বাংলাদেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরে আগ্রহী ভুটান

বাংলাদেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করার পাশাপাশি দুই দেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর মধ্যে সংযোগ স্থাপনে গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেছে ভুটান।
ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে জানান, এই উদ্যোগ দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।
গেল শুক্রবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ৮০তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে এক বৈঠকে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে এই প্রস্তাব দেন।
বৈঠকে শেরিং তোবগে বলেন, ভুটানের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল 'গেলেপু মাইন্ডফুলনেস সিটি'র সঙ্গে কুড়িগ্রামে ভুটানি বিনিয়োগকারীদের জন্য নির্ধারিত বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের সংযোগ স্থাপন করা গেলে উভয় দেশই বড় আকারে লাভবান হবে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, উন্নত যোগাযোগ, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ভুটান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে নতুন মাত্রা দিতে পারে। এ সময় তিনি দুই দেশকে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সব সম্ভাবনা খতিয়ে দেখার আহ্বান জানান।
বৈঠকে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ধর্মীয় পর্যটন প্রসারে তাঁর সরকারের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের বৌদ্ধ ভিক্ষুরা ভুটান ভ্রমণ করতে পারেন, যা দুই দেশের পর্যটন বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
পাশাপাশি ভুটান তাদের জলবিদ্যুৎ সম্ভাবনাকে বাংলাদেশের উন্নয়নে কাজে লাগাতে চায় এবং তাদের ওষুধশিল্পে বাংলাদেশের বিনিয়োগকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত। ফাইবার অপটিক সংযোগ স্থাপনেও তিনি বাংলাদেশের সহযোগিতা কামনা করেন।
বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও আলোচনা হয়। ভুটানের প্রধানমন্ত্রী জানান, রোহিঙ্গা ইস্যুতে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘে আয়োজিত পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে তাঁর দেশ সক্রিয়ভাবে অংশ নেবে।
অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করে শেরিং তোবগে বলেন, বাংলাদেশ এখন 'সঠিক নেতৃত্বে' রয়েছে। তিনি প্রধান উপদেষ্টাকে নিজের 'ব্যক্তিগত আদর্শ' হিসেবে উল্লেখ করে 'মাই প্রফেসর' বলে সম্বোধন করেন।
এ ছাড়া, থিম্পুতে সম্প্রতি উদ্বোধন হওয়া বাংলাদেশের নতুন চ্যান্সারি ভবনের স্থাপত্যশৈলীরও প্রশংসা করেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী।
বৈঠকের শেষে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস ভুটানের প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। শেরিং তোবগে আমন্ত্রণ গ্রহণ করে বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার আগেই তিনি এ সফর করতে পারেন।