আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা মাহমুদউল্লাহর

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর থেকেই আলোচনায় ছিলেন মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। আলোচনার মাঝেই কদিন আগে ওয়ানডে ক্রিকেটকে বিদায় বলেন মুশফিকুর রহিম। এবার বিদায় বললেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায়ের ঘোষণা দিয়েছেন অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার। বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই ঘোষণা দেন তিনি।
২০২১ সালের নভেম্বরে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নেন মাহমুদউল্লাহ। গত বছরের অক্টোবরে বিদায় জানান টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটকে। কেবল ওয়ানডেতে খেলে যাচ্ছিলেন তিনি, এবার সেই ফরম্যাট থেকেও নিজেকে গুটিয়ে নিলেন দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে বাংলাদেশ দলের হয়ে খেলা মাহমুদউল্লাহ।
নিজের ফেরিফাইড ফেসবুক পেজে নিজের খেলার একটি ছবি পোস্ট করে তিনি লিখেছেন, 'সমস্ত প্রশংসা কেবল সর্বশক্তিমান আল্লাহর জন্য। আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি আমার সকল সতীর্থ, কোচ এবং বিশেষ করে আমার ভক্তদের ধন্যবাদ জানাই; যারা সব সময় আমাকে সমর্থন দিয়ে এসেছেন।'
পরিবারের সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে ৩৯ বছর বয়সী মাহমুদউল্লাহ লিখেছেন, 'বিশেষ কৃতজ্ঞতা আমার বাবা-মা, শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের, বিশেষ করে আমার শ্বশুরকে। এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে আমার ভাই এমদাদ উল্লাহকে, যে শৈশব থেকেই আমার পাশে ছিলো আমার কোচ ও পথপ্রদর্শক হিসেবে।'
ব্যাট-প্যাড তুলে রাখার ঘোষণার শেষ অংশে তিনি লিখেছেন, 'অবশেষে, আমার স্ত্রী ও সন্তানদের ধন্যবাদ, যারা ভালো ও খারাপ সময়ে আমার শক্তি হয়ে থেকেছে। আমি জানি, রাইদ (মাহমুদউল্লাহর সন্তান) আমাকে লাল-সবুজ জার্সিতে মিস করবে। সবকিছু নিখুঁতভাবে শেষ হয় না, তবে আপনি হ্যাঁ বলে সামনে এগিয়ে যান। শান্তি... আলহামদুলিল্লাহ। আমার দল এবং বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য শুভ কামনা।'
২০০৭ সালের জুলাইয়ে কলম্বোতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে দিয়ে বাংলাদেশ দলে অভিষেক হয় মাহমুদউল্লাহর। এরপর দীর্ঘ পথচলায় এই ফরম্যাটে দেশের পক্ষে চতুর্থ সর্বোচ্চ ২৩৯টি ম্যাচ খেলেন তিনি। ২০৯ ইনিংসে ব্যাটিং করে ৪টি সেঞ্চুরি ও ৩২টি হাফ সেঞ্চুরিসহ ৩৬.৪৬ গড় ও ৭৭.৬৪ স্ট্রাইক রেটে ৫ হাজার ৬৮৯ রান করেছেন মাহমুদউল্লাহ, যা বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে চতুর্থ সর্বোচ্চ।
৫০ টেস্টের ৯৪ ইনিংসে ব্যাটিং করে ৫টি সেঞ্চুরি ও ১৬টি হাফ সেঞ্চুরিসহ ৩৩.৪৯ গড়ে ২ হাজার ৯১৪ রান করেছেন তিনি, যা বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে ষষ্ঠ সর্বোচ্চ। টি-টোয়েন্টিতে দেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ১৪১টি ম্যাচ খেলেছেন মাহমুদউল্লাহ। এই ফরম্যাটে চার বছর নেতৃত্ব দেওয়া অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার ৮টি হাফ সেঞ্চুরিসহ ২৩.৫০ গড়ে রান করেছেন ২ হাজার ৪৪৪, যা বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বল হাতেও দলের জন্য অবদান রেখেছেন মাহমুদউল্লাহ, যা তাকে দলে অলরাউন্ডারের স্বীকৃতি এনে দেয়। টেস্টে ৬৬ ইনিংসে বোলিং করা ডানহাতি এই অফ স্পিনার উইকেট নিয়েছেন ৪৩টি, সেরা বোলিং ৫১ রানে ৫ উইকেট। ওয়ানডেতে ১৫৩ ইনিংসে বোলিং করা মাহমুদউল্লাহর শিকার ৮২ উইকেট, যা বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে নবম সেরা। এই ফরম্যাটে তার সেরা বোলিয় ৪ রানে ৩ উইকেট। টি-টোয়েন্টি ৮০ ইনিংসে হাত ঘুরিয়ে ৪১টি উইকেট নিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ, যা দেশের পক্ষে দশম সেরা।