নেপালে ৪২ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা চায় বাংলাদেশ

নেপালের সঙ্গে প্রস্তাবিত প্রেফারেন্সিয়াল ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্টের (পিটিএ) আওতায় দেশটির কাছে ৪২টি পণ্যে শুল্কমুক্ত রপ্তানি সুবিধা চেয়েছে বাংলাদেশ। নেপাল সরকারের কাছে সম্প্রতি তালিকাটি হস্তান্তর করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
চলতি মাসেই বাংলাদেশের তালিকা নিয়ে মতামত জানাবে নেপাল। এর আগে নেপালের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের কাছে ২০ ধরনের পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা চাওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ তাতে সম্মতি দিয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাংলাদেশের পণ্য তালিকার ব্যাপারের নেপালের সম্মতি পাওয়ার পরই দুদেশের মধ্যে প্রস্তাবিত প্রেফারেন্সিয়াল ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্টের খসড়া চূড়ান্ত করা হবে।
এরপর অনুমোদনের জন্য খসড়াটি মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে এরপর নেপালের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর হবে। তখন এটি হবে বাংলাদেশের দ্বিতীয় দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যচুক্তি।
আগামী ৬ ডিসেম্বর ভুটানের সঙ্গে প্রথম পিটিএ সই করবে ঢাকা।
নেপালের কাছে পাঠানো বাংলাদেশের পণ্য তালিকায় রয়েছে তৈরি পোশাক, রেফ্রিজারেটর, মোটরসাইকেল, ওষুধ, আলু, চুইংগাম, সুইট বিস্কুট, টোস্ট বিস্কুট, জ্যাম-জ্যালি, ফল ও সবজির জুস, প্লাস্টিক টেবিলওয়্যার, কিচেন ওয়্যার, আনকোটেড পেপার অ্যান্ড পেপারবোর্ড, কাঠের তৈরি বাসা ও অফিসের ফার্নিচার ও প্লাস্টিক ফার্নিচার।
তৈরি পোশাকের মধ্যে রয়েছে টি-শার্টস, শার্টস ও মেনস আন্ডার গার্মেন্টস।
বাণিজ্য সচিব মো. জাফর উদ্দিন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'আশা করছি, চলতি বছরের মধ্যেই নেপালের সঙ্গে পিটিএ স্বাক্ষরের সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে পারব।'
নেপাল বাংলাদেশের বাজারে যেসব পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা চেয়েছিল, সেগুলো হচ্ছে- গ্রিন ভেজিটেবল, মসুর ডাল, এলাচ, আদা, বিভিন্ন ফল, চা, কফি, হারবাল পণ্য, ঝাড়ু, নুডলস, মিনারেল ওয়াটার, ক্লিংকার ও সিমেন্ট, দুগ্ধজাত পণ্য, হাতে তৈরি কাগজ, উলের তৈরি কার্পেট, পাশমিনা (শীতের চাদর বা শাল), পাদুকা, রূপার গহনা ও কনটাক্ট লেন্স।
নেপালকে এসব পণ্য শুল্কমুক্ত সুবিধা দিলে তার প্রভাব কী হবে, তা পর্যালোচনা করতে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনকে দায়িত্ব দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
গত সেপ্টেম্বরে কমিশন বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে আয়োজিত এক সভায় পণ্যভিত্তিক প্রভাব মূল্যায়ন করে ঝাড়ু, চা, সিমেন্ট ও পাদুকা ছাড়া অন্যান্য পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছে বলে জানা গেছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এফটিএ সেলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে একমাত্র নেপালের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত (ট্রেড সারপ্লাস) রয়েছে। এ কারণে প্রস্তাবিত পিটিএ স্বাক্ষর নিয়ে নেপাল সরকার খুব সতর্কতার সঙ্গে এগোচ্ছে।
বাংলাদেশের পাঠানো পণ্য তালিকার ব্যাপারে আগামী ৩ ডিসেম্বরের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানানোর কথা থাকলেও নেপাল বাড়তি সময় নিচ্ছে।
গত অর্থবছরে (২০২১৯-২০) বাংলাদেশ নেপালে রপ্তানি করেছে ৪৬ মিলিয়ন ডলারের পণ্য। আর নেপাল থেকে আমদানির পরিমাণ ছিল ১৫ মিলিয়ন ডলার।