৫ লাখ টাকা পর্যন্ত খেলাপি ক্ষুদ্র ঋণের মামলায় শিথিলতা

ব্যাংকিং খাতে সিএমএসএমই, কৃষি ও ক্ষুদ্র ঋণের পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত মন্দ মানের খেলাপি ঋণে মামলা না করে অবলোপন (রাইট অফ) করার সুবিধা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করেছে।
নির্দেশনা অনুযায়ী, এখন থেকে কৃষি এবং অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি (সিএমএসএমই) শিল্পসহ ক্ষুদ্র অঙ্কের ঋণের মামলার খরচ যদি ঋণের অঙ্কের চেয়ে বেশি হয়; তাহলে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ অবলোপন করতে মামলা করতে হবে না।
ব্যাংকাররা বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই নির্দেশায় গ্রাহকের চেয়ে ব্যাংকগুলোর সুবিধা বেশি। কারণ তারা তোদের ব্যালেন্স শীট থেকে মন্দ মানের খেলাপি ঋণ কম দেখাতে পারবে। ঋণ আদায় না হলেও মামলার খরচ লাগবে না, একইসঙ্গে খেলাপি ঋণ কম থাকবে।
নতুন নীতিমালা অনুযায়ী ইসলামী শরীয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোও তাদের বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এ নীতিমালা অনুসরণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে।
যদিও আগে দুই লাখ টাকার ঋণ মামলা না করে অবলোপনে সুযোগ ছিল। নতুন নির্দেশনায় ঋণ আদায় না হলেও কাগজ-কলমে খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য বলছে, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাস শেষে ব্যাংক খাতের মোট ঋণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১৪ লাখ ৩৬ হাজার ১৯৯ কোটি ৮২ লাখ টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ হলো এক লাখ ৩৪ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা। যা মোট ঋণের ৯ দশমিক ৩৬ শতাংশ।
এছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিপোর্টে দেখা যায়, চলতি বছরের জুন শেষে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ অবলোপনের পরিমাণ প্রায় ৪৪৫০০ কোটি টাকার বেশি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২০০৩ সাল থেকে ব্যাংকিং খাতের ঋণ অবলোপন পদ্ধতি চালু করেছে।
ব্যাংকগুলোকে তাদের নিয়মিত ঋণের ০.২৫% থেকে ৫% পর্যন্ত প্রভিশন রাখতে হয়। কিন্তু খেলাপি ঋণের শ্রেণিভেদে ২০% থেকে ১০০% পর্যন্ত প্রভিশন রাখে তারা।
কিন্তু ঋণ অবলোপনের ক্ষেত্রে পুরো ঋণের পরিমাণ প্রভিশন হিসেবে রাখতে হয়। তবে অনেক সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক প্রভিশন ঘাটতি না দিতে পেরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ডেপারেল সুবিধা নিয়ে থাকে।