আর্ট ওয়ার্কশপের এন্তেজাম হয়। বেনসন অ্যান্ড হেজেসের পৃষ্ঠপোষকতায় ওই ওয়ার্কশপ ও প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওয়ার্কশপের শিরোনাম ছিল 'মেন্টর অ্যান্ড প্রোটেজি'। অর্থাৎ ওস্তাদ ও শাগরেদগণ। যথার্থই নাম।বশীর স্যার ছিলেন আমাদের ওস্তাদ ও ওয়ার্কশপ-তত্ত্বাবধায়ক। তিনি সারাদেশ থেকে এগারোজন তরুণ শিল্পী নির্বাচন করেন। ওই এগারোজনের মধ্যে আমিও একজন। তো, সেই থেকে স্যারের সঙ্গে আমার সখ্যতা, বন্ধুত্ব। তিনি আমার সত্যিকারের ওস্তাদজি ছিলেন। তাঁর সঙ্গে আলাপচারিতা, আড্ডা ছিল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। অনেক কিছুই জেনেছি, শিখেছি। এগুলো অল্পকথায় লেখাও সম্ভব নয়। 

আর্ট কলেজে, প্রথম বর্ষে, ১৯৪৯

২০১৯ সাল। নভেম্বর মাস। স্যার হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। অ্যাপোলো হাসপাতালে স্যারকে আমি দেখতে যাই। একদিন স্যারকে কিছুটা সুস্থ দেখি। স্যার দারুণ খোশমেজাজে ছিলেন। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে স্যার আমার সাথে অনেকক্ষণ কথা বললেন। যুঁই আপু (স্যারের জ্যেষ্ঠ কন্যা মুনিরা বশীর) অভয় দিলেন। তো, আমি আলাপচারিতা রেকর্ডারে ধারণ করি। বলতে বলতে স্যার তাঁর শেষ স্বপ্নের কথা আমাকে জানালেন। বশীরের নিয়ত ছিল ফেব্রুয়ারি ২০২০ সালে তিনি ওমরাহ হজ্জ পালন করতে পবিত্র মক্কা শরীফ যাবেন। আল্লাহ্'র কাবাঘর তাওয়াফ করে তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠবেন। মদীনায় মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)- এর রওজা মুবারক জিয়ারত করে নিজেকে ধন্য করবেন। এই ছিল তাঁর শেষ নিয়্যত বা স্বপ্ন।

যদি সুস্থ থাকেন এবং ছবি আঁকতে পারেন, তবে ২০২০ সালের মার্চে একটা চিত্রপ্রদর্শনী করার ইচ্ছা ছিল তাঁর। বস্তুত এ ছিল তাঁর শেষ ইচ্ছা। আহা, নিয়তির কাছে আমরা সবাই বন্দী। 

শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন ও মুর্তজা বশীর, ১৯৭৬

অনেক বছর ধরে স্যার অত্যন্ত ধর্মানুরাগী হয়ে ওঠেন। আধ্যাত্মবাদে ঝুঁকেছিলেন। এবাদত-বন্দেগীতে বিশেষভাবে নিয়োজিত ছিলেন। একদিন কথায় কথায় আমাকে বললেন, 'ধর্ম কী? ধর্মকে বুঝতে গেলে খুব কাছে যেতে হয়। দূরে থাকলে ধর্ম বোঝা যায় না'। কী অসামান্য কথা! এই করোনাকালে স্যারের সাথে আমার কথা হতো ফোনে বা মেসেঞ্জারে। কখনো ভিডিও-কলে। তাঁর উদ্দীপনা আর হাসিতে আমি মুগ্ধ হয়েছি সবসময়। 

১৪ আগস্ট ২০২০ সাল। স্যার গুরুতর অসুস্থ। অ্যাপোলো হাসপাতালের আইসিইউ- তে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি কোভিড-১৯- এ আক্রান্ত হয়েছেন। প্রচণ্ড দুশ্চিন্তায় সারারাত জেগে থাকি। স্যারের জন্য ও-পজিটিভ রক্তের প্লাজমা জোগাড় করি। আমার আলোকচিত্রশিল্পী বন্ধু সাহাদাত পারভেজ ১৫ আগস্ট সকালে কথামতো স্যারকে প্লাজমা দেওয়ার জন্য মোটর বাইকে চড়ে হাসপাতালে উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। মাঝপথে তাঁকে ফোন করে থামাই। কারণ ততক্ষণে স্যার চিরদিনের জন্য চলে গেছেন...

মুর্তজা বশীর মৃত্যুর পরেও বাঁচতে চেয়েছেন। তাঁর কাজ, শিল্প ও সাহিত্য নিশ্চয়ই বশীরকে অবিস্মরণীয় করে রাখবে। 

লেখক: ড. এস এম সাইফুল ইসলাম, চিত্রশিল্পী ও গবেষক।

 

Related Topics

টপ নিউজ

মুর্তজা বশীর / জয়নুল আবেদীন / ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • উত্তেজনা বাড়াতে চায় না ভারত, গোপন বার্তা, পাকিস্তান-ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের যোগাযোগ
  • চট্টগ্রামে ৪০০ একর জমিতে মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল গড়ে তোলা হবে: বিডা চেয়ারম্যান
  • ভারতের ২৫ ড্রোন ভূপাতিত, এক বেসামরিক নাগরিক নিহত, ৪ সেনা কর্মকর্তা আহত: পাকিস্তান সেনাবাহিনী
  • আবদুল হামিদের দেশত্যাগ: দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে এক পুলিশ কর্মকর্তা প্রত্যাহার, ২ জন সাময়িক বরখাস্ত
  • নগর পরিবহন ও গোলাপি বাস: হোঁচট খাচ্ছে ঢাকার গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আনার উদ্যোগ
  • নয়াদিল্লিতে সৌদি ও ইরানি মন্ত্রী; পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে পূর্বে যেসব তৃতীয় পক্ষ মধ্যস্থতা করেছে

Related News

  • মুর্তজা বশীরের মূর্ত-বিমূর্ত নারীরা
  • মুর্তজা বশীরের শেষ আত্মপ্রতিকৃতি ও একটি সাক্ষাৎকার
  • ‘বশীর আর আমিনার অব্যক্ত ভালোবাসা’
  • মুর্তজা বশীরকে লেখা সাঈদ আহমদের অপ্রকাশিত চিঠি
  • বাবার সাথে কথোপকথন

Most Read

1
আন্তর্জাতিক

উত্তেজনা বাড়াতে চায় না ভারত, গোপন বার্তা, পাকিস্তান-ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের যোগাযোগ

2
বাংলাদেশ

চট্টগ্রামে ৪০০ একর জমিতে মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল গড়ে তোলা হবে: বিডা চেয়ারম্যান

3
আন্তর্জাতিক

ভারতের ২৫ ড্রোন ভূপাতিত, এক বেসামরিক নাগরিক নিহত, ৪ সেনা কর্মকর্তা আহত: পাকিস্তান সেনাবাহিনী

4
বাংলাদেশ

আবদুল হামিদের দেশত্যাগ: দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে এক পুলিশ কর্মকর্তা প্রত্যাহার, ২ জন সাময়িক বরখাস্ত

5
বাংলাদেশ

নগর পরিবহন ও গোলাপি বাস: হোঁচট খাচ্ছে ঢাকার গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আনার উদ্যোগ

6
আন্তর্জাতিক

নয়াদিল্লিতে সৌদি ও ইরানি মন্ত্রী; পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে পূর্বে যেসব তৃতীয় পক্ষ মধ্যস্থতা করেছে

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net