আমির হামজার বক্তব্য খুবই পরিকল্পিত এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত: আব্দুল কাদের
ইসলামী বক্তা আমির হামজার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে বিতর্কিত বক্তব্যকে পরিকল্পিত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আব্দুল কাদের।
আজ (২১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় এক ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।
পোস্টে তিনি লেখেন, 'আমির হামজা বাংলাদেশের হাতেগোনা কয়েকজন ওয়ায়েজদের একজন, যাঁর গ্রামেগঞ্জে এবং তরুনদের মধ্যেও ভালো গ্রহণযোগ্যতা আছে, মানুষজন দূরদূরান্ত থেকে এসে ওয়াজ শুনে। এমন একজন মানুষ যখন ঢাবি, জাবিসহ বিশ্ববিদ্যালয় এবং সেখানকার শিক্ষার্থীদেরকে নিয়ে বিষোদগার করেন, তখন স্বাভাবিকভাবেই সাধারণ মানুষের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে বিরূপ মনোভাব তৈরি হয়।'
'আবার এই বিষোদগার যখন ধর্মের স্পর্শকাতর বিষয়- আজান,নামাজ, মদ্যপানের মতো বিধিনিষেধকে কেন্দ্র করে হয়, তখন এই অঞ্চলের ধর্মপ্রাণ মানুষের অন্তরে ভালোভাবে আঘাত করে। বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে সাধারণ মানুষের বদ্ধমূল ধারণাটা আরো বেশি প্রগাঢ় হয়।'
তিনি আরও লেখেন, 'আমির হামজা সাহেব তাঁর অজ্ঞতা বশত এমন বক্তব্য দিবেন, এটা বিশ্বাসযোগ্য না; বরঞ্চ এমন বক্তব্য খুবই পরিকল্পিত এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। নির্বাচনের আগে দিয়ে এই অঞ্চলের ধর্মপ্রাণ মানুষকে প্রভাবিত করার জন্য অনেক রাজনৈতিক দল ধর্মকে ব্যবহার করেন, নিজের পক্ষে এবং প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। ডাকসু নির্বাচনের ঠিক আগে দিয়ে একটা সংগঠনও এই কাজটা করেছেন। তাঁদের প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য ইসলাম বিদ্বেষী ট্যাগ দিয়েছেন, রুমে রুমে গিয়ে, জনে জনে ধরে ধরে বলেছেন। জুলাইয়ের গাদ্দার হিসেবেও তুলে ধরেছেন। যাকে যেভাবে প্রভাবিত করা যায়, ধর্ম দিয়ে হোক কিংবা জুলাইয়ের স্পিরিট দিয়ে হোক, সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন।'
পোস্টে আরও উল্লেখ করা হয়, 'আমির হামজাদের এমন কৌশল সাময়িকভাবে সফলতা এনে দিলেও দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির দিকে নিপতিত করবে। তাছাড়া আমির হামজা এখন এসে ঢাবির ১৬ বছরের যে ইতিহাস বললেন, সেই ষোল বছরের ফ্যাসিবাদী আমলে আমির হামজার ভূমিকা কেমন ছিল, সেটা তো সবাই জানে!'
'মিথ্যা কিংবা অপকৌশলের মধ্যে প্রকৃত সফলতা নাই, অন্তত আমাদের ওয়ায়েজীনরা এই বিষয়টা সমুন্নত রাখবে, আমরা একটা সুন্দর-সুস্থ রাজনৈতিক সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করব, এমনটাই প্রত্যাশা,'—যোগ করেন তিনি।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ইসলামী বক্তা মুফতি আমির হামজা দাবি করেছেন তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে সকালে মদ দিয়ে কুলি করতে দেখেছেন।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা শিক্ষকদের লাঠি দিয়ে মারধর করেন।
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এসব বক্তব্যকে সম্পূর্ণ মনগড়া ও অসত্য বলে অভিহিত করেছে। প্রশাসন উল্লেখ করে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগ চালু হয় ২০১১ সালে এবং ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষে প্রথমবার শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। ফলে আমির হামজার ভর্তি হওয়ার দাবিটি সত্য নয়।
