ঢাকায় জাতীয় সমাবেশে যোগ দিতে জামায়াতকে রাজশাহী, সিরাজগঞ্জ, চট্টগ্রাম থেকে স্পেশাল ট্রেন বরাদ্দ রেলওয়ের

শনিবার (১৯ জুলাই) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জাতীয় সমাবেশে যোগদানের জন্য রাজশাহী, সিরাজগঞ্জ দুটি স্পেশাল ট্রেন বরাদ্দ করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক ফরিদ আহমেদ। তিনি বলেন, 'ভাড়া, সার্ভিস চার্জ ও অন্যান্য পাওনা পরিশোধের সাপেক্ষে বিধি মোতাবেক ট্রেন দুটি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ট্রেন দুটির সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় যাতায়াতেও কোনো অসুবিধা হবে না।'
এছাড়া চট্টগ্রাম থেকেও একটি স্পেশাল ট্রেন ভাড়া করেছে জামায়াতে ইসলামী।
রাজশাহী-ঢাকা-রাজশাহী রুটে ট্রেন বরাদ্দের জন্য জামায়াতের রাজশাহী মহানগরীর অফিস সেক্রেটারি কর্তৃক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রাজশাহী থেকে চলাচলকারী এ স্পেশাল ট্রেন বরাদ্দ করা হয়েছে। শুক্রবার দিবাগত রাত, অর্থাৎ শনিবার রাত ১টায় স্পেশাল ট্রেনটি রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছাড়বে এবং সমাবেশ শেষ করার পর রাত ৮টা ১৫ মিনিটে ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে রাজশাহীর উদ্দেশে ছেড়ে আসবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে রাজশাহীর জেনারেল ম্যানেজারের (পশ্চিম) পক্ষে সহকারী চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট (পশ্চিম) মো. আব্দুল আওয়াল ১৬ জুলাই এ চিঠি ইস্যু করেছেন।
চিঠিতে বলা হয়েছে, রাজশাহী-ঢাকা-রাজশাহী রুটে চলাচলকারী ৭৫৫/৭৫৬ নং মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেনের সাপ্তাহিক বন্ধের দিন (শনিবার) স্পেশাল ট্রেনটি পরিচালিত হবে। এ ট্রেনে ১৪টি বগি থাকবে এবং মোট আসন সংখ্যা ১ হাজার ১৭৯ টি। এর মধ্যে ২৪টি এসি বার্থ ও বাকিগুলো শোভন চেয়ার। মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেন পদ্মা সেতু হয়ে চলাচল করলেও ওই দিন যমুনা সেতু হয়ে চলাচল করবে।
বর্ণিত ট্রেনটি উভয়পথে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, হরিয়ান ও সরদহরোড স্টেশনে যাত্রাবিরতি থাকবে।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, উপর্যুক্ত তথ্যাদির আলোকে স্পেশাল ট্রেন পরিচালনা এবং প্রচলিত নিয়ম অনুসারে বর্ণিত ট্রেনগুলোর অগ্রিম ভাড়া, সার্ভিস চার্জ ও অন্যান্য সব পাওনা পরিশোধ সাপেক্ষে বিধি মোতাবেক পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রাজশাহী মহানগরীর সহকারী সেক্রেটারী মো. শাহাদাৎ হোসাইন বলেন, 'আগামীকালের (শনিবার) মহাসমাবেশ সফল করার জন্য আমরা ইতিমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। রাজশাহী মহানগরী থেকে ৭০টি বাস ও একটি ট্রেন রিজার্ভ করা হয়েছে। মহানগরীতে থেকে কমপক্ষে ২৫ থেকে ৩০ হাজার নেতাকর্মী সমাবেশে যোগদান করবেন। আমাদের রিজার্ভ ট্রেন সাড়ে ১২টায় রাজশাহী থেকে ছাড়বে। এছাড়া আজকে বিকেল থেকে যত ট্রেন যাবে, সবগুলো ট্রেনের যাত্রীই আমাদের নেতাকর্মীরা।'
এছাড়া ওই দিন সিরাজগঞ্জ বাজার-ঢাকা-সিরাজগঞ্জ রুটেও একটি স্পেশাল ট্রেন চলাচলের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। গত ১৭ জুলাই বাংলাদেশ রেলওয়ে রাজশাহীর জেনারেল ম্যানেজারের (পশ্চিম) পক্ষ থেকে ডেপুটি চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট-১ মোসা. আরফিন নাহার বরাদ্দের চিঠিটি ইস্যু করেছেন।
এ চিঠিতেও বলা হয়, এক জোড়া স্পেশাল ট্রেন প্রচলিত নিয়ম অনুসারে অগ্রিম ভাড়া, সার্ভিস চার্জ ও অন্যান্য পাওনা পরিশোধ সাপেক্ষে পরিচালনা করা যেতে পারে।
ফরিদ আহমেদ বলেন, ট্রেনের ভাড়া বগি ও আসন সংখ্যার ওপর নির্ভর করে নির্ধারিত হয়। রাজশাহী থেকে যে ট্রেন ছাড়বে তার বগি ১৫টি। এজন্য রাজশাহী থেকে যাওয়া আসা ট্রেনের ভাড়া ১২ লাখ টাকা। আর সিরাজগঞ্জ থেকে যে ট্রেন ছাড়বে তার বগি ৭টি, ভাড়া ৪ লাখ টাকা।
তিনি আরও বলেন, রাজশাহী থেকে মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেন ছাড়বে। তার ভাড়া ইতোমধ্যে পরিশোধ করা হয়েছে। আর সিরাজগঞ্জ বাজার থেকে যে ট্রেন ছাড়বে, সেটার ভাড়া এখনো পরিশোধ করা হয়নি। আজ পরিশোধ করার কথা রয়েছে।
চট্টগ্রাম থেকেও স্পেশাল ট্রেন
এদিকে চট্টগ্রাম থেকেও একটি স্পেশাল ট্রেন ভাড়া করেছে জামায়াতে ইসলামী। ট্রেনটি আজ শুক্রবার রাত ১০টায় চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। পরদিন শনিবার বিকেল ৪টায় ঢাকার কমলাপুর স্টেশন থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে।
ট্রেনটিতে মোট আসন ১ হাজার ৭২টি। এর মধ্যে কয়েকটি এসি বগিও রয়েছে।
রেলওয়ের বাণিজ্যিক বিভাগ জানিয়েছে, স্পেশাল ট্রেন হওয়ায় স্বাভাবিক ভাড়ার চেয়ে ১০ শতাংশ এবং এসি বগির ক্ষেত্রে ২০-৩০ শতাংশ বাড়তি ভাড়া আদায় করা হয়েছে। সবমিলিয়ে চট্টগ্রামের ট্রেন থেকে রেলওয়ের আয় হবে ১২ লাখ ৫২ হাজার টাকা।
এছাড়াও ঢাকা থেকে ফেরার জন্য সুবর্ণা এক্সপ্রেস ও মহানগর এক্সপ্রেসের ৮টি শোভন কোচে ২৪০টি টিকেট বুকিং দিয়েছে দলটি।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (ডিসিও) তৌষিয়া আহমেদ জানান, 'আবেদন পাওয়ার পর নিয়ম মেনেই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে সব বুকিং চূড়ান্ত।'
জামায়াত সূত্র বলছে, স্পেশাল ট্রেন ছাড়াও চট্টগ্রামের কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী, চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা থেকেও ভাড়ায় চালিত অসংখ্য বাসে নেতা-কর্মী ঢাকায় যাবেন।