সুযোগ পেয়েও বাঁচার চেষ্টা নেই ব্যাটসম্যানের, প্রিমিয়ার লিগে এ কেমন আউট!

ডাউন দ্য উইকেটে এগিয়ে গিয়ে বলের নাগাল পাননি ব্যাটসম্যান। বল বাঁক খেয়ে গ্লাভসে পৌঁছাতেই উইকেটরক্ষক স্টাম্প ভেঙে দেন। ব্যাটসম্যান তার ব্যাট পপিং ক্রিসে রাখার বিন্দু পরিমাণ চেষ্টা করেননি। সোজা সাজঘরের পথ ধরেন। দৃশ্যটি দেখে আপনি অবাক হবেন। তবে আরেকটি আউট দেখলে বিস্মিত হবেন, ব্যাখ্যা খুঁজে পাবেন না। এগিয়ে এসে খেলার চেষ্টা করা এই ব্যাটসম্যান তার ব্যাট পপিং ক্রিসে রাখার সুযোগ পেয়েও রাখেননি।
বুধবার ঘটা এই দুই ঘটনা ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব ও গুলশান ক্রিকেট ক্লাবের মধ্যকার ম্যাচের। আউট হওয়া দুজন ব্যাটসম্যানই শাইনপুকুরের। এমন দুটি স্টাম্পিং আউট জন্ম দিয়েছে নানা প্রশ্ন, সন্দেহের। একাডেমি মাঠে শাইনপুকুরের অধিনায়ক রাফসান রহমানকে দেখে তো কয়েকজন ক্রিকেটার তাকে বিসিবির দুর্নীতি দমন বিভাগের কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগে ব্যাটিং করে ৪১ ওভারে ১৭৮ রানে অলআউট হয় গুলশান ক্রিকেট ক্লাব। ছোট এই পুঁজি নিয়েও তারা ম্যাচ জেতে ৫ রানে। ক্রিকেটে নিশ্চয়ই এটা একমাত্র ঘঠনা নয়। অল্প সংগ্রহ নিয়ে জেতার অনেক উদাহরণই আছে। কিন্তু শাইনপুকুরের দুজন ব্যাটসম্যান যেভাবে আউট হয়েছেন, তা জন্ম দিয়েছে প্রবল সন্দেহের। শাইনপুকুর ম্যাচ হেরেছে ৫ রানে।
বিতর্কিত আউটের প্রথমটি শাইনপুকুরের ইনিংসের ৩৬তম ওভারের। গুলশানের স্পিনার নিহাদুজ্জামানের একটি ডেলিভারি খেলার জন্য ক্রিজ ছেড়ে অনেকটা বেরিয়ে চলে যান রহিম আহমেদ। টার্ন করা ডেলিভারিটি ছিল বেশ বাইরে, রহিম বলের কাছে যাওয়ার চেষ্টাই করেননি। শট খেলতে চেয়েছেন, এমনও নয়। ডিফেন্স করার চেষ্টা করলেও বল টার্ন নিয়ে বেরিয়ে যায়। এরপর ক্রিজে ফেরার চেষ্টা করেননি রহিম। এগিয়ে থাকা জায়গা থেকেই হাঁটা দেন ড্রেসিং রুমে, একবার ঘুরে পেছনেও তাকাননি তিনি।
৪৪তম ওভারের স্টাম্পিংটি ছিল আরও দৃষ্টিকটু ও সন্দেহের। প্রথম বলটি অফ স্টাম্পের বেশ বাইরে করেন গুলশানের অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার নাঈম ইসলাম। ক্রিস ছেড়ে বেরিয়ে গেলেও শট খেলার কোনো চেষ্টা করেননি ব্যাটসম্যান মিনহাজুল আবেদিন সাব্বির, বলটি ফেরানোর চেষ্টাও ছিল না তার। ক্রিজের বাইরে যাওয়া মিনহাজুল হাঁটু গেড়ে বসে বল ছেড়ে দেন। বল পেছনে চলে যাচ্ছিল, তিনি তাকিয়ে দেখছিলেন। বাঁচার সুযোগ থাকার পরও ব্যাট ক্রিসে রাখেননি শাইনপুকুরের এই ক্রিকেটার। বরং দেখে মনে হয়েছে, ক্রিজে ব্যাট না রাখার চেষ্টাই ছিল তার!
এমন আউট দেখে বিস্ময়ভরা কণ্ঠে ধারাভাষ্যকার বলছিলেন, 'শকিং! এর আগে আমি কখনও এমন কিছু দেখিনি।' এমন আউটকে লজ্জাজনক বলেছেন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান শামসুর রহমান শুভ। আউটের ভিডিও পোস্ট করে নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে তিনি লিখেছেন, 'সিরিয়াসলি শেইম…!' বিতর্কিত দুই আউটের এই ম্যাচ জিতে সুপার লিগ নিশ্চিত হয়ে গেছে গুলশানের। শাইনপুকুরের অবনমন হওয়ার শঙ্কা আরও বাড়লো।
সন্দেহজনক দুটি আউট নিয়ে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ বা রিপোর্ট পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের সমন্বয়ক সাব্বির আহমেদ রুবেল। তিনি বলেন, 'এগুলো পুরোপুরি নির্ভর করে ম্যাচ রেফারির ওপর। আম্পায়াররা তাদের ম্যাচ রিপোর্ট দেবে। ম্যাচ রেফারি একটা রিপোর্ট করবে। এরপর যদি কোনো অভিযোগ আনার বিষয় থাকে, তখন অ্যান্টি করাপশন ইউনিট দেখবে।'