‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়ায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাকে ধমক দিয়ে মুখ চেপে ধরল পুলিশ

রিমান্ড শুনানি শেষে আদালত থেকে কারাগারে নেওয়ার পথে 'জয় বাংলা' বলে স্লোগান দেন নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতা তরিকুল ইসলাম তারেক। সঙ্গে সঙ্গে পাশ থেকে এক পুলিশ সদস্য তার মুখ চেপে ধরেন এবং ধমক দেন। আজ সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুজ্জামানের আদালতের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
বিএনপিকর্মী মকবুল হোসেন হত্যার ঘটনায় গত ৪ আগস্ট তারেকের পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের মতিঝিল জোনাল টিমের উপপরিদর্শক তোফাজ্জল হোসেন। ওইদিন রিমান্ড বিষয়ে শুনানির জন্য আজ দিন ধার্য করেছিলেন আদালত।
আদালতে রিমান্ড আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর মুহাম্মদ শামছুদ্দোহা সুমন। অন্যদিকে রিমান্ড বাতিল চেয়ে শুনানি করেন রামিম হোসেন মোল্লা। শুনানি শেষে আদালত তারেকের এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
শুনানি চলাকালে আদালতে কথা বলার অনুমতি নিয়ে তারেক বলেন, 'ঘটনা ২০২২ সালের। আর ছাত্রলীগের কমিটি দেয় ২০২৩ সালের ১৩ জুলাই। ঘটনাস্থলে আমার ফিজিক্যালি উপস্থিত থাকার কোনো তথ্য বা আশপাশে আমার ফোনের সিমের লোকেশনের তথ্য পাওয়া গেছে কি না। ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।'
এ সময় বিচারক তারেকের কাছে তার পেশা জানতে চান। জবাবে তারেক জানান, তিনি বেকার।
এরপর বিচারক জানতে চান তারেক ৫ আগস্টের আগে কী করতেন। জবাবে তিনি বলেন,'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স ও মাস্টার্স করেছি। থিসিস করা হয়। ৫ আগস্টের পর আর ক্যাম্পাসে যাইনি। আত্মীয়-স্বজনের বাসায় ঘুরেফিরে থাকি। থিসিসটা শেষ হলে হয়তো কিছু করে খেতে পারতাম।'
শুনানি শেষে তারেককে আদালত থেকে একজন পুলিশ সদস্য কারাগারের উদ্দেশে নিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় আদালত চত্ত্বরেই সাংবাদিকদের দেখে 'জয় বাংলা' বলে স্লোগান দেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে ওই পুলিশ সদস্য তার মুখ চেপে ধরেন। তিনি তারেককে ধমক দিয়ে বলেন, 'কোনো কথা বলা যাবে না'। এরপর তাকে আবারও এজলাসে আসামির কাঠগড়ায় নিয়ে যাওয়া হয়।
পরবর্তীতে কঠোর নিরাপত্তায় তারেককে হেলমেট, বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট এবং হাতকড়া পড়িয়ে কারাগারে নেওয়া হয়। এ সময় তিনি আবারও 'জয় বাংলা' বলে স্লোগান দেন। তখনও পুলিশ তার মুখ চেপে ধরে।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ৭ ডিসেম্বর বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে অভিযান চালায় ডিবি। একপর্যায়ে কার্যালয়ে ভাঙচুর ও আশপাশে থাকা নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এতে মকবুল হোসেন নামে এক কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এ ঘটনায় গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর মাহফুজুর রহমান বাদী হয়ে শেখ হাসিনাসহ ২৫৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।