টকশো কিংবদন্তি ল্যারি কিংয়ের প্রয়াণ

মার্কিন টকশো কিংবদন্তি ল্যারি কিং মারা গেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর।
ষাট বছরের ক্যারিয়ারে তিনি ৫০ হাজারেরও বেশি সাক্ষাৎকার নিয়েছেন; সিএনএনের জনপ্রিয় টকশো 'ল্যারি কিং লাইভ' সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেছেন টানা ২৫ বছর।
লস অ্যাঞ্জেলেসের সিডার্স-সিনাই মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে অরা মিডিয়া। কোম্পানিটির সহ-প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তিনি।
মার্কিন গণমাধ্যম জানায়, এ মাসের শুরুতে তিনি কোভিড-১৯-এর চিকিৎসা গ্রহণের জন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন স্বাস্থ্যগত জটিলতায় ভোগার পাশাপাশি কয়েকবার হার্ট অ্যাটাকও হয়েছিল তার।
ব্যক্তিগত জীবনে ল্যারি সাত নারীকে আটবার বিয়ে করেন। তিনি পাঁচ সন্তানের জনক ছিলেন, যাদের মধ্যে দুজন গত বছর কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে মারা যান।
অনন্য প্রতিভার অধিকারী
জেরাল্ড ফোর্ড থেকে শুরু করে বারাক ওবামা পর্যন্ত মার্কিন প্রেসিডেন্টদের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ল্যারি; বাদ যাননি বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রনেতারাও। মার্টিন লুথার কিং, দালাই লামা, নেলসন ম্যান্ডেলা থেকে হালের তারকা সংগীতশিল্পী লেডি গাগা- সকলেই ল্যারির অতিথি হয়ে এসেছেন।
তার মৃত্যুর কারণ উল্লেখ না করেই এক বিবৃতিতে অরা মিডিয়া জানায়, '৬৩ বছর যাবত রেডিও, টেলিভিশন ও ডিজিটাল মাধ্যমে ল্যারি যেসব সাক্ষাৎকার, পুরস্কার এবং বিশ্বব্যাপী প্রশংসা রেখে গেছেন, তা সম্প্রচারক হিসেবে তার অনন্য প্রতিভার স্বাক্ষর বহন করে।'
১৯৩৩ সালে নিউইয়র্কের ব্রুকলিনে জন্ম নেওয়া এই সঞ্চালক প্রথম খ্যাতি লাভ করেন ১৯৭০ সালে তার রেডিও প্রোগ্রাম 'দ্য ল্যারি কিং শো'র মাধ্যমে।
১৯৮৫ সালে তিনি সিএনএনে 'ল্যারি কিং লাইভ' অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে রীতিমত তারকায় পরিণত হন।
অজস্র সম্মাননা ও পুরস্কার বিজয়ী এই তারকাকে সমালোচনাও শুনতে হয়। অভিযোগ ছিল, ল্যারির সাক্ষাৎকার গ্রহণ পদ্ধতি সেকেলে ও আক্রমণাত্মক। তবে গবেষণাধর্মী সাক্ষাৎকারের পরিবর্তে অকপট প্রশ্ন উপস্থাপন ক্ষমতার জন্য নিজেকে নিয়ে বেশ গর্ব ছিল তার।
২০১০ সালে অবশ্য ল্যারির জনপ্রিয়তার পারদ নামতে শুরু করে। অবশেষে সে বছরই অবসর নেন তিনি।
তবে সম্প্রতি হুলু ও রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম আরটিতে 'ল্যারি কিং নাও' নামে আরেকটি অনুষ্ঠানের উপস্থাপক হয়েছিলেন ল্যারি।
এছাড়া ১৯৮৮ সালে তিনি ল্যারি কিং কার্ডিয়াক ফাউন্ডেশন নামে একটি দাতব্য সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন যা স্বল্প আয়ের লোকজন ও যাদের মেডিকেল বীমা নেই তাদের হৃদরোগজনিত চিকিৎসার খরচ জুগিয়ে থাকে।
- সূত্র: বিবিসি