আমিরাতের পথে বাংলাদেশে তৈরি তিনটি কার্গো ল্যান্ডিং ক্রাফট
সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) মারওয়ান শিপিং লিমিটেডের কাছে তিনটি ল্যান্ডিং ক্রাফট জাহাজ হস্তান্তর করেছে দেশের শীর্ষ জাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড লিমিটেড। বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীতে নবনির্মিত ল্যান্ডিং ক্রাফট 'মায়া'তে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে জাহাজগুলো হস্তান্তর করা হয়।
ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড ২০২৩ সালে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে মোট আটটি জাহাজ নির্মাণের চুক্তি করে—যার মধ্যে রয়েছে দুটি টাগবোট, চারটি ল্যান্ডিং ক্রাফট ও দুটি ট্যাংকার। এর অংশ হিসেবে 'মায়া', 'এসএমএস এমি' ও 'মুনা' নামের তিনটি ল্যান্ডিং ক্রাফট এবার হস্তান্তর করা হয়।
এর আগে এ বছরের জানুয়ারিতে 'রায়ান' নামের একটি ল্যান্ড ক্রাফট এবং জুলাইয়ে 'খালিদ' ও 'ঘায়া' নামের দুটি টাগবোট একই প্রতিষ্ঠানের কাছে হস্তান্তর করে ওয়েস্টার্ন মেরিন। নতুন তিনটি ল্যান্ডিং ক্রাফট সাগরের জ্বালানি খাতে ভারী যন্ত্রপাতি পরিবহনে ব্যবহৃত হবে।
এই নিয়ে ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড ১১টি দেশে ৩৬টি জাহাজ রপ্তানি করেছে। এসব জাহাজের মোট বাজারমূল্য প্রায় ১৩৮ মিলিয়ন ডলার।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত আব্দুল্লাহ আলী আব্দুল্লাহ আলহমৌদি। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক আব্দুর রহিম খান, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম ও প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্যাপ্টেন সোহেল হাসান।
আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত আব্দুল্লাহ আলী আব্দুল্লাহ আলহমৌদি বলেন, 'দুই প্রতিষ্ঠানের এই বাণিজ্যিক সম্পর্ক আমাদের মধ্যকার বন্ধুত্বকে আরও সুদৃঢ় করবে। ভবিষ্যতেও বাংলাদেশ থেকে আরও জাহাজ ইউএই-তে রপ্তানি হবে বলে আশা করছি।'
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক আব্দুর রহিম খান বলেন, জাহাজ নির্মাণ শিল্প বাংলাদেশের রপ্তানি বহুমুখীকরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
সাইফুল ইসলাম বলেন, 'বাংলাদেশ এখনও কিছু নির্দিষ্ট রপ্তানি পণ্যের ওপর নির্ভরশীল। এখন আমাদের উচিত নতুন রপ্তানি পণ্য ও নতুন বাজারের দিকে যাওয়া। জাহাজ নির্মাণ একটি শ্রমঘন ও উচ্চ প্রযুক্তির ভারি শিল্প। এখানে বিশাল সম্ভাবনা আছে এবং রপ্তানির মাধ্যমে বড় অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব।'
প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্যাপ্টেন সোহেল হাসান বলেন, 'এই খাতে আমাদের দক্ষ জনবল আছে, আর বিশ্বব্যাপী নতুন জাহাজের চাহিদাও বাড়ছে। তবে শিল্পের আরও বিকাশের জন্য প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদি পুঁজি বরাদ্দ। এটি পাওয়া গেলে রপ্তানিতে বড় অবদান রাখা সম্ভব হবে।'
