এলডিসি উত্তরণের আগে সম্ভাব্য অর্থনৈতিক ঝুঁকির বিষয়ে সতর্কতা তারেক রহমানের

২০২৬ সালের নভেম্বরে জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের প্রাক্কালে সম্ভাব্য অর্থনৈতিক ঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
আজ (১৬ সেপ্টেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, "উত্তরণ শুধু একটি অর্জন নয়; এর সঙ্গে বেশ কিছু ঝুঁকি ও চ্যালেঞ্জও রয়েছে, যা আমাদের সততার সঙ্গে স্বীকার করতে হবে। এগুলো সরাসরি আমাদের অর্থনীতি ও জনগণের ওপর প্রভাব ফেলবে।"
পর্যাপ্ত প্রস্তুতি ছাড়া অগ্রসর হলে দেশের অর্থনীতি ও জনগণ সরাসরি চাপের মুখে পড়তে পারে—এমন আশঙ্কা জানিয়ে তিনি কয়েকটি সম্ভাব্য সমস্যার দিক তুলে ধরেন।
তিনি সতর্ক করে বলেন, যদি বাংলাদেশ সতর্কতার সঙ্গে উত্তরণ প্রক্রিয়াটি পরিচালনা না করে, তবে নানা জটিলতা দেখা দিতে পারে।
তারেক রহমান বলেন, 'বাণিজ্য সুবিধা হারালে বাংলাদেশের পোশাক খাত বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে এবং প্রতিযোগিতার সক্ষমতা কমে যাবে। পাশাপাশি সহজ শর্তে ঋণ ও বৈদেশিক সহায়তার প্রবাহও কমে যেতে পারে, যা রিজার্ভ ও ঋণের চাপের মুখে থাকা অর্থনীতিকে আরও সংকটের দিকে ঠেলে দিতে পারে।'
তিনি আরও উল্লেখ করেন, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) অধীনে ভর্তুকি এবং ওষুধের পেটেন্ট সংক্রান্ত যেসব নমনীয় বাণিজ্য সুবিধা বাংলাদেশ পায়, এলডিসি থেকে উত্তরণের পর সেগুলো আর প্রযোজ্য থাকবে না। এর ফলে প্রয়োজনীয় ওষুধের দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
তারেক রহমান বলেন, 'আমাদের রপ্তানি প্রায় পুরোপুরি একটি খাতনির্ভর—যা হলো পোশাকশিল্প। এই খাতে প্রতিযোগিতার সক্ষমতা কমে গেলে পুরো অর্থনীতি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠবে।'
তিনি জোর দিয়ে বলেন, 'আমাদের দেশীয় উদ্যোক্তারা যেন এই রূপান্তরের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত না হন, তা নিশ্চিত করতে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।'
এই বিএনপি নেতা পোশাক খাতের বাইরে রপ্তানির বহুমুখীকরণে গুরুত্বারোপ করেন। তিনি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, ওষুধ এবং অন্যান্য উচ্চ-মূল্য সংযোজিত শিল্পে রপ্তানি বৈচিত্র্য আনার আহ্বান জানান।
সেই সঙ্গে তিনি সরকারি প্রতিষ্ঠানে আর্থিক শৃঙ্খলা জোরদার, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে বিনিয়োগ, আধুনিক বাণিজ্য অবকাঠামো নির্মাণ এবং বাণিজ্যসুবিধা ও সবুজ অর্থায়নে বৈদেশিক প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের বিষয়েও গুরুত্ব আরোপ করেন।
পোস্টের শেষাংশে তারেক রহমান লেখেন, 'আমাদের শ্রমিক, কৃষক ও তরুণ প্রজন্মকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে রাখা উচিত হবে না। উত্তরণের সুফল পেতে হলে বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য আগে বাস্তব ও কার্যকর অগ্রগতি এবং সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।'