নিগারের ঝড়ো সেঞ্চুরি, ফাহিমা-সুমনার ৫ উইকেট; বাংলাদেশের রেকর্ড গড়া জয়

র্যাঙ্কিং দেখলে মনে হবে বাংলাদেশের সঙ্গে থাইল্যান্ডের খুব একটা ব্যবধান নেই। কিন্তু এটা যে কেবলই কেতাবই, সেটা মাঠের লড়াইয়ে বুঝিয়ে দিলেন নিগার সুলতানা জ্যোতি, জান্নাতুল ফেরদৌস সুমনা, ফাহিমা খাতুনরা। ব্যাটে-বলে শাসন করে থাইল্যান্ডকে রীতিমতো উড়িয়ে দিলো বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। রেকর্ডের মালা গেঁথে বিশ্বকাপের টিকেট কাটার মিশন শুরু করলো তারা।
বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের লাহোরে ওয়ানডে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে নিজেদের প্রথম ম্যাচে থাইল্যান্ডকে ১৭৮ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এই ফরম্যাটে রানের হিসেবে এটাই তাদের সবচেয়ে বড় জয়। আগের বড় জয়টি ছিল আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে। গত বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত সেই ম্যাচে ১৫৪ রানে জিতেছিল বাংলাদেশ।
টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামে বাংলাদেশ। নিগারের রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরি ও শারমিন আক্তার সুপ্তার ৯০ ছাড়ানো ইনিংসে ৩ উইকেটে ২৭১ রান তোলে তারা। ওয়ানডেতে এটাই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ, আগের সর্বোচ্চ ছিল ২৫২। বড় লক্ষ্য তাড়ায় সুমনা ও ফাহিমার রেকর্ড বোলিংয়ে ২৮.৫ ওভারে ৯৩ রানেই গুটিয়ে যায় থাইল্যান্ডের ইনিংস।
লক্ষ্য তাড়া করতে নামা থাইল্যান্ডের ইনিংস মুহূর্তেই এলোমেলা করে দেন ফাহিমা ও সুমনা। এ দুজনের বোলিংয়ের সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ করেন থাই ব্যাটাররা। দুজনই ৫টি করে উইকেট নেন। মেয়েদের ক্রিকেট এটা একটা রেকর্ড। এর আগে এক ইনিংসেই দুই বোলার ৫টি করে উইকেট কখনই নেননি।
প্রায় সাত বছর পর ওয়ানডে খেলতে নামা সুমনা ৫ ওভারে ৭ রানে ৫ উইকেট নেন। ৮.৫ ওভারে ৫ উইকেট নিতে ফাহিমার খরচা ২১ রান। থাইল্যান্ডের মাত্র তিনজন ব্যাটার দুই অঙ্কের রান করেন। নাত্য বুচাথাম ১৭, ছাইন্দা ছুতুরুয়াং ২২ ও অধিনায়ক নারুয়েমল ছাইওয়াই ১৫ রান করেন। বাকিদের মধ্য থেকে কেউ ৭ রানের বেশি করতে পারেননি।
এর আগে ব্যাটিং করতে নামা বাংলাদেশ এককাদা রেকর্ড গড়ে। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি দেখা পাওয়া নিগার ৮০ বলে ১৫টি চার ও একটি ছক্কায় ১০১ রান করেন। ৭৮ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি, যা বাংলাদেশি ব্যাটারদের মধ্যে দ্রুততম। বাংলাদেশের দ্বিতীয় ব্যাটার হিসেবে ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি করলেন তিনি। প্রথম ব্যাটার হিসেবে সেঞ্চুরি করা ফারজানা হক দুবার তিন অঙ্ক ছুঁয়েছেন।
তৃতীয় উইকেটে সুপ্তার সঙ্গে ১৩৮ বলে ১৫২ রানের জুটি গড়েন নিগার। ওয়ানডেতে যেকোনো উইকেটে এটা বাংলাদেশের সেরা জুটি। নিগার সেঞ্চুরি করলেও সুপ্তা অল্পের জন্য আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পাননি। ১২৬ বলে ১১টি চারে ৯৪ রানে অপরাজিত থাকেন ডানহাতি এই ব্যাটার। এর আগে ৮২ বলে ৫৩ রান করেন ফারজানা। ইনিংসে তিনটি হাফ সেঞ্চুরি হয়, এটাও বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটে প্রথম।