ধানমন্ডি থেকে গণমাধ্যমকর্মীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

ঢাকার ধানমন্ডির একটি বাসা থেকে স্বর্ণময়ী বিশ্বাস (২৬) নামে এক তরুণীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল শনিবার (১৮ অক্টোবর) সন্ধ্যার দিকে তার লাশ উদ্ধার করা হয় বলে জানা গেছে।
স্বর্ণময়ী বিশ্বাস অনলাইন সংবাদমাধ্যম ঢাকা স্ট্রিমের গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমাউল হক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে (টিবিএস) বলেন, ওই নারীর পরিবারের লোকজন ঘরের দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। পুলিশ ওই হাসপাতাল থেকে গতকাল তার লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে। ময়নাতদন্তের পর বলা যাবে, তার মৃত্যু কীভাবে হয়েছে।
এদিকে স্বর্ণময়ী বিশ্বাসের মৃত্যুর পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অভিযোগ উঠেছে, সম্প্রতি ঢাকা স্ট্রিমের বাংলা কনটেন্ট এডিটর আলতাফ শাহনেওয়াজের বিরুদ্ধে অফিসের কয়েকজন লিখিতভাবে যৌননিপীড়নের অভিযোগ করেন। অভিযোগকারীদের মধ্যে তিনিও ছিলেন।
এ ব্যাপারে আলতাফ শাহনেওয়াজের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।
যার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাকে শাস্তির পরিবর্তে চাকরিতে পুনর্বহাল করার কথা বলা হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
এ বিষয়ে ঢাকা স্ট্রিমের প্রধান সম্পাদক ইফতেখার মাহমুদ মন্তব্য জানতে ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এদিকে নারী সংবাদকর্মীর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।
তাতে বলা হয়েছে, এমন সব ঘটনায় কর্মক্ষেত্রে নারীর নিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।
এছাড়া, এ ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে 'আমরাই পারি পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ জোট'-ও।
এই বিবৃতিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন অধিকারকর্মী সুলতানা কামাল, শাহীন আনাম, শীপা হাফিজা, রেখা সাহা প্রমুখ।
বিকেল ৪টার দিকে এ ঘটনার বিষয়ে ঢাকা স্ট্রিমের মানবসম্পদ ও প্রশাসন বিভাগের ব্যবস্থাপক পি এম সজল আহমেদের স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, আলতাফ শাহনেওয়াজের বিরুদ্ধে ১৩ জুলাই অভিযোগ জমা পড়ে। পরে আলতাফ শাহনেওয়াজকে বার্তাকক্ষ থেকে প্রত্যাহার করা হয় এবং অভিযোগ তদন্তে দুই সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়।
তদন্ত প্রতিবেদনে সহকর্মীদের সঙ্গে আলতাফ শাহনেওয়াজের কিছু ক্ষেত্রে অসৌজন্যমূলক আচরণের প্রমাণ পাওয়া সাপেক্ষে তাকে বার্তাকক্ষ থেকে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত বহাল রাখা হয়। এসব সিদ্ধান্তে কর্মীরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, তার মৃত্যুর সঙ্গে আলতাফ শাহনেওয়াজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের কোনো সম্পর্ক নেই। তিন মাস আগের অভিযোগকে কেন্দ্র করে বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।