মাদাগাস্কারে তিন সপ্তাহ ধরে চলছে 'জেন জি' বিক্ষোভ; নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ

মাদাগাস্কারে আবারো সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ার পর রুফিন ফোর্টুনাত জাফিসাম্বোকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আন্দ্রি রাজোয়েলিনা।
মাদাগাস্কারে বিদ্যুৎ ও পানির সংকটকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া বিক্ষোভ রক্তক্ষয়ী রূপ নেওয়ার পর প্রেসিডেন্ট রাজোয়েলিনা তার সরকার ভেঙে দেন। ২৯ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে এ ঘোষণা দেন তিনি।
সোমবার (৬ অক্টবোর) নিয়োগ পাওয়া নতুন প্রধানমন্ত্রী জাফিসাম্বো একজন সামরিক জেনারেল।
তবে, বিক্ষোভকারীরা এখন রাজোয়েলিনার পদত্যাগের দাবি তুলছেন। সোমবার রাজধানী আন্তানানারিভোতে রাস্তায় পুলিশ বিক্ষোভকারীদের দিকে কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়েছে। এই নিয়ে টানা তৃতীয় সপ্তাহের শুরুমতো বিক্ষোভ চলছে।
দেশের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ হয়েছে। স্থানীয় টিভি স্টেশনগুলো দেখিয়েছে, টোলিয়ারা ও আনসিরানানা (ডিয়েগো সুয়ারেজ) শহরে বিক্ষোভকারীরা পুলিশের বাধার মুখে পড়ছে।
আন্তানানারিভো থেকে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের একজন প্রতিবেদক জানিয়েছেন, বেশিরভাগ বিক্ষোভকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন এবং পুলিশের কাঁদানে গ্যাসের মুখোমুখি হয়েছেন।
জাতিসংঘ সোমবার জানিয়েছে, বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর থেকে ২২ জন মারা গেছে এবং ১০০-এর বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। তবে সরকার এই তথ্য অস্বীকার করেছে।
রাজোয়েলিনার সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ২৫ সেপ্টেম্বর শুরু হয় রাজধানীতে। হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নামে এবং পাথর ও টায়ার দিয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে।
মাদাগাস্কারে বিক্ষোভের আয়োজন করেছে 'জেন-জি মাদাগাস্কার' নামে একটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের যুব সংগঠন। তারা নিজেদের আন্দোলনকে 'শান্তিপূর্ণ নাগরিক আন্দোলন' হিসেবে বর্ণনা করেছে। সংগঠকরা জানিয়েছেন, নেপাল ও মরক্কোর যুব আন্দোলন থেকে অনুপ্রেরণা নিয়েছেন তারা।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) তথ্য অনুযায়ী, মাদাগাস্কারের ৩০ মিলিয়ন মানুষের মধ্যে মাত্র এক-তৃতীয়াংশের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ আছে। দেশে দৈনন্দিন বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রায়শই আট ঘণ্টার বেশি বন্ধ থাকে। সরকারি বিদ্যুৎ সংস্থা জিরামার দুর্নীতি ও অপব্যবস্থার অভিযোগ জনরোষ আরও বাড়িয়েছে।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের গ্লোবাল ভাইস চেয়ারম্যান কেটাকান্দ্রিয়ানা রাফিটোসন রয়টার্সকে বলেছেন, 'মানুষের কাছে ঔষধ রাখার ফ্রিজ নেই, পানি নেই এবং তার ওপর বড় ধরনের দুর্নীতি চলছে। এই সমস্যার কারণে বিক্ষোভের সূত্রপাত।'
আন্তানানারিভোতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ব্যবহার করার পর বিক্ষোভ সহিংসতায় রূপ নেয়। দোকানপাট লুট করা হয় এবং কয়েকজন সংসদ সদস্যের বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।