পানের পিক পরিষ্কারে লন্ডনের ব্রেন্ট কাউন্সিলের বছরে খরচ ৩০ হাজার পাউন্ড
লন্ডনের ওয়েম্বলি এলাকার ফুটপাত বা দালানের দিকে তাকালে প্রায়ই চোখে পড়ে লালচে-বাদামি দাগ। এগুলো আসলে পানের পিক। স্থানীয় ব্রেন্ট কাউন্সিল জানিয়েছে, শুধু এই পানের পিক পরিষ্কার করতেই তাদের বছরে খরচ হচ্ছে ৩০ হাজার পাউন্ড!
উত্তর-পশ্চিম লন্ডনে, বিশেষ করে ওয়েম্বলিতে পান চিবানোর অভ্যাস বেশ পুরোনো। এখানকার টেলিফোন বক্স থেকে শুরু করে ফুলের বাগান—সব জায়গাতেই পানের পিকের দেখা মেলে। পান পাতা, সুপারি, মশলা আর তামাক মিশিয়ে এটি তৈরি হয়। এটি চিবানোর পর অনেকেই রাস্তায় পিক ফেলেন। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মানুষের কাছে এটি বেশ জনপ্রিয়।
ব্রেন্ট কাউন্সিল এখন এই বিষয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। তারা ঘোষণা দিয়েছে 'জিরো টলারেন্স' নীতির। কাউন্সিল বলছে, পানের পিক শুধু পরিবেশ নোংরা করে না, স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর। তাছাড়া এটি পরিষ্কার করাও খুব কঠিন। তাদের দাবি, শক্তিশালী পানির জেট মেশিন বা প্রেশার ওয়াশার দিয়েও অনেক সময় এই নাছোড়বান্দা দাগ তোলা যায় না।
এই সমস্যার সমাধানে কাউন্সিল এখন বিশেষ অভিযান শুরু করেছে। যেসব এলাকায় বেশি পিক ফেলা হয়, সেখানে সতর্কমূলক ব্যানার লাগানো হয়েছে। রাস্তায় এনফোর্সমেন্ট অফিসার বা কর্মীরা টহল দেবেন। কেউ রাস্তায় পানের পিক ফেললে তাকে ১০০ পাউন্ড পর্যন্ত জরিমানা করা হতে পারে।
তবে স্থানীয় বিরোধী দল লিবারেল ডেমোক্র্যাটরা বলছে, এই উদ্যোগ অনেক দেরিতে নেওয়া হয়েছে। দলটির নেতা পল লরবার বলেন, "আমরা অনেক দিন ধরেই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছিলাম। স্বাস্থ্যের ক্ষতি ও নোংরা পরিবেশের কথা চিন্তা করে আমরা তামাক চিবানো নিষিদ্ধ করার কথাও বলেছিলাম।"
ব্রেন্ট কাউন্সিলের পরিবেশ বিষয়ক সদস্য ক্রুপা শেঠ অবশ্য এই উদ্যোগে খুশি। তিনি কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, "যারা আমাদের রাস্তা নোংরা করছেন, তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। ব্রেন্টের সঙ্গে চালাকি করবেন না। আমরা আপনাদের ধরব এবং জরিমানা করব।"
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এ বিষয়ে সতর্ক করেছে। তাদের গবেষণায় দেখা গেছে, পানের সুপারি ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। এমনকি পানে তামাক না থাকলেও এটি স্বাস্থ্যের জন্য বেশ ক্ষতিকর।
