নরওয়েতে লটারিতে কোটি টাকা জয়ের মেসেজ, পরে জানা গেল সবই ভুল

নরওয়েতে হাজার হাজার মানুষ একদিন সকালে উঠে দেখলেন, তারা লটারিতে লাখ লাখ টাকা জিতেছেন! দেশটির রাষ্ট্র মালিকানাধীন জুয়ার প্রতিষ্ঠান 'নরস্ক টিপিং' তাদের ফোনে জানিয়েছিল তারা 'ইউরো-জ্যাকপট' লটারিতে বিশাল অঙ্কের পুরস্কার পেয়েছেন। খবর বিবিসির।
কিন্তু পরে জানা গেল, সেটা ছিল পুরোপুরি ভুল। কোম্পানির সফটওয়্যারে এক হিসাবের গরমিলের কারণে সবাইকে ভুল পুরস্কার দেখানো হয়েছিল।
নরস্ক টিপিং জানায়, শুক্রবার লটারি ফল ঘোষণার পর 'বেশ কয়েক হাজার' মানুষকে ভুল পরিমাণের পুরস্কার জেতার বার্তা পাঠানো হয়। তবে ঠিক কতজন এই ভুলে ভোগান্তিতে পড়েছেন, তা তারা জানায়নি।
এই ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা টনিয়ে সাগস্তুয়েন পরদিনই দুঃখ প্রকাশ করে পদত্যাগ করেন।
ভুলটা কীভাবে হলো?
জানা গেছে, ইউরোপ থেকে পুরস্কারের অর্থ আসে ইউরোতে। সেটা নরওয়েজিয়ান ক্রোনারে রূপান্তরের সময় এক জায়গায় বড়সড় ভুল হয়। যেখানে ১০০ দিয়ে ভাগ করার কথা ছিল, সেখানে ভুল করে ১০০ দিয়ে গুণ করা হয়। ফলে সবাইকে পুরস্কারের ১০০ গুণ বেশি টাকা দেখানো হয়!
ভুল শুধরে শনিবার সন্ধ্যায় সঠিক পুরস্কার জানানো হয়। তবে কারও ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ভুল টাকা পাঠানো হয়নি, এই কথা নিশ্চিত করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
সাগস্তুয়েন বলেন, "অনেকেই আমাদের ওপর ক্ষুব্ধ। কেউ কেউ ঘুরতে যাওয়ার, কেউ ফ্ল্যাট কেনার, আবার কেউ বাড়ি মেরামতের পরিকল্পনা করছিলেন। আমি তাদের কাছে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। আমি জানি, শুধু 'সরি' বললে ক্ষতি পূরণ হয় না।"
একজন নারী এনআরকে নামের টিভি চ্যানেলকে বলেন, তিনি ঘর মেরামত করছিলেন। তখনই ফোনে মেসেজ আসে যে তিনি জিতেছেন ১২ লাখ ক্রোনা (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ)। কিন্তু পরে দেখা গেল, তিনি জিতেছেন খুবই সামান্য পরিমাণ।
এই ঘটনার পর প্রতিষ্ঠানটির বোর্ড জরুরি বৈঠকে বসে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে, যারা প্রতিষ্ঠানটির দেখভাল করে। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয়, সাগস্তুয়েন আর সিইও হিসেবে থাকছেন না।
তিনি বলেন, "এই ভুলের পুরো দায় আমার। আমি দুঃখিত, তবে কোম্পানি যেসব পরিবর্তন এনেছে, তাতে আমি আশাবাদী।"
নরওয়ের সংস্কৃতি মন্ত্রী লুবনা জাফেরি বলেন, "এ রকম ভুল হওয়া একদমই উচিত নয়। কারণ এই প্রতিষ্ঠানই দেশের একমাত্র অনুমোদিত জুয়া প্রতিষ্ঠান।"
তিনি আরও বলেন, ভবিষ্যতে যেন এমন না হয়, তার জন্য কোম্পানিকে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় জোর দিতে হবে।
প্রসঙ্গত, এটি প্রথম নয় সম্প্রতি নরস্ক টিপিং আরও কিছু বড় ভুল ও প্রযুক্তিগত সমস্যা নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছে। তারা নিজেরাও স্বীকার করেছে, নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও সাধারণ মানুষের সমালোচনা একেবারেই যৌক্তিক।
অনুবাদ - নাফিসা ইসলাম মেঘা