Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Sunday
June 08, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
SUNDAY, JUNE 08, 2025
এক ব্যবসায়িক সাম্রাজ্যের পতন: ৪ হাজার কোটি টাকা দেনা করে ৩০ ঋণদাতাকে ঝুঁকিতে ফেলেছে হাবিব গ্রুপ

অর্থনীতি

ওমর ফারুক
17 April, 2023, 12:25 am
Last modified: 17 April, 2023, 02:36 pm

Related News

  • ‘নো করিডর, নো পোর্ট’: ২৭-২৮ জুন রোডমার্চ করবেন বামপন্থীরা
  • চট্টগ্রামে কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রি না হওয়ায় এতিমখানায় দান, লোকসানে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা
  • চাটগাঁইয়াদের চোখে ‘ভইঙ্গা’ কারা? কেনই-বা এই নাম?
  • মুন্সীগঞ্জ, ফরিদপুর, সাতক্ষীরা, চট্টগ্রামের বিভিন্ন গ্রামে সৌদির সঙ্গে মিল রেখে আজ ঈদুল আজহা উদযাপন
  • কালুরঘাট সেতুতে সিএনজি অটোরিকশায় ঢাকা অভিমুখী ট্রেনের ধাক্কা, নিহত ৩

এক ব্যবসায়িক সাম্রাজ্যের পতন: ৪ হাজার কোটি টাকা দেনা করে ৩০ ঋণদাতাকে ঝুঁকিতে ফেলেছে হাবিব গ্রুপ

ওমর ফারুক
17 April, 2023, 12:25 am
Last modified: 17 April, 2023, 02:36 pm

বাংলাদেশে ছোট ব্যবসাগুলোকে ব্যাংক ঋণ পেতে বড় বড় ঝক্কিঝামেলা পোহাতে হয়। তবে কখনো সামান্য পরিমাণ, আবার কখনো কোনো জামানত ছাড়াই বড় ঋণ পাওয়া মামুলি বিষয় ছিল চট্টগ্রাম-ভিত্তিক বনেদি শিল্পগোষ্ঠী হাবিব গ্রুপের জন্য।

পরিতাপের বিষয়, ব্যবসা সম্প্রসারণের ব্যয়বহুল উদ্যোগ ৭৫ বছরের পুরনো পারিবারিক ব্যবসাটিকে প্রায় পথে নামিয়ে এনেছে। প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকার পাওনা আদায়ে ঋণদাতারা হাবিব গ্রুপের বিরুদ্ধে যেসব মামলা করেছে, তা থেকে গ্রেপ্তার এড়াতে দেশ ছেড়েছেন গ্রুপের সব পরিচালক।

একদা স্বচ্ছল এই ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর পতন – অদূরদর্শী ব্যবসায়িক সিদ্ধান্তের জন্য কীভাবে একটি প্রতিষ্ঠিত পারিবারিক ব্যবসাকেও মূল্য চুকাতে হয় – এবং কীভাবে ব্যাংকগুলো ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে সঠিক বিধি অনুসরণ না করার মূল্য দেয় – তারও উদারহণ।

বন্দর নগরীর লাভ লেনে হাবিব গ্রুপের সদর দপ্তর। এককালে কর্মব্যস্ততা ও প্রাণচাঞ্চল্যতায় মুখর এই অফিস দেখে প্রায় বিরানই মনে হয়। এরমধ্যেই তাদের ৩১টি অঙ্গপ্রতিষ্ঠানের অধিকাংশ কার্যক্রম বন্ধ করেছে।    

সুপরিচিত এই ব্যবসায়ীক সাম্রাজ্যের এই নাটকীয় পতনের নেপথ্য ঘটনাগুলো জানতে ব্যাংকার, কোম্পানি কর্মকর্তা, আইনজীবী ও পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড।

এভিয়েশন ব্যবসা ও বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গ্রুপটির বিনিয়োগ এবং গার্মেন্ট ব্যবসার জন্য ভারপ্রাপ্ত পরিচালকের মৃত্যু – এই পতনের কারণ বলে জানান গ্রুপের অভ্যন্তরীণ এবং ব্যাংকের সংশ্লিষ্টরা।   

হাবিব গ্রুপের পাঁচ পরিচালক – ইয়াকুব আলী, ইয়াসিন আলী, মাশরুফ হাবিব, সালমান হাবিব এবং তানভির হাবিবের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ও দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিন্তু, সন্দেহ করা হচ্ছে, চট্টগ্রামের একটি অর্থঋণ আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির কিছুদিন পর গত বছরের আগস্টে তারা দেশত্যাগ করেছেন।

হাবিব গ্রুপের নাজুক আর্থিক পরিস্থিতি ঋণদাতাদের বিচলিত করেছে। বকেয়া ঋণ আদায়ে এরমধ্যেই গ্রুপটির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিয়েছে কয়েকটি ব্যাংক।  

ব্যাংকাররা জানান, ১৯৪৭ সালে একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে যাত্রা শুরুর পর কালপরিক্রমায় এক ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য হয়ে ওঠে হাবিব গ্রুপ। জাহাজ নির্মাণ থেকে এভিয়েশন– নানামুখী খাতে প্রসার লাভ করে তাদের ব্যবসা। ২০০০ সালের শুরু থেকেই ব্যাংকগুলোর কাছে গ্রুপটি কাঙ্ক্ষিত এক গ্রাহকে পরিণত হয়। প্রথমদিকে ঋণ পরিশোধের ট্র্যাক রেকর্ডও ছিল ভালো। ফলে ঋণদাতারা ঋণ দিতে হাবিব গ্রুপের কাছেই ছুটেছে। ২০১৩-১৪ সাল পর্যন্ত ব্যবসায় খুব ভালো করা গ্রুপটি বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য একের পর এক ঋণদাতার থেকে অর্থও নেয়।

তবে ২০১৯ সাল থেকেই গ্রুপটির বিভিন্ন কোম্পানি ঋণ খেলাপি করতে থাকে।

ঋণদাতা ব্যাংক ও ব্যাংক-বহির্ভুত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো যতদিনে সতর্ক হয়, ততোদিনে ঋণের অঙ্ক ফুলেফেঁপে উঠেছে, তখন বাধ্য হয়েই আদালতের দ্বারস্থ হয় তারা।  

গত বছরের শেষপর্যন্ত যতগুলো মামলা হয়েছে, তার সঙ্গে নতুন আরো মামলা দায়ের হতে চলেছে। সাম্প্রতিকতম মামলাটি দায়ের হয়েছে গত ৬ এপ্রিলে। চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম বলেন, হাবিব গ্রুপের বিরুদ্ধে অর্থঋণ আদালতে এপর্যন্ত ৭টি মামলা দায়ের হয়েছে।

এরমধ্যে ইস্টার্ন ব্যাংকের মামলায় গত ৯ এপ্রিলের শুনানিতে গ্রুপটির কর্ণধারদের পাসপোর্ট আদালত প্রদর্শনের আদেশ ছিল, কিন্তু তা না করায় মামলাটি আগামীতে একতরফা শুনানির জন্য রয়েছে।

আইডিএলসি'র মামলায় তাদের দেশত্যাগের নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রয়েছে। প্রিমিয়ার লিজিং, বেসিক ব্যাংক এবং ন্যাশনাল ব্যাংকের মামলাগুলো নিয়মিত শুনানির জন্য রয়েছে বলেও জানান আদালতের এই কর্মকর্তা।

গ্রুপটির একটি অঙ্গপ্রতিষ্ঠান রিজেন্ট টেক্সটাইলের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা অফিসার (সিএফও) অঞ্জন কুমার ভট্টাচার্য বলেন, গ্রুপের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও পরিচালকদের কেউ দেশে নেই। তবে গ্রুপের কোনো বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।

আইনের আশ্রয় নিচ্ছে ঋণদাতারা

হাবিব গ্রুপের আকস্মিক পতন এবং তাদের আর্থিক দূরবস্থার ঘটনা – ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো সঠিক বিধি মান্য করেছিল কিনা – সেবিষয়েও প্রশ্নের উদ্রেক করেছে।  

যেমন ২০১৫ সালে ঢাকা ব্যাংক কোনো ধরণের বন্ধকি না রেখেই গ্রুপটিকে ৩৬০ কোটি টাকা ঋণ দেয়। ঢাকা ব্যাংকের এক পরিচালকের জামাতা ছিলেন হাবিব গ্রুপের একজন কর্ণধার।

আইডিএলসি ফাইন্যান্সের কাছে হাবিব গ্রুপের ৪২ কোটি টাকা দেনা রয়েছে। ঋণ আদায়ে আলোচনা করে কোনো ফল না পাওয়ায়, আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি চট্টগ্রামের অর্থঋণ আদালতে মামলা করে। গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর আদালত গ্রুপের শীর্ষ পাঁচ পরিচালকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন এবং তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন। কিন্তু, হাবিব গ্রুপের অভ্যন্তরীণরা জানাচ্ছেন, অভিযুক্তদের সকলেই আগস্টে দেশত্যাগ করেছেন।

আইডিএলসি ফাইন্যান্সের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ জাভেদ নূর বলেন, 'একবার তারা দেশে ফিরলে, আর যেতে পারবেন না'।

ঢাকা ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক একেএম শাহনেওয়াজ বলেছেন, 'কোনো প্রকার বন্ধকি ছাড়া, তার ব্যাংকের ৩৬০ কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার বিষয়ে তিনি জানেন না।   

২৫ কোটি টাকার মাত্র ১১ শতক জমি বন্ধক রেখে ওয়ান ব্যাংকের থেকে ৩০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে হাবিব গ্রুপ। বর্তমানে এটি মন্দঋণে পরিণত হয়েছে। এনিয়ে শঙ্কিত ওয়ান ব্যাংক টাকা আদায়ের কোনো উপায় খুঁজে পাচ্ছে না।

গ্রুপটির থেকে প্রায় ১৫০ কোটি টাকার ঋণ আদায় অনিশ্চিত হয়ে পড়ায় অর্থঋণ মামলা দায়ের করেছে ন্যাশনাল ব্যাংক।

ব্যাংকটির কর্মকর্তারা টিবিএসকে জানান, ২০০৩ সাল থেকে ন্যাশনাল ব্যাংকের জুবিলী রোড শাখার সাথে ব্যবসা করে আসছে হাবিব গ্রুপের প্রতিষ্ঠান হাবিব স্টিল। প্রথম এক দশক ভালো ব্যবসা করলেও ২০১৪-১৫ সাল থেকে নিয়মিত ঋণ শোধ করেনি প্রতিষ্ঠানটি। এরমধ্যে একাধিকবার পুনঃশ্রেণিকরণ সুবিধা নিয়েও ঋণ শোধ না করায় প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে গত সেপ্টেম্বরে মামলা দায়ের করে ব্যাংকটি।

এই ১৫০ কোটি টাকা ঋণের বিপরীতে মাত্র ৩৫ কোটি টাকার ২৭৮ শতক জমি বন্ধক রাখে হাবিব স্টিল।

ন্যাশনাল ব্যাংক ছাড়াও গ্রুপটির কর্ণধারদের বিরুদ্ধে আরো ৬ মামলা দায়ের করেছে তিনটি ব্যাংক ও একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান।

আইডিএলসি ফাইন্যান্সের দায়ের করা ১ কোটি ৮০ লাখ টাকার চেক প্রতারণার তিনটি মামলায় গত ৮ আগস্ট চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটও (ষষ্ঠ আদালত) গ্রুপের চেয়ারম্যানসহ পাঁচ কর্ণধারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

ওই বছরের ৩ নভেম্বর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানায় পাঠানো হয়। পরোয়ানার রেফারেন্স নম্বর হলো হলো ৩৩২৮ এবং ৩৩২৯।
আদালতের পাঁচশ গজের মধ্যেই অবস্থিত কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহেদুল কবির গত ১৩ মার্চ টিবিএসকে জানান, তারা এখনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পাননি।

এছাড়া, ২০২২ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর হাবিব স্টিলের ২৮০ শতক জমি বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দেন চট্টগ্রাম অর্থ ঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান। ৯১ কোটি টাকা ঋণ খেলাপির বিপরীতে ইস্টার্ন ব্যাংকের আগ্রাবাদ শাখার দায়ের করা মামলায় এই আদেশ দেওয়া হয়। হাবিব স্টিলের কর্ণধার আব্দুল কাদের, ইয়াসিন আলী ও ইয়াকুব আলীকে এই মামলায় অভিযুক্ত করা হয়।

এছাড়া গ্রুপটির ছয় প্রতিষ্ঠানের কাছে ১৭৩ কোটি টাকা আদায়ে বেসিক ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখা মামলা করেছে। রিজেন্ট টেক্সটাইল ও রিজেন্ট স্পিনিং মিলস কাছে ৪৬ কোটি টাকা পাওনা আদায়ে আইডিএলসি ফাইন্যান্স এবং ৮ কোটি টাকা পাওনা আদায়ে ব্যাংক এশিয়াও অর্থঋণ মামলা দায়ের করে।
আর অতি-সম্প্রতি গত ৬ এপ্রিল প্রিমিয়ার লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স গ্রুপটির তিনটি অঙ্গপ্রতিষ্ঠান- আনোয়ারা পেপার মিলস, রিজেন্ট ফ্যাব্রিক্স এবং হাবিব স্টিলের কাছে পাওনা ৫০ কোটি টাকা আদায়ে মামলা করেছে।

ওয়ান ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখার একজন কর্মকর্তা জানান, তারা গত ৪ এপ্রিল হাবিব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান – আনোয়ারা গ্যাশন, রিজেন্ট স্পিনিং এবং এইচজি এভিয়েশনের বিরুদ্ধে – মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে (নেগোশিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্ট আইনের অধীনে) ১৫টি চেক ডিজঅনার মামলা করেছেন। এসব প্রতিষ্ঠান খেলাপি করেছে ৩০০ কোটি টাকা।

ঋণ আদায়ে হাবিব গ্রুপের আরেক অঙ্গপ্রতিষ্ঠান রিজেন্ট এয়ারের দুটি হেলিকপ্টার নিলামে তুলে ইর্স্টান ব্যাংক। কিন্তু, সেগুলো বিক্রি করা যায়নি। অর্থঋণ আদালত আইন ২০০৩' এর ১২ ধারায় ২০২২ সালের ২৯ নভেম্বর ব্যাংকটির আগ্রাবাদ শাখায় এ নিলাম অনুষ্ঠিত হয়।

ব্যাংক এশিয়ার এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও চট্টগ্রামের জোনাল হেড জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ২০০৫ সাল থেকে হাবিব স্টিল ব্যাংক এশিয়া আগ্রাবাদ শাখা থেকে ঋণ সুবিধা নিয়েছিল। প্রথম দিকে লেনদেন ভালো থাকলেও ২০১৪-১৫ সালের পর তারা ঋণ পরিশোধে গড়িমসি শুরু করে। ফলে গ্রুপটির কাছে ঋণের পরিমাণ বাড়তে থাকে। এখনও তাদের কাছে ৮ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। পাওনা আদায়ে অর্থঋণ মামলা দায়ের করা হলেও ব্যাংকের কাছে কোনো সম্পত্তি বন্ধক না থাকায় এই ঋণ আদায়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখার প্রধান নাজিম উদ্দিন জানান, হাবিব স্টিলের কাছে ৫০ কোটি পাওনার বিপরীতে নাসিরাবাদ এলাকার মাত্র ৩০ শতক জমি বন্ধক রয়েছে।

ব্যাংক এবং নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ছাড়াও হাবিব গ্রুপ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের লোকসান করেছে, হাবিব গ্রুপের কাছে তাদের ৩০০ কোটি টাকা আটকে আছে।   

এর বাইরে হাবিব গ্রুপের কাছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের পাওনা প্রায় ২০০ কোটি টাকা, ঢাকার নাহিদ কটন মিলসের ১০ কোটি টাকা এবং বিমানের ২০ পাইলটসহ একাধিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কয়েক কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে জানা গেছে।

গত বছরের বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে গ্রুপটির বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জুবলী রোডের প্রধান কার্যালয়ের সামনে কয়েকবার বিক্ষোভ করে।

রিজেন্ট টেক্সটাইলের সিএফও অঞ্জন কুমার ভট্টাচার্য দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, কারখানাগুলো বন্ধ করে কর্মীদের ছাঁটাই করা হয়েছে। ফলে বেতন-বোনাস নিয়ে কর্মীদের যে ঝামেলা ছিল তা এখন নেই।

গতকাল সরেজমিনে হাবিব গ্রুপের লাভ লেনস্থ প্রধান কার্য়ালয়ে গিয়ে দেখা যায়, প্রথম থেকে তিনতলা পর্য়ন্ত অফিসের অনেকটাই ফাঁকা।

অঞ্জন বলেন, 'এক সময় আমাদের এই তিন তলাতেই ৪০-৪৫ জন কর্মকর্তা ছিল, তা এখন তিন-চার জনে নেমে এসেছে'।

গ্রুপের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে মালিকপক্ষের সাম্প্রতিক অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে কোম্পানির এই নির্বাহী বলেন, 'ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিষয়ে আমি কথা বলতে পারব না। তাছাড়া গ্রুপের কর্ণধাররা দীর্ঘদিন ধরে অফিসে উপস্থিত না থাকায় তাদের চিন্তা-ভাবনা সম্পর্কে জানিও না'।

রিজেন্ট স্পিনিং মিলস লিমিটেডের আর্থিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, হাবিব গ্রুপের এনার্জি এবং স্পিনিং খাতের মাত্র তিনটি কারখানা এখন চালু আছে। বাকি কারখানাগুলো ভাড়ায় দেয়া হয়েছে। পুরো গ্রুপে এক সময় ১৬ হাজারের বেশি কর্মী থাকলেও তা এখন এক হাজারের নিচে চলে এসেছে।

৭৫ বছরের পথচলার সমাপ্তি?

১৯৪৭ সালে চট্টগ্রামের হাবিব উল্লাহ মিয়া হাবিব ট্রেডিং নামে ভোগ্যপণ্য আমদানি-রপ্তানি ব্যবসা শুরু করেন।

পরবর্তীতে হাবিবের হাত ধরে তার তিন সন্তান ইয়াকুব আলী, মাহবুব আলী ও ইয়াসিন আলী ব্যবসায় আসেন। গার্মেন্টস, টেক্সটাইল, জাহাজ ভাঙ্গা, ইস্পাত, সিমেন্ট ও কাগজ শিল্পে ব্যবসা সম্প্রসারণের মধ্যে দিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন হাবিব গ্রুপ। সাত দশক সুনামের সঙ্গে ব্যবসাও করেন।

তবে গত এক দশকে সার, বিদ্যুৎ উৎপাদন, এভিয়েশন খাতে ব্যবসা সম্প্রসারণই লোকসানের পথে নামায় গ্রুপটিকে। গ্রুপটির ৩১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেশিরভাগেরই কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। কিছু প্রতিষ্ঠান অন্য ব্যবসায়ীদের ভাড়া দেয়া হয়েছে।

পাওনাদার ব্যাংকের কর্মকর্তা ও চট্টগ্রামের কয়েকজন ব্যবসায়ীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, হাবিব গ্রুপের প্রথম ও দ্বিতীয় প্রজন্ম ভালো ব্যবসা করলেও – বর্তমান প্রজন্ম ব্যবসার প্রতি তেমন মনোযোগী ছিলেন না।

বিদেশ থেকে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের পর বর্তমান প্রজন্মকে ব্যবসার দায়িত্ব পেয়ে এভিয়েশন খাতে বিনিয়োগ করে।এই সিদ্ধান্তই কাল হয়ে দাঁড়ায় প্রায় আট দশক পুরনো গ্রুপটির জন্য। হাবিব গ্রুপের এভিয়েশন অঙ্গপ্রতিষ্ঠান - রিজেন্ট এয়ারে বড় বিনিয়োগের পরও লাভের মুখ দেখেনি গ্রুপটি। বরং বছরের পর বছর লোকসান দিয়েছে। ফলে গ্রুপের অন্যান্য কোম্পানির আয় থেকে বিমান পরিচালনা করতে হয়। এরফলে লাভজনক কোম্পানিগুলোতেও একসময় চলতি মূলধনের  ঘাটতি দেখা দেয়।

হাবিব গ্রুপের বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পে ৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের পরও আশানুরূপ মুনাফা আসেনি।

হাবিব গ্রুপের চেয়ারম্যান ইয়াকুব আলী ছিলেন এনসিসি ব্যাংকের পরিচালক ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি। গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইয়াসিন আলী ছিলেন মেঘনা ব্যাংকের পরিচালক। ঋণ খেলাপি হওয়ার পর ব্যাংক দুটির পরিচালনা পর্ষদ থেকে তাদের অপসারণ করা হয়।

রোববার সন্ধ্যায় হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো এক বার্তায় হাবিব গ্রুপের পরিচালক এবং রিজেন্ট এয়ারওয়েজের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর সালমান হাবিব তাদের ব্যবসা যেসব প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে গেছে তা তুলে ধরেন।

পুরো বার্তাটি এখানে তুলে ধরা হলো:

করোনা মহামারি চলাকালে আমরা অনেক ধরনের আর্থিক সমস্যার মধ্যে পড়ি, বিশেষত এভিয়েশন খাতে। আর আপনাদের জানাই আছে, মহামারিকালে এই খাতটি বিশ্বে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই ধাক্কা আমরা কাটিয়ে উঠতে পারিনি। মহামারিকালে আমরা গার্মেন্টস খাতের অধিকাংশ বায়ারকেও হারাই, তারা আমাদের দেওয়া অধিকাংশ কার্যাদেশ বাতিল করেন।

এরপর, বাংলাদেশের সিআইবি (কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো) আইনের কারণে, অঙ্গপ্রতিষ্ঠানগুলো ঋণপত্র খুলে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারেনি। ফলে আমরা বেশিরভাগ ব্যবসা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারিনি।

এই আইনকে গুরুত্বের সাথে পর্যালোচনা করে সংশোধন করা উচিত। এর কারণেই আমাদের কিছু লাভজনক ব্যবসা পরিচালিত হতে দেওয়া হয়নি।

আমাদের সিআইবি নিয়ে সমস্যা হয়েছিল রিজেন্ট এয়ারওয়েজের জন্য, কিন্তু একারণে অন্য ব্যবসাগুলো ব্যাহত হয়েছে।

আমাদের অধিকাংশ ব্যবসার রয়েছে সর্বাধুনিক স্থাপনা এবং ২০২০ সালের আগপর্যন্ত বেশ সাফল্যের সাথে পরিচালিত হচ্ছিল। আমাদের সম্পদমূল্য আমাদের গ্রুপের দেনার থেকে অনেক বেশি। বর্তমানে আমরা ঋণ পুনর্গঠনের জন্য ঋণদাতাদের সাথে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি, যাতে আবার ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু করতে পারি, যেগুলো সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে। দুর্দশাগ্রস্ত কিছু খাতে পুঁজি আনার জন্য আমরা কিছু সম্পদ বিক্রির আলোচনাও করছি।

 

 

 

 

 

 

 

Related Topics

টপ নিউজ

হাবিব গ্রুপ / চট্টগ্রাম / ঋণ খেলাপি

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • চাটগাঁইয়াদের চোখে ‘ভইঙ্গা’ কারা? কেনই-বা এই নাম?
  • শেখ পরিবারের একচ্ছত্র শাসন থেকে দুই ভাইয়ের মনোনয়ন লড়াই: বাগেরহাটের রাজনীতিতে পরিবর্তনের হাওয়া
  • ট্রাম্পের সঙ্গে বিরোধের মধ্যেই নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ইঙ্গিত দিলেন মাস্ক, জানালেন সম্ভাব্য নামও
  • ইলন মাস্কের সঙ্গে সম্পর্ক শেষ: ট্রাম্প
  • পরিচ্ছন্নতার রোল মডেল জাপান, তবে ট্র্যাশ ক্যানগুলো কোথায়?
  • গাজায় ইসরায়েল-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীর নেতা ইয়াসির আবু শাবাব কে?

Related News

  • ‘নো করিডর, নো পোর্ট’: ২৭-২৮ জুন রোডমার্চ করবেন বামপন্থীরা
  • চট্টগ্রামে কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রি না হওয়ায় এতিমখানায় দান, লোকসানে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা
  • চাটগাঁইয়াদের চোখে ‘ভইঙ্গা’ কারা? কেনই-বা এই নাম?
  • মুন্সীগঞ্জ, ফরিদপুর, সাতক্ষীরা, চট্টগ্রামের বিভিন্ন গ্রামে সৌদির সঙ্গে মিল রেখে আজ ঈদুল আজহা উদযাপন
  • কালুরঘাট সেতুতে সিএনজি অটোরিকশায় ঢাকা অভিমুখী ট্রেনের ধাক্কা, নিহত ৩

Most Read

1
ফিচার

চাটগাঁইয়াদের চোখে ‘ভইঙ্গা’ কারা? কেনই-বা এই নাম?

2
বাংলাদেশ

শেখ পরিবারের একচ্ছত্র শাসন থেকে দুই ভাইয়ের মনোনয়ন লড়াই: বাগেরহাটের রাজনীতিতে পরিবর্তনের হাওয়া

3
আন্তর্জাতিক

ট্রাম্পের সঙ্গে বিরোধের মধ্যেই নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ইঙ্গিত দিলেন মাস্ক, জানালেন সম্ভাব্য নামও

4
আন্তর্জাতিক

ইলন মাস্কের সঙ্গে সম্পর্ক শেষ: ট্রাম্প

5
আন্তর্জাতিক

পরিচ্ছন্নতার রোল মডেল জাপান, তবে ট্র্যাশ ক্যানগুলো কোথায়?

6
আন্তর্জাতিক

গাজায় ইসরায়েল-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীর নেতা ইয়াসির আবু শাবাব কে?

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net