নিবন্ধন পেয়েও পুনঃতদন্তে বাদ পড়ল বাংলাদেশ জাতীয় লীগ
প্রতিষ্ঠার ৫৬ বছর পর নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবন্ধন পেলেও পুনঃতদন্তে বাদ পরেছে বাংলাদেশ জাতীয় লীগ। মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।
তিনি বলেন, 'চূড়ান্ত পর্যালোচনা শেষে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্ক্সবাদী), বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টিকে নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।'
বাংলাদেশ জাতীয় লীগের বিষয়ে ইসি সচিব বলেন, 'পুনঃতদন্ত করে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের, ভোটে অংশগ্রহণ ও অতীত নির্বাচন সংক্রান্ত কার্যক্রমে জাতীয় লীগের ধারাবাহিকতা পাওয়া যায়নি।'
এর আগে, গত ৩০ সেপ্টেম্বর প্রাথমিকভাবে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও বাংলাদেশ জাতীয় লীগকে নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ইসি।
তবে জাতীয় লীগের ধারাবাহিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে এনসিপি। এর পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় লীগসহ ১০ দলের অধিকতর যাচাইয়ের জন্য আবার তদন্ত করে সংস্থাটি। এরপর অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন যাচাই শেষে কয়েক দফা বৈঠক করে এ সিদ্ধান্ত নেয় ইসি।
পুনঃতদন্তে দলটির ধারাবাহিকতা না পাওয়ায়, নিবন্ধনের এক মাস ১০ দিনের মাথায় বাদ পড়ে দলটি।
আইন অনুযায়ী, নিবন্ধন পেতে ইচ্ছুক দলের একটি কেন্দ্রীয় কমিটি, এক-তৃতীয়সংখ্যক জেলা ও ১০০টি উপজেলা কমিটি এবং প্রতিটি কমিটিতে ২০০ ভোটারের সমর্থনের প্রমাণ থাকতে হয়।
প্রসঙ্গত, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নিবন্ধন পেতে গত জুন মাসে নির্ধারিত সময়ে ইসিতে আবেদন করে ১৪৩টি দল। প্রাথমিক বাছাইয়ে ঝরে পড়ে ১২১টি আবেদন। এরপর ২২টি দলের ব্যাপারে মাঠ পর্যায়ে তদন্ত হয়।
মাঠ পর্যায়ের তদন্তে নিবন্ধন অযোগ্য বলে বিবেচিত হয় ৭টি দল। এগুলো হলো- ফরওয়ার্ড পার্টি, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)–সিপিবি (এম), বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি, বাংলাদেশ বেকার সমাজ, বাংলাদেশ সলিউশন পার্টি, নতুন বাংলাদেশ পার্টি, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম ও নেজামে ইসলাম পার্টি।
বাকি দলগুলো নিয়ে মাঠ পর্যায়ের অফিস, কমিটিসহ অন্যান্য শর্তাদি বিষয়ে তদন্ত করা হয়।
পরবর্তীতে অধিকতর যাচাই-বাছাইয়ে কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা নেই জানিয়ে জাতীয় জনতা পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (শাহ জাহান সিরাজ) এবং বাংলাদেশ জাতীয় লীগ-এই তিনটি দলকে বাদ দেওয়া হয়।
আর যে দলগুলো ছিল তার মধ্যে থেকে সঠিকতা না পাওয়ায় আটটি দলকে বাদ দেওয়া হয়। এগুলো হলো- আম জনতার দল, বাংলাদেশ জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি, ভাষানী জনশক্তি পার্টি, বাংলাদেশ বেকার মুক্তি পরিষদ, জনতার দল, মৌলিক বাংলা, জনতার পার্টি ও বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টি (বিজিপি)
এছাড়া, বাংলাদেশ নেজামে ইসলামী পার্টিকে আদালত নিবন্ধন দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়ায় আদেশের কপির অপেক্ষায় রয়েছে ইসি।
বর্তমানে ৫৩টি দলের নিবন্ধন রয়েছে। আর স্থগিত রয়েছে একটির (আওয়ামী লীগ) এবং বাতিল হয়েছে তিনটি (ফ্রিডম পার্টি, ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন, পিডিপি) দলের নিবন্ধন।
