কারও দলীয় স্বার্থ বাস্তবায়ন করা অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ নয়: তারেক রহমান
কারও দলীয় স্বার্থ বাস্তবায়ন করা অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ নয় বলে উল্লেখ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
শনিবার (৮ নভেম্বর) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে বিএনপির আয়োজনে হিন্দু প্রতিনিধি সম্মেলনে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে জনগণের ভোটের মাধ্যমে জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ ও জবাবদিহিমূলক একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠাই অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম প্রধান কর্তব্য বলে উল্লেখ করেন তারেক।
তিনি এও বলেন, 'অবশ্যই কারও দলীয় স্বার্থ বাস্তবায়ন করা এই সরকারের কাজ নয়। এ কারণে বিএনপি এই সরকারের প্রতি কোনো রকম চাপ প্রয়োগ করার পরিবর্তে বরং ভিন্ন মতের জায়গাগুলোতে নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে। এটাকেই বিএনপি ডিসেন্ট ওয়ে বলে মনে করে।'
অনুষ্ঠানে উপস্থিতদের উদ্দেশে তারেক বলেন, 'আপনাদের ধর্মীয় পরিচয় কেউ যাতে দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করতে না পারে, সে ব্যাপারে আপনারা সজাগ থাকবেন। নিজেদের অবশ্যই সংখ্যালঘু ভাববেন না। বাংলাদেশে সবার অধিকার সমান। বিএনপির কাছে দেশ ও জনগণের স্বার্থই অগ্রাধিকার।'
তিনি বলেন, 'দেশ যদি অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে, তাহলে পরাজিত ও পলাতক ফ্যাসিবাদী অপশক্তির পুনর্বাসনের পথ সুগম হতে পারে। ফ্যাসিবাদী আমলে ফ্যাসিবাদবিরোধীদের কেউ কেউ যে উপায়ে গুপ্ত কৌশল অবলম্বন করেছিল, পতিত ও পরাজিত অপশক্তিও বর্তমানে একইভাবে গুপ্ত কৌশল অবলম্বন করে দেশকে গণতন্ত্রের পথে উত্তরণের পথকে বাধাগ্রস্ত করে তুলছে কি না, সে ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখার জন্য আমি সরকার ও গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর প্রতি বিশেষভাবে আহ্বান জানাই।'
'গুপ্ত বাহিনীর সেই অপকৌশল থেকে রক্ষা পাওয়ার অন্যতম প্রধান কৌশল হচ্ছে একটি ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য বজায় ও বহাল রাখা। এ কারণেই বিএনপি অন্তর্বর্তী সরকার ও ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের রাজপথের সঙ্গীদের সঙ্গে সহযোগিতা এবং সমঝোতার দৃষ্টিভঙ্গি সমুন্নত রেখেছে', বলেন তিনি।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিএনপি বরাবরই একটি শান্তিকামী, সহনশীল ও গণমুখী রাজনৈতিক দল বলে মন্তব্য করেন তারেক। বলেন, 'গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল ভিন্ন দল ভিন্ন মতের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করা বিএনপির রাজনৈতিক সংস্কৃতির অংশ। দেশের জনগণের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সক্ষমতা নিশ্চিত করাই বিএনপির রাজনীতি।'
হিন্দু সম্প্রদায়ের উদ্দেশে তারেক বলেন, 'অন্তর্বর্তী সরকার আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা নিয়েছে। নির্বাচনের মাধ্যমে আপনারা আপনাদের স্বাধীন ইচ্ছা অনুযায়ী ভোট দিয়ে পছন্দের প্রার্থীকে বাছাই করে নেবেন। সম্প্রীতি ও সমৃদ্ধির বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য বিএনপি ইতোমধ্যে দেশের জনগণের সামনে একটি বিস্তারিত পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে।'
মতুয়া বহুজন সমাজ ঐক্য জোটের আহ্বায়ক সোমনাথ সেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে হিন্দু সম্প্রদায়ের দাবিগুলো বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে তুলে ধরেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ইকবাল হাসান মাহমুদ।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন মতুয়া বহুজন সমাজ ঐক্য জোটের সদস্যসচিব ও মুখপাত্র কপিল কৃষ্ণ মণ্ডল, সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক সমেন সাহা, হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, হিন্দু ফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিজন কান্তি সরকার, মতুয়া সম্প্রদায়ের নেতা সুবর্ণা রানী ঠাকুর প্রমুখ।
