Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Friday
August 15, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
FRIDAY, AUGUST 15, 2025
একটি জাহাজ নির্মাণকারক প্রতিষ্ঠানের অভিযাত্রা: রপ্তানিকারক থেকে লোকসানী হয়ে ওঠার কাহিনী

অর্থনীতি

ওমর ফারুক
23 August, 2021, 11:20 pm
Last modified: 30 August, 2021, 08:23 pm

Related News

  • জাহাজ রপ্তানি চুক্তির খবরে ওয়েস্টার্ন মেরিনের শেয়ারদর বেড়েছে ৯.৩৮%
  • দেশের সবচেয়ে বড় জাহাজ রপ্তানি করলো আনন্দ শিপইয়ার্ড, ঘুরে দাঁড়াচ্ছে জাহাজ নির্মাণ শিল্প  
  • এই নোঙর কার? যা দেখতে ভিড় করেছিল শত শত লোক!
  • মহামারিকালে দেশের সমুদ্রগামী বহরে ৩২টি জাহাজ যুক্ত করেছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা 
  • ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ যাত্রায় ওয়েস্টার্ন মেরিন 

একটি জাহাজ নির্মাণকারক প্রতিষ্ঠানের অভিযাত্রা: রপ্তানিকারক থেকে লোকসানী হয়ে ওঠার কাহিনী

প্রতিষ্ঠানটির বর্তমানে ৫৫২ কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে, যার বিপরীতে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দেনা রয়েছে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা
ওমর ফারুক
23 August, 2021, 11:20 pm
Last modified: 30 August, 2021, 08:23 pm
ছবি: মোহাম্মদ মিনহাজ উদ্দিন/ টিবিএস

দেশের অন্যতম জাহাজ নির্মাতা চট্টগ্রামের ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপ বিল্ডার্স। গত ২০ বছরে প্রায় ১৫০টি জাহাজ নির্মাণ করে আর্ন্তজাতিক বাজারে বেশ সুনাম অর্জন করে প্রতিষ্ঠানটি।

নেদারল্যান্ড, ডেনমার্ক, কেনিয়া, ফিনল্যান্ড, জার্মানি, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ভারতসহ ১২টি দেশে ৩৩টি জাহাজ রপ্তানি করে ওয়েস্টার্ন মেরিন। এতে ১৪০০ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা আয়সহ প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার ব্যবসা করে প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু পরিচালকদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিশাল দেনা ও অর্থ সংকটে মুখ থুবড়ে পড়েছে প্রতিষ্ঠানটি। 

প্রায় দেড় বছর ধরে স্থবির হয়ে আছে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম। নেই কোন দেশি ও বিদেশি অর্ডার। 

গত দেড় বছর আগেও প্রায় ৩ হাজার শ্রমিক প্রতিষ্ঠানটিতে কাজ করতো। কিন্তু বর্তমানে ৪০-৫০ জন শ্রমিক রয়েছে কারখানাটিতে। দেড় বছর আগে কাজ ছেড়ে দেওয়া বহু শ্রমিকের এখনও দুই-তিন মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। বহু কর্মকর্তার ১৪-১৫ মাস বেতন বকেয়া রয়েছে। 

সব মিলিয়ে ওয়েসস্টার্ন মেরিন শিপ বিল্ডার্সের কাছে শ্রমিক-কর্মকর্তাদের ৮-১০ কোটি টাকা বেতন বকেয়া রয়েছে। একই সময়ে শিপইয়ার্ডের জন্য লিজ নেওয়া জমির ভাড়া বকেয়া রয়েছে দুই কোটি টাকার বেশি। এছাড়া ১৮টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রায় দুই হাজার কোটি ঋণ আটকে গেছে। 

ইয়ার্ডের জমি দখলে নেওয়া ছাবের আহমদের জামাতা হাসান মাহফুজ বলেন, ওয়েস্টার্ন মেরিনের কাছে জমির ভাড়া বাবদ আমাদের এক কোটি টাকার বেশি পাওনা রয়েছে। বকেয়া ভাড়া আদায়ে ২০২০ সালের আগস্ট ও ডিসেম্বর মাসে ৩টি উকিল নোটিস দিয়েছি। তাতেও কাজ না হওয়ায় ইতোমধ্যে আমাদের ২৮০ শতক জমি দখল নিয়েছি। আরো ২৮০ শতক জমি এখনও ওয়েস্টার্ন মেরিনের কাছে রয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরের টাগ বোটটি তৈরি শেষে ডেলিভারির পর ওই ২৮০ শতক জমিও দখলে নেয়া হবে। 

দীর্ঘদিন ধরে ভাড়া বাকি থাকায় ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপ ইয়ার্ডের মাঝখানে দেওয়াল তুলে দিয়েছেন জমির মালিক ছাবের আহমেদ। ছবি: মোহাম্মদ মিনহাজ উদ্দিন/ টিবিএস

এছাড়া স্থানীয় কাদের হাজী, আব্দুল্লাহ হাজী, আবুল বশর ও শিকলবাহা মসজিদ কমিটির মোট ৬০০ শতক জমির ভাড়া বকেয়া রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির কাছে। এসব জমির মালিকদেরও প্রায় ১ কোটি টাকার বেশি ভাড়া বকেয়া রয়েছে বলে জানা গেছে। এরমধ্যে আবুল বশর ২০১৯ সালের শেষ দিকে ওয়েস্টার্ন মেরিনের বিরুদ্ধে ভাড়াটিয়া উচ্ছেদে মামলা দায়ের করেছেন। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওয়েস্টার্ন মেরিনের এক পরিচালক বলেন, ওয়ের্স্টান মেরিন শিপবিল্ডার্সের বর্তমানে ৫৫২ কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে। বিপরীতে প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দেনা রয়েছে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা। সরকার জাহাজ নির্মাণ খাতকে রক্ষায় এগিয়ে না আসলে এই কোম্পানির কোনদিনও ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ নেই। 

প্রতিষ্ঠানটির গত দেড় বছর ধরে সব অর্ডার বন্ধ রয়েছে। এমনকি আর্ন্তজাতিকভাবে নতুন কোন অর্ডার পাওয়ার সম্ভাবনাও ক্ষীণ। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, আর্ন্তজাতিক ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে যে প্রতিশ্রুতি করেছিল তা রক্ষা করতে পারেনি ওয়েস্টার্ন মেরিন। 

এরমধ্যে দুবাইভিত্তিক আল রশিদ শিপিং লিমিটেড মামলা করার পর একটি নেতিবাচক বার্তা গেছে সবার কাছে। এছাড়া ইতোমধ্যে যেসব কোম্পানির অর্ডার রয়েছে তা যথাসময়ে ডেলিভারি না দিতে পারার কারণেও প্রতিষ্ঠানটির সুনাম ক্ষুন্ন হয়েছে। 

ছবি: মোহাম্মদ মিনহাজ উদ্দিন/ টিবিএস

দেশের সম্ভাবনাময় খাত হিসাবে ২০০০ সালে জাহাজ নির্মাণ শিল্পে যুক্ত হয় চট্টগ্রামের ওয়েস্টার্ন মেরিন। ওই সময় ১৫ জন উদ্যোক্তা মিলে এই প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে। গত বিশ বছরে কার্গো ভেসেল, প্যাসেঞ্জার ভেসেল, মাল্টি পারপাস আইস প্লাস ভেসেল, ল্যান্ডিং ক্র্যাফট, অফশোর পেট্রোল ভেসেল, টাগ বোট, ফিশিং ভেসেল, বাল্ক কেরিয়ার এবং কন্টেইনার কেরিয়ারসহ বিভিন্ন ধরনের ১৫০টি জাহাজ নির্মাণ করে প্রতিষ্ঠানটি। 

এরমধ্যে ২০০৮ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ১২টি দেশে ৩৩টি জাহাজ রপ্তানি করে প্রায় ১৪০০ কোটি টাকা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করেছে। মূলত ২০০৮ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির স্বর্ণযুগ ছিল। 

এরপর গত দেড় বছর ধরে জাহাজ নির্মাণ কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ায় ঋণ আদায়ের ঝুঁকিতে রয়েছে ওয়েস্টার্ন মেরিনে বিনিয়োগ করা ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান। পাওনাদার প্রতিষ্ঠানগুলোর তথ্যমতে, ওয়েস্টার্ন মেরিনের কাছে এই পর্যন্ত ১৯ ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। কিন্তু গত দুই বছরে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কোন টাকাই পরিশোধ করতে পারেনি ওয়েস্টার্ন মেরিন। 

ওয়ের্স্টান মেরিনের বর্তমানে বড় সমস্যা নগদ অর্থ সংকট। প্রতিষ্ঠানটির ইতোমধ্যে পাওয়া অর্ডারগুলোর কাজ সম্পন্ন করতে মালিকদের হাতে কোন নগদ অর্থ নেই। বিভিন্ন বকেয়া ও শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করতে হিমশিম খাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। এই সময়ে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকেও কোন নতুন অর্থায়ন হচ্ছে না। অন্যদিকে তাদের ব্যাংক ঋণ ও সুদ দিন দিন বাড়ছেই। 

এদিকে গত দেড় বছর ধরে ওয়েস্টার্ন মেরিনের কোন উৎপাদন কিংবা ব্যবসা না থাকলেও হঠাৎ করে বেড়ে গেছে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের দাম। পুঁজিবাজারে থাকা প্রতিষ্ঠানটির গত মে মাস থেকে অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়ে ৯ টাকার শেয়ার গত ৫ আগস্ট ১৭ টাকায় পৌঁছে। গতকাল প্রতিষ্ঠান শেয়ার সাড়ে ১৬ টাকা ৩০ পয়সা বিকিকিনি হয়েছে।

ওয়েস্টার্ন মেরিনের নির্বাহী পরিচালক ক্যাপ্টেন তারেক এম নসরুল্লাহ বলেন, "আমরা চেষ্টা করছি প্রতিষ্ঠানটিকে ঘুরে দাঁড় করানোর জন্য। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের একটি টাগবোট ডেলিভারি দিয়েছি। বর্তমানে পায়রা বন্দরের টাগবোটটির নির্মাণ চলছে। অর্থ সংকটের কারণে দুবাইয়ের দুটি শিপসহ দেশের বড় জাহাজগুলো তৈরি এখন সম্ভব হচ্ছে না। করোনাকালীন সময়ে শ্রমিক-কর্মকর্তাদের বেতন ও কারখানার যাবতীয় ব্যয় নির্বাহ করতে হয়েছে। সরকার জাহাজ নির্মাণ শিল্পের জন্য 'শিপ বিল্ডিং ইন্ডাস্ট্রিজ ডেভলাপমেন্ট পলিসি' প্রণয়ন করছে। যেখানে স্বল্প সুদে দীর্ঘমেয়াদী ঋণ পাওয়ার সুযোগ থাকছে। আশা করি, খুব শিগগিরই এই অবস্থা কাটিয়ে উঠবে।"

ব্যাংক এশিয়ার ইভিপি ও জোনাল হেড এ কে এম সাইফুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, দেশের উদীয়মান খাতের প্রতিষ্ঠান হিসেবে সহজে এত ঋণ সুবিধা পেয়েছে ওয়েস্টার্ন মেরিন। কিন্তু ঋণের টাকায় জাহাজ নির্মাণ করে কর্ণধাররা লাভবান হলেও সময়মতো ব্যাংক ঋণ শোধ করেননি। প্রতিষ্ঠানটির কাছে ব্যাংক এশিয়া শেখ মুজিব রোড শাখার ৪৪৮ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। সম্পত্তির তুলনায় প্রতিষ্ঠানটির ঋণের বোঝা কয়েকগুণ বেশি হওয়ায় এখন ঋণ আদায়ের ঝুঁকিতে রয়েছে ঋণ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। 

গত দেড় বছর ধরে নির্মাণ কাজ স্থবির হয়ে পড়ায় ইতোমধ্যে অর্ডার নেওয়া দেশি-বিদেশি ৮টি জাহাজ ডেলিভারি দিতে পারছে না প্রতিষ্ঠানটি। চুত্তির সময় অনুযায়ী জাহাজ সরবরাহ করতে না পারায় ২০২০ সালের জুন মাসে হাইকোর্টে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুবাইভিত্তিক আল রশিদ শিপিং লিমিটেড। 

এর সাথে এস আলম গ্রুপের এভার গ্রিন নামের একটি কার্গো ভেসেল, বিআইডব্লিওটিসি'র একটি প্যাসেঞ্জার ভেসেল, চট্টগ্রাম বন্দর ও পায়রা বন্দরের ১টি ট্যাগ বোট ও সেনাবাহিনীর একটি ল্যান্ডিং ক্র্যাফটের ডেলিভারি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।  

এদিকে চট্টগ্রাম বন্দরের জন্য একটি টাগবোট (সাহায্যকারী জলযান) নির্মাণের চুক্তির পর কয়েক দফায় ২৩ কোটি টাকা বিল সংগ্রহ করলওে এখন পর্যন্ত সেটি সরবরাহ দিতে পারেনি ওয়েস্টার্ন মেরিন। চট্টগ্রাম বন্দর র্কতৃপক্ষ টাগবোট কিনতে ৩৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকায় চুক্তি করছিল। ২০১৮ সালের ২২ ডিসেম্বরের মধ্যে টাগবোটটি বন্দর কর্তৃপক্ষকে সরবরাহের কথাও ছিল। 

কিন্তু, সিংহভাগ অর্থ নেওয়ার পরও শর্তভঙ্গ করায় বিষয়টি খতিয়ে দেখতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এদিকে চট্টগ্রাম বন্দরের পাশাপাশি পায়রা বন্দরের জন্যও একটি টাগবোট নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে ওয়ের্স্টান মেরিন। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেটিও সরবরাহ দেয়া সম্ভব হবে না বলে মনে করছে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও ওয়েস্টার্ন মেরিনের ইনডিপেন্ডেট ডিরেক্টর ক্যাপ্টেন মো. আনাম চৌধুরী বলেন, "শিপবিল্ডার্স হচ্ছে টেক ক্রিয়েট  ইন্ডাস্ট্রি। দীর্ঘমেয়াদী ও কম সুদে লোন দিয়ে এই খাতকে টিকিয়ে রাখতে হয়। বিভিন্ন দেশের জাহাজ নির্মাণ খাত সরকারি সহায়তায় বেঁচে আছে। একইভাবে বাংলাদেশেও সরকারি সহযোগিতা ছাড়া এই খাতকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়। ঋণের টাকা যথাযথ ব্যবহার হয় সেজন্য প্রয়োজনে সরকার কম সুদে লোন দিয়ে মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করতে পারে।" 

জাহাজ নির্মাণ খাতের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, জাহাজ নির্মাণ শিল্পে বিনিয়োগের পর লাভের ধারায় পৌঁছতে দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন। কিন্তু, ব্যাংক থেকে চড়া সুদে স্বল্প মেয়াদী ঋণ নিয়ে ইয়ার্ড তৈরিসহ দীর্ঘ মেয়াদী প্রজেক্টে বিনিয়োগ করেছে শিপ বিল্ডার্সগুলো।  

অথচ অদক্ষ জনশক্তি ও বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কারণে ছয় মাসের একটি জাহাজ নির্মাণে কখনো কখনো দেড়-দুই বছর সময় লাগে। চুক্তির নির্দিষ্ট সময়ে ক্রেতাকে জাহাজ সরবরাহ করতে না পারলে জরিমানা কিংবা লোকসানে জাহাজ বিক্রি করতে হয়। এভাবে প্রতিষ্ঠানটি জাহাজ নির্মাণ করে বিক্রির আগেই সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের জন্য নেওয়া ব্যাংক ঋণ খারাপ হতে শুরু করে। এরপর এক ব্যাংকের ঋণ শোধ করতে অন্য ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছে। এভাবে একটির পর একটি পাওনাদার ব্যাংক বাড়তে থাকে। বাড়তে থাকে ঋণের আকারও।

শুধু ওয়েস্টার্ন মেরিনই নয়, দেশের অন্যান্য শিপ বিল্ডার্সেরও দূরাবস্থা চলছে। ব্যাংকের দেনা ও অর্থ সংকটে স্থবির হয়ে আছে বেশিরভাগ শিপ বিল্ডার্সের কার্যক্রম। সরকারের বিশেষ প্রনোদনা ছাড়া কোম্পানিগুলো ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ নেই বলে মনে করছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।

২০০৬ সালে চট্টগ্রামে এফএমসি ডর্ক ইয়ার্ড নামে আরো একটি শিপবিল্ডার্স গড়ে উঠে। প্রতিষ্ঠানটি এলটিসি ভেসেল, টিসিভি ভ্যাসেল, অত্যাধুনিক মাল্টিপারপাস ভ্যাসেল, ব্যারাক বার্জ, মাল্টিবীম ইকোসাউন্ডার সংযুক্ত সার্ভে ভ্যাসেল, কন্টেইনারশিপ, অয়েলট্যাংকার, যাত্রীবাহী জাহাজ, ফিশিং ট্রলার, ড্রেজার, টাগবোট, পন্টুনসহ ২০০টি ছোট বড় জাহাজ নির্মাণ করে। দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও জাহাজ রপ্তানি শুরু করতে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। 

সম্প্রতি সুদান সরকারের জন্য একটি এএসডি টাগবোট রপ্তানির নতুন কার্যাদেশ পেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। সর্বাধুনিক প্রযুক্তির এই টাগবোটের রপ্তানিমূল্য ৪৮ মিলিয়ন আরব আমিরাতি দিরহাম। ইয়ার্ডটিতে বর্তমানে হাজার কোটি টাকার কাজ চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ও সিইও ইয়াছিন চৌধুরী।  

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ন্যাশনাল ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, এফএমসি শিপ বিল্ডার্সের কাছে ব্যাংকটির দিলকুশা শাখার প্রায় ৭০০ কোটি টাকা পাওনা আটকে রয়েছে। ঋণের টাকায় জাহাজ নির্মাণ ও বিক্রি করে কর্নধাররা লাভবান হলেও দীর্ঘদিন ধরে টাকা ফেরত পায়নি ব্যাংক।

চট্টগ্রামের আরেকটি নামকরা জাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হলো কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স লিমিটেড। ১৯৯৪ সালে কর্ণফুলী শিপবিল্ডার্স প্রতিষ্ঠা করেন ইঞ্জিয়ার আব্দুর রশিদ। প্রতিষ্ঠার পর প্রতিষ্ঠানটি ভালো অবস্থানে রয়েছে। গত ২৭ বছরে প্রতিষ্ঠানটি দেশি-আর্ন্তজাতিক মানের বিভিন্ন ধরনের কমপক্ষে ২০০টি জাহাজ তৈরি করে। এছাড়া মেরামত করে ৬০০ এর অধিক জাহাজ।

ছবি: মোহাম্মদ মিনহাজ উদ্দিন/ টিবিএস

কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী আব্দুর রশিদ বলেন, "সরকার শিপ বিল্ডার্স খাতকে নিয়ে আলাদা নীতিমালা তৈরি করেছে। শিপ বিল্ডিং খাতের জন্য একটি ফান্ড তৈরি করার কথা কিন্তু সেটা করা হয়নি। এদিকে আমরা ব্যাংক কিংবা নীতিনির্ধারকদের কাছে বুক ফুলিয়ে ফান্ড চাইতে পারছি না। কারণ ইতোমধ্যে বেশিরভাগ শিপইয়ার্ড ব্যাংক ঋণ নিয়ে তা পরিশোধ করছে না। এতে ব্যাংকের কাছে শিপ বিল্ডার্স খাতে ঋণ দেওয়া নিয়ে এক ধরনের আতংক সৃষ্টি হয়েছে। সরকারের উচিত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। তবে সরকারকে এই খাত বাঁচিয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে। এই খাত থেকে প্রচুর দক্ষ জনবল তৈরি হবে। যা দিয়ে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে ইউরোপের তুলনায় শ্রমের মূল্য কম হওয়ায় বাংলাদেশে কম খরচে জাহাজ নির্মাণ সম্ভব। এতে বাংলাদেশ সরকারকে প্রচুর অর্থ খরচ করে বিদেশ থেকে জাহাজ আমদানি করতে হবে না।" 

২০১৭ সালে চট্টগ্রামে যাত্রা শুরু করে ডেল্টা শিপ ইয়ার্ড। প্রতিষ্ঠানটি এই পর্যন্ত ছোট বড় ২৮টি জাহাজ তৈরি করেছে। আরো ৪টি জাহাজ নির্মাণাধীন রয়েছে। তবে করোনার কারণে মাঝখানে দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ থাকায় অর্থ সংকটে পড়তে হয়েছে প্রতিষ্ঠানটিকে। 

ডেল্টা শিপ বিল্ডার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিরুল হক বলেন, "করোনার কারণে দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ ছিল। ফলে যথাসময়ে জাহাজ ডেলিভারি দেওয়া সম্ভব হয়নি। কিন্তু শ্রমিকের বেতন ও ব্যাংক ঋণের সুদ বন্ধ হয়নি।" 

জাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য স্বল্পসুদে দীর্ঘমেয়াদী ঋণের প্রস্তাব করেন এই উদ্যোক্তাও। 
 

Related Topics

টপ নিউজ

ওয়েস্টার্ন মেরিন / জাহাজ নির্মাণ শিল্প / সমুদ্রগামী নৌযান

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • জোরপূর্বক অপুকে দিয়ে চাঁদাবাজির স্বীকারোক্তির ভিডিও বানিয়েছেন ইশরাক, সংবাদ সম্মেলনে দাবি স্ত্রীর
  • রাস্তায় হাঁটছিলেন নরওয়ের অর্থমন্ত্রী, আচমকা ফোন করে নোবেল ‘দাবি করে বসেন’ ট্রাম্প
  • সেপ্টেম্বর নয়, ১২ অক্টোবর থেকে শুরু হচ্ছে টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচি
  • রোনালদো-জর্জিনার বাগদান ঘিরে সৌদি আরবে সমালোচনা-হাসিঠাট্টা, কেন?
  • সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ ভাতা বেড়ে দ্বিগুণ

Related News

  • জাহাজ রপ্তানি চুক্তির খবরে ওয়েস্টার্ন মেরিনের শেয়ারদর বেড়েছে ৯.৩৮%
  • দেশের সবচেয়ে বড় জাহাজ রপ্তানি করলো আনন্দ শিপইয়ার্ড, ঘুরে দাঁড়াচ্ছে জাহাজ নির্মাণ শিল্প  
  • এই নোঙর কার? যা দেখতে ভিড় করেছিল শত শত লোক!
  • মহামারিকালে দেশের সমুদ্রগামী বহরে ৩২টি জাহাজ যুক্ত করেছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা 
  • ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ যাত্রায় ওয়েস্টার্ন মেরিন 

Most Read

1
বাংলাদেশ

জোরপূর্বক অপুকে দিয়ে চাঁদাবাজির স্বীকারোক্তির ভিডিও বানিয়েছেন ইশরাক, সংবাদ সম্মেলনে দাবি স্ত্রীর

2
আন্তর্জাতিক

রাস্তায় হাঁটছিলেন নরওয়ের অর্থমন্ত্রী, আচমকা ফোন করে নোবেল ‘দাবি করে বসেন’ ট্রাম্প

3
বাংলাদেশ

সেপ্টেম্বর নয়, ১২ অক্টোবর থেকে শুরু হচ্ছে টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচি

4
খেলা

রোনালদো-জর্জিনার বাগদান ঘিরে সৌদি আরবে সমালোচনা-হাসিঠাট্টা, কেন?

5
বাংলাদেশ

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ ভাতা বেড়ে দ্বিগুণ

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net