উন্নয়ন তত্ত্ব শুধু অর্থনীতি নয়, গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচারের সঙ্গে সম্পর্কিত: পরিকল্পনা উপদেষ্টা

উন্নয়ন তত্ত্ব শুধু অর্থনীতি নয়, গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচারের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে মন্তব্য করেছেন অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) আয়োজিত এক সেমিনারে উপদেষ্টা এসব বলেন।
অনুষ্ঠানে আলোচ্য বিষয় ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডেভিড সি. এঙ্গারম্যানের লেখা বই 'অ্যাপোস্টলস অব ডেভেলপমেন্ট: সিক্স ইকোনমিস্টস অ্যান্ড দ্য ওয়ার্ল্ড দে মেড'—যেখানে দক্ষিণ এশিয়ার ছয়জন প্রভাবশালী অর্থনীতিবিদের চিন্তা-চেতনা ও অবদান তুলে ধরা হয়েছে।
উপদেষ্টা অমর্ত্য সেনের 'পাবলিক রিজোনিং' এবং মানব উন্নয়নের ধারণা উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরে বলেন, 'উন্নয়নের চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো মানুষের জীবনমান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সক্ষমতা বৃদ্ধি।'
অধ্যাপক মাহমুদ বলেন, 'দক্ষিণ এশিয়ার চিন্তাবিদরা উন্নয়নকে শুধুমাত্র অর্থনৈতিক বৃদ্ধির সঙ্গে সীমাবদ্ধ রাখেননি; বরং সমাজ, ইতিহাস ও নীতির সঙ্গে যুক্ত একটি প্রক্রিয়া হিসেবে দেখেছেন।'
তিনি বলেন, 'বর্তমান প্রেক্ষাপটে শুধু অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নয়, প্রয়োজন একটি জবাবদিহিমূলক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা এবং ন্যায়ভিত্তিক সমাজ। আমাদের লক্ষ্য হলো রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতার সুষম বণ্টন, নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ এবং আয়ের বৈষম্য হ্রাস করা।'
বিশেষ অতিথি সিপিডি চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, 'স্বাধীনতার পরে রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রণে অর্থনীতি ও বেসরকারি খাতের সামাজিকীকরণ নীতিগতভাবে নেওয়া হলেও কাঠামোগত বৈষম্য ও দারিদ্র্য দূর করার মূল চ্যালেঞ্জ এখনও সমাধান হয়নি।'
তিনি বলেন, 'সমাজের কাঠামোগত অন্যায় ও দারিদ্র্যের মূল কারণে মনোযোগ না দিলে প্রকৃত সমতা ও উন্নয়ন সম্ভব নয়।'
তিনি পরবর্তী প্রজন্মকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, 'সামাজিক সুরক্ষা, অন্তর্ভুক্তিমূলক বৃদ্ধি এবং কাঠামোগত পরিবর্তন একসঙ্গে না আনলে প্রকৃত অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন সম্ভব নয়।'
অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রেজেন্টেশনে মাধ্যমে ছয় অর্থনীতিবিদের জীবন ও কাজের ওপর আলোকপাত করা হয়। এছাড়া সেমিনারে অন্যান্য বিশিষ্ট গবেষক ও নীতি-নির্ধারকরা উপস্থিত ছিলেন।