Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Sunday
June 22, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
SUNDAY, JUNE 22, 2025
ভারতের মধ্যযুগীয় ‘বারুদ’ সাম্রাজ্যের উত্থান-পতন

ইজেল

রোহিত পটনায়ক। অনুবাদ: মাহমুদ আলম সৈকত
01 July, 2020, 09:45 pm
Last modified: 05 July, 2020, 03:41 am

Related News

  • পাঠ্যবই বদলেই মুছে ফেলা যাবে না ভারতের জটিল ইতিহাস—মুখোমুখি হওয়াটাই প্রয়োজন
  • ৩০০ বছর ধরে সমাধিস্থ, তবুও এ সম্রাট কেন আজ লাখো মানুষের ক্ষোভের কারণ?
  • মোগল-মারাঠা যুদ্ধে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কর্মকর্তা যেভাবে রাজনৈতিক সুবিধা আদায় করে নেয়!
  • ভারতীয় রাজাদের যুদ্ধ-বিবাদকে পুঁজি করে বিপুল সম্পদের পাহাড় গড়েন যে তরুণ আমেরিকান 
  • ভারতবর্ষের রহস্যময় চাপাতি আন্দোলন: ব্রিটিশদের মহাশঙ্কায় ফেলে দেয়!

ভারতের মধ্যযুগীয় ‘বারুদ’ সাম্রাজ্যের উত্থান-পতন

রোহিত পটনায়ক। অনুবাদ: মাহমুদ আলম সৈকত
01 July, 2020, 09:45 pm
Last modified: 05 July, 2020, 03:41 am
দিল্লির কামান যুদ্ধ, ১৮৫৭

আধুনিক ভারতে, ভারতীয় ইতিহাস পাঠ করতে গিয়ে যখন 'বারুদ' সম্পর্কিত ইতিহাসের অনুপস্থিতি লক্ষ্য করি তখন  ভারতে কোন তরিকায় ইতিহাস পড়ানো হয় তার করুণ অবস্থাটি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এটি একটি রাষ্ট্রের জন্য দীর্ঘ সময়ের উপেক্ষিত এবং অনুতাপের বিষয় বটে। পাশাপাশি জনগণের মধ্যে ঐতিহাসিক সচেতনতা সৃষ্টির বিবেচনায় এহেন ব্যাপার আরও বেশ কিছুদিন প্রলম্বিত হওয়ারই সম্ভাবনা রয়েছে।

এ-বিষয়ক জনপ্রিয় ধারণাটি হচ্ছে, মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা বাবরই ভারতে বারুদ সংস্কৃতির প্রচলন করেছিলেন। যদিও বারুদ এবং অস্ত্রাগারের মতন বিষয়গুলো বহু আগে থেকেই ভারতীয়দের কাছে পরিচিত ছিল। ত্রয়োদশ শতাব্দীর প্রথমদিকে আমির খুসরু দিল্লি সালতানাতে হাউই বা রকেটের ব্যবহার সম্পর্কে বর্ণনা করেছিলেন।

অনুরূপ অস্ত্রশস্ত্রের কথা রাজপুতদের মধ্যেও প্রচলিত ছিল বলে জানা যায়। যেমন রঁথাম্বোরে দূর্গে জব্দকৃত অস্ত্রের তালিকায় এমন উল্লেখ সমসাময়িক মুসলিম ভাষ্যকাররা বিশদভাবে বর্ণনা করেছিলেন। চোদ্দশ শতকের শেষের দিকে বাহমানি সালতানাত এবং বিজয়নগর সাম্রাজ্য তাদের নিজ নিজ সামরিক বাহিনীতে রকেট এবং হাতে বহনযোগ্য কামান মজুদের উল্লেখ আছে। 

পনের শতকে, সম্রাট কপিলেন্দ্রদেব রাউত্রের অধীনে কটকের গজপতি সাম্রাজ্য তাদের নিজস্ব উদ্ভাবন নতুন বিস্ফোরক যৌগ এবং টাকু বা পলিতা তৈরি করতে সক্ষম হয়েছিল, যা পরবর্তী সময়ে পূর্ব এবং মধ্য ভারত জুড়ে সম্রাট কপিলেন্দ্রদেবের সাম্রাজ্য বাড়াতে সহায্য করে। 'কৌতুক চিন্তামণি'-র মতো গ্রন্থগুলিতে এরকম অগ্রগতির কথা  স্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়েছে। যা আরও জানায় যে গজপতি বাহিনী দ্বারা ব্যবহৃত বিভিন্ন রকমের সময়নিয়ন্ত্রিত ফিউজ বা পলিতা, বিস্ফোরক দ্রব্যের আধান এবং এমনকি একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ের গ্রেনেডেও রয়েছে। কোঙ্কন এবং মালাবারের হিন্দু নৌ শক্তি যখন সুলতান মাহমুদের নৌবাহিনীর বিরুদ্ধে মুখোমুখি হয়েছিল, তখন আমরা নৌযানের উপরে তোপের ব্যবহারের প্রথম উল্লেখ পাই।

ষোল শতকে মালিক-ই-ময়দানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় কামান।

উপমহাদেশের বেশ কয়েকটি অঞ্চল এমন নির্দিষ্ট আবিষ্কারগুলি সম্পর্কে অজ্ঞাত থাকলেও এটি স্পষ্ট যে এই অঞ্চলের  প্রধান প্রধান শক্তিসমূহ বারুদের সম্ভাবনা এবং ব্যবহার সম্পর্কে সম্যক অবগত ছিল।

তাহলে, বাবরই ভারতে বারুদের প্রচলণ ঘটিয়েছিলেন এমন দাবি প্রায়শই কেন করা হয়? এর উত্তর খুব সহজ: নির্ভেজাল অজ্ঞানতা। 

তবে এটিও যুক্তিযুক্ত হতে পারে যে, অজ্ঞনতার তলায় আরও সূক্ষ্ম কোনও সত্য থাকতে পারে। নিঃসন্দেহে সম্রাট বাবরই প্রথম ভারতের যুদ্ধক্ষেত্রে সম্মিলিত বারুদ ব্যবহারের সংস্কৃতি প্রবর্তন করেছিলেন। পূর্বেকার ভারতীয় রাজ্য যেমন গজপতি সাম্রাজ্য এবং গুজরাত সুলতানাতেরও বারুদ বিষয়ে কাছাকাছি ধারণা ছিল বলে মনে করা হয়, তবে পারস্যের সাফাভি রাজবংশের বারুদ ব্যবহারের ঐতিহ্যের সঙ্গে বাবর নিজের বুদ্ধিমত্তা মিশিয়ে যে প্রকরণটি চালু করেন তা তৎক্ষণাত ভারতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মধ্যযুগীয় সামরিক উদ্ভাবন হিসেবে জায়গা করে নেয়।  পদাতিক বাহিনীর সাথে বহনযোগ্য হালকা কামান ব্যবহার করে বাবর প্রায় দুশো বছর ধরে সুইডিশ ধাঁচে গড়া সামরিক শক্তিকে ঠেকিয়ে রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন। 

রসদ সরবরাহের দক্ষতা এবং যুদ্ধক্ষেত্রের নমনীয় অবস্থানের সাথে সম্পর্কিত বুৎপত্তি, বাবরের পক্ষে ক্ষুদ্র দিল্লি সালতানাতকে উৎখাত করার পক্ষে যথেষ্টেই ছিল যখন সেই সালতানাত আধুনিক হরিয়ানা রাজ্যের আয়তন থেকে কিছুমাত্র বড়। তবে এখানে অবশ্যই আমাদের খেয়াল রাখতে হবে যে লোধি বা মহারানা বা উত্তর ভারতের সামন্ত শাসকদের বিরুদ্ধে বাবরের বিজয়সমূহ মূলত সামরিক দক্ষতার চেয়ে কূটনীতি এবং ধূর্ততার কারণেই হাসিল হয়েছিল। উদাহরণস্বরূপ, মহারানার  বিরুদ্ধে, মহারানা বাহিনীর ছয়ভাগের একভাগেরও বেশি সৈন্যের ধর্মান্তর ঘটিয়ে এবং বিশ্বাসঘাতকতাপূর্ণ কূটচালের কারণে বিজয়ী হয়েছিল।

মজার বিষয় হল, মোগল সাম্রাজ্যের বারুদ বিষয়ক মতবাদের সাথে বাবরের প্রায় কোনও সম্পর্কই ছিল না।

পরবর্তী অর্ধশত বছরে বাবরের কথা বিস্মৃত প্রায় হয়ে গিয়েছিল। যার বেশিরভাগই সুলতান ইসলাম শাহ যিনি শের শাহের উত্তরসূরি ছিলেন, তার দ্বারা রচিত এবং প্রতিস্থাপিত হয়েছিল। ভারি ভারি কামান এবং অগ্নিসংযোগের মতন বিভৎস পায়তারার কাছে হেরে গিয়েছিল হালকা বহনযোগ্য কামান। 

আকবরের অধীনে, আমরা বন্দুকের বিকাশে একটি উল্লেখযোগ্য প্রসারণ লক্ষ্য করি। আবুল ফজল এমন একটি অস্ত্রের বিকাশের বর্ণনা দিয়েছেন যা হুইললক গাদাবন্দুকের অনুরূপ। এটা এমন এক গাদাবন্দুক যেটা দিয়ে গুলি ছুড়তে বারুদ জ্বালানোর জন্য অগ্নি সংযোগের প্রয়োজন পড়ত না। আর ইউরোপীয়রা এই আবিষ্কারের কমপক্ষে পঞ্চাশ বছর পর এরকম অস্ত্র তৈরিতে সক্ষম হয়। এমনকি সহজে পরিবহনের জন্য ভাঁজ হতে সক্ষম কামান এবং দেহের সঙ্গে বহনযোগ্য বন্দুকের কথা 'আইন-ই-তোপ' গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে। আর ততদিনে বিভিন্ন সামন্ত বাহিনীর মধ্যেও হালকা এবং ছোট ছোট কামানের ব্যবহার শুরু হয়ে গিয়েছিল।

হাতি ঠেলে নিয়ে যাচ্ছে ভারি কামান।

 কিন্তু এই আবিষ্কারের প্রভাব সুদূরপ্রসারী এবং উল্লেখযোগ্য ছিল। কেননা আকবরের অধীনে এর মাত্র ত্রিশ বছরের মধ্যে মুঘল সাম্রাজ্য একের পর এক রাজ্য জয় করে অতিকায় হয়ে ওঠে, হস্তগত হয় সেইসব অঞ্চল যা বহু শতাব্দী ধরে পরাক্রমশালী রাজাধিরাজদের করতলগত ছিল। ওড়িশা যা পাঁচশ বছরেরও বেশি সময় ধরে ইসলামি শক্তিগুলোর আক্রমণকে ঠেকিয়ে আসছিল, যোলশ শতাব্দীর শেষদিকে মুঘলরা সেই ওড়িশাকেও দখলে নিয়ে নেয়।  মারাঠা এবং দক্ষিন ভারতীয় রাজ্যগুলি, যা সফলভাবে সুলতানি আক্রমণকে রুখে দিয়েছিল, তারাও ক্রমে পৃথক হয়ে পড়েছিল। এমনকি মধ্য ভারতের অন্তর্ভুক্ত রাজ্যগুলিরও একই দশা প্রাপ্তি হলো।  

ঠিক এই বিষয়টিতেই, আবু'ল ফজল দাবী করতেন যে বিশ্বের সকল সাম্রাজ্যের মধ্যে অটোমান সাম্রাজ্য ব্যতীত আর কোনও শক্তিই বারুদ ও বন্দুক যুদ্ধের ক্ষেত্রে মোগল সাম্রাজ্যের সাথে টেক্কা দেওয়ার ক্ষমতা রাখে না।
আকবরের বারুদ বিষয়ক বুৎপত্তি তাঁর প্রপিতামহের চেয়েও উল্লেখযোগ্যভাবে পৃথক ছিল। তাঁর মুঘল সেনাবাহিনী শত্রু অবস্থানের উপর ভারী বোমাবর্ষনেই অধিক নির্ভরশীল ছিল, পাশাপাশি প্রতিপক্ষের প্রতিরক্ষার মূল জায়গাগুলো ভেঙে দিতে পারঙ্গম ছিল। এটি সম্ভব হয়েছিল মূলত একটি কারণেই, মোঘলরা যুদ্ধের ময়দানে বহন করতে পারে এমন ছোট-বড় নানা আকারের অসংখ্য কামান ব্যবহার করত। সতেরশ শতকের শেষভাগে মারাঠা বাহিনীর অশ্বারোহী সৈন্যদলের উত্থানের আগ পর্যন্ত এই কৌশলগুলি কার্যকর ছিল।

বন্দুকের ব্যবহার, যেমনটি পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে, ক্ষমতায়নের কেন্দ্রিককরনের স্বার্থে কর্তৃপক্ষের কাছে তাৎপর্যপূর্ণ ছিল। যাই হোক, এই অস্ত্রটি 'শক্তি'র দুর্দান্ত সমকক্ষ হিসাবেও কাজ করে। সামরিক কৌশলে আকবরের দুর্দান্ত কিছু উদ্ভাবন ছিল যেমন সামন্তবাদকে মানসম্মত করা, ব্যয় সংকোচন এবং ভিন্নমতবিলম্বী নিয়ন্ত্রণ করার জন্য শক্তিশালী যোদ্ধাদের সামরিক অধিকার এবং মোটা বেতন বরাদ্দ করা ইত্যাদি। মোগল সাম্রাজ্যের সম্প্রসারণ জনগণের মধ্যে অশান্তি ও ক্রোধকে চাগাড় করে তোলে, যা এ-জাতীয় পদক্ষেপের দ্বারা মীমাংসা করা হয়।

এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ও উল্লেখ্য যে, যেহেতু মুঘলদের পক্ষে কখনওই দক্ষ কোনও প্রশাসন ছিল না যা সমকালীন ইউরোপীয় শক্তি বা এমনকি প্রায় এক হাজার বছর পূর্বের আর্য রাজ্যগুলির দক্ষতাকে একিভূত কিংবা সমান্তরালে আনতে পারে।   

স্থিতিশীলতা এবং পরিচালন ব্যয় হ্রাস করার লক্ষ্যে, আকবর তার সামরিক কর্তৃত্বকে সীমাবদ্ধ তথা ক্ষমতা খর্ব করার মতো ভুলও করেছিলেন। ভারতীয় পদ্ধতির ঐতিহ্যিক হাউই বা রকেটের ব্যবহার অব্যাহত থাকলেও এ-র উন্নয়ন প্রায় স্থবির ছিল। বন্দুকধারী সৈন্য প্রশিক্ষণ এবং নতুন নিয়োগের মতন জরুরি বিষয়গুলো প্রায় হিমায়িত হয়ে  পড়েছিল। পনেরশ ত্রিশ থেকে  পনেরশ চল্লিশ, এই দশবছরে আকবরের সেনাদলে বন্দুকধারী সৈন্যের সংখ্যা পনেরশ থেকে ত্রিশ হাজারে উন্নিত হয়। আর পনেরশ নব্বই-এ সেটি বেড়ে মাত্র চল্লিশ হাজার হয়! ফলস্বরূপ, মোগল শক্তি জনসাধারণের নানা বিষয়বস্তুর উপর বিশেষভাবে হিন্দু জনগোষ্ঠীর উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে।
শাহজাহানের সময়ে মুঘল সাম্রাজ্য 'হিন্দুদের উপর অত্যাচার না করা' এবং 'ব্যয় সীমাবদ্ধ না করা'-র মতো ছোটখাটো বিষয়ে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়।

আলটপকা করারোপ, মন্দির-বিগ্রহ ধ্বংস এবং রাজকীয় কোষাগারের অঢেল অপচয় হয়ে পড়ে শাহজাহানের আমলের শাসনদণ্ড। বিচার ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। স্থানীয় সামন্তবাদী শক্তির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত উত্তর ভারত তখন প্রায় উপেক্ষিত। জাঠ বা শিখ অধ্যুষিত অঞ্চল বা লখনউয়ের রাজত্বের মতো জায়গাগুলি তখন কিছুটা সুরক্ষিত থাকলেও, রোহিল্যা আফগান বা বিদ্রোহী নবাবদের সঙ্গে যুদ্ধের ফলে বিশাল অঞ্চল ধ্বংস-বিধ্বস্ত হয়েছিল।

যদিও হিন্দু ভূ-স্বামী এবং সরকারী কর্মচারীরা বেশিরভাগই অক্ষতই রয়ে যায়। হিন্দু কৃষক বিদ্রোহ তখন একরকম নৈমিত্তিকই হয়ে উঠেছিল। যদিও পূর্বের বিদ্রোহগুলি মুঘলদের দ্বারা সহজেই দমিয়ে দেওয়া হয়েছিল - যেমন ইউসুফ মিরাকের আটশরও বেশি পদাতিক এবং দুশো অশ্বারোহীকে পরাস্ত করেছিল কেবল আশিজন মুঘল অশ্বারোহী সৈন্য। পক্ষান্তরে সমকালীন বিদ্রোহগুলির ধরণ ভিন্ন ছিল। বারুদের ব্যবহার ভারতের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছিল। আবুল ফজলের মতে, একটি সস্তা দামের ঘোড়ার চাইতেও চারগুণ কম খরচ পড়ত একজন বরকন্দাজ পরিচালনায়। পাশাপাশি একজন তীরন্দাজের চাইতেও, একজন বরকন্দাজের দক্ষ সৈন্য হয়ে ওঠার জন্য তুলনামূলক সামান্য প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হতো।

মোগল বরকন্দাজ

ফলস্বরূপ, কৃষক-জনতার মধ্যে থেকে এমন শত শত, এমনকি হাজার হাজার সৈন্য জোগাড় করাটা অবিশ্বাস্য কিছু ছিল না। যদিও আওরঙ্গজেব তার সামরিক বাহিনীকে চট্ জলদি সম্প্রসারিত করেছিল এবং গোটা গোটা শহর নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছিল, বিদ্রোহ এবং বারংবার যুদ্ধ তার সাম্রাজ্যকে দ্রুতসময়ে নির্লজ্জতার দিকে ঠেলে দেয়।

'আখবারত-ই-দরবার-ই-মুআল্লা' গ্রন্থে বর্ণিত আছে, হরিয়ানার এক প্রত্যন্ত গ্রাম থেকেই সেসময় প্রায়  দুশোজন বরকন্দাজ সংগ্রহ করা হয়। কটকের ফৌজদার, মীর আবুল হাসান, স্থানীয় উড়িয়া সৈন্যদের উপর এতো বেশি হত্যাযজ্ঞ চালান যে এক পর্য়ায়ে তিনি বন্দুক রাখা বা বহনকে অবৈধ বলে ঘোষণা করেছিলেন। তার প্রতি বশ্যতা স্বীকার না করলে, ওড়িয়া যোদ্ধাদের হত্যা ও তাদের স্ত্রী ও কন্যাকে পতিতালয়ে বিক্রি করারও হুমকি দিয়েছিলেন।  আঠারো শতকের গোড়ার দিকে, জাঠরা আওরঙ্গজেবের হিন্দু বিরোধী নীতিমালার অধীনে দীর্ঘকালীন দুর্ভোগ সয়ে, নিজেরা এতোটাই সংঘবদ্ধ হয়ে উঠেছিল যে তারা কার্যকরভাবে স্বাধীন হতে পেরেছিল।

বন্দুকের সাথে কৃষকের এই যে পরিচিতি তা পর্যটক এবং দিনলিপিকার মানুচির নিম্নোক্ত পর্যবেক্ষণ থেকে সহজেই চিহ্নিত করা যায়: ''… এই গ্রামবাসীরা কাঁটাঝোপের পিছনে লুকিয়ে থাকে বা গ্রামের পলকা দেয়ালের পিছনে অবস্থান নেয়… গৃহস্বামী যখন বন্দুক থেকে গুলি ছুঁড়ে মারে তখন তাঁর স্ত্রী বারুদ ভরার কাজে তাকে সাহায্য করে।  এভাবেই তারা নিজেদের আত্মরক্ষার কাজটি করে...'' 

হিন্দুদের উপর অত্যাচার, সামরিক বিকাশকে রদ এবং অর্থনৈতিক সংস্কার আস্তে আস্তে মুগল শাসন ব্যবস্থার সামরিক দক্ষতাকে ভেঙে দিতে শুরু করে। আওরঙ্গজেবের সময়ে উচ্চতর পদের সামরিক জায়গিরদারদের মধ্যে কয়েকজনই হিন্দু ছিলেন। কিন্তু সেই হিন্দু কর্মকর্তাদের উপর নির্যাতন চালানো হয় এবং তাদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। রাজা তোদরমল, যিনি বন্দুকের রক্ষণাবেক্ষণের নিয়ম-কানুন তৈরি করেছিলেন, বা রাজা বীরবলের মতো হিন্দু প্রশাসকদের আর কখনও মুঘল দরবারে দেখা যায়নি। এবং যেহেতু প্রশাসন, অর্থ ও সামরিক বিকাশের মতো বিভাগগুলো হিন্দুদের উপরই নির্ভরশীল ছিল, ফলে প্রশাসনের এই বিভাগগুলিও একসময় টুকরো টুকরো হয়ে ভেঙে গিয়ে স্থবির হয়ে আসে।

আঠারো শতকের শেষের দিকে, ভারতীয় রাজ্যগুলি একই শতাব্দীর গোড়ার দিকে উদ্ভাবিত ইউরোপের পিতলে নির্মিত কামান ব্যবহার শুরু করেছিল। সেনা উন্নয়ন ও উদ্ভাবন হয়ে ওঠে অদৃশ্য প্রায়। একটি জাতি হিসাবে ভারত তখন ক্লান্ত, বিষন্ন এবং বিশৃঙ্খল।

এই সময়েই মারাঠা রাজের সর্বৈব উত্থান এবং মোগল সাম্রাজ্যের পতন ঘটে।

Related Topics

ভারতের ইতিহাস / মারাঠা / মুঘল শাসন

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • নতুন ‘সাইকস-পিকো বন্দোবস্তের’ বিরুদ্ধে এরদোয়ানের হুঁশিয়ারি
  • ঢাকা মেডিকেল কলেজের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা, হল ছাড়ার নির্দেশ
  • ইরানের মোসাদ-আতঙ্ক বাড়ছে, সন্দেহ এখন ‘মাস্ক, টুপি ও সানগ্লাসে’
  • সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে তিনজনের নাম জানিয়েছেন খামেনি: নিউইয়র্ক টাইমস
  • ভারত জানিয়ে দিল, পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু পানিচুক্তিতে আর কখনোই ফিরবে না
  • ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ করে ‘চিরকাল’ ক্ষমতায় থাকতে চান নেতানিয়াহু: বিল ক্লিনটন

Related News

  • পাঠ্যবই বদলেই মুছে ফেলা যাবে না ভারতের জটিল ইতিহাস—মুখোমুখি হওয়াটাই প্রয়োজন
  • ৩০০ বছর ধরে সমাধিস্থ, তবুও এ সম্রাট কেন আজ লাখো মানুষের ক্ষোভের কারণ?
  • মোগল-মারাঠা যুদ্ধে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কর্মকর্তা যেভাবে রাজনৈতিক সুবিধা আদায় করে নেয়!
  • ভারতীয় রাজাদের যুদ্ধ-বিবাদকে পুঁজি করে বিপুল সম্পদের পাহাড় গড়েন যে তরুণ আমেরিকান 
  • ভারতবর্ষের রহস্যময় চাপাতি আন্দোলন: ব্রিটিশদের মহাশঙ্কায় ফেলে দেয়!

Most Read

1
বাংলাদেশ

নতুন ‘সাইকস-পিকো বন্দোবস্তের’ বিরুদ্ধে এরদোয়ানের হুঁশিয়ারি

2
বাংলাদেশ

ঢাকা মেডিকেল কলেজের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা, হল ছাড়ার নির্দেশ

3
আন্তর্জাতিক

ইরানের মোসাদ-আতঙ্ক বাড়ছে, সন্দেহ এখন ‘মাস্ক, টুপি ও সানগ্লাসে’

4
আন্তর্জাতিক

সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে তিনজনের নাম জানিয়েছেন খামেনি: নিউইয়র্ক টাইমস

5
আন্তর্জাতিক

ভারত জানিয়ে দিল, পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু পানিচুক্তিতে আর কখনোই ফিরবে না

6
আন্তর্জাতিক

ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ করে ‘চিরকাল’ ক্ষমতায় থাকতে চান নেতানিয়াহু: বিল ক্লিনটন

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net