১৭ বছরে এসএসসিতে সর্বনিম্ন পাসের হার, ফেল করেছে প্রায় ৬ লাখ শিক্ষার্থী

গত ১৭ বছরের মধ্যে এবারই মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষায় সবচেয়ে কম শিক্ষার্থী পাস করেছে। ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার দাঁড়িয়েছে ৬৮ দশমিক ৪৫ শতাংশে। এবার ফেল করেছে প্রায় ৬ লাখ ৬৬০ জন শিক্ষার্থী।
আজ বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুর ২টায় ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সভাকক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. খন্দোকার এহসানুল কবির।
ফল ঘোষণার সময় অধ্যাপক ড. এহসানুল কবির বলেন, এ বছর মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট ও সমমান পরীক্ষায় শিক্ষার্থীরা যে নম্বর প্রাপ্য, তাই পেয়েছে।
তিনি বলেন, ওভারমার্কিং বা আন্ডারমার্কিং ক্ষতিকর। এ বছর যেসব শিক্ষক খাতা কেটেছেন, তাদের এমন (ওভারমার্কিং বা আন্ডারমার্কিং করার) কোনো নির্দেশ দেওয়া হয়নি। এ বছর ওপর মহল থেকে আমাদের ওপর বিশেষ কোনো নির্দেশনা ছিল না। আমরাও শিক্ষকদের সে নির্দেশনা দিয়েছি। আমরা বলেছি, আপনারা শিক্ষক। আপনারা জানেন, কোন উত্তরটি পূর্ণ নম্বর পাবে আর কোনটি শূন্য পাবে। যা প্রাপ্য তা দেবেন। যা প্রাপ্য নয়, তা দেবেন না।
'আমাদের এবারের পরিসংখ্যানে কোনো কৃত্রিমতা বা কঠোরতা নেই। তাছাড়া ওভারমার্কিং বা আন্ডারমার্কিং অন্যায্য। এতে বৈষম্য হয়। যার পাওয়ার কথা নয় এবং যার পাওয়ার কথা, দুজনই এক হয়ে যায়। অনিয়মের কারণে দৃশ্যত ভালো-মন্দ এক হয়ে যায়। তবে বাস্তবে পার্থক্য থেকে যায়। পরে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ভর্তি পরীক্ষায় এটা প্রভাব দেখতে পাই।'
ফলাফল পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০০৭ সালে এসএসসিতে পাসের হার ছিল ৫৮.৩৬ শতাংশ। তবে এরপরের বছর থেকেই পাসের হার বাড়তে থাকে। ২০০৮ সালে পাসের হার দাঁড়ায় ৭২.১৮ শতাংশ, ২০০৯ সালে ৭০.৮৯ শতাংশ। ২০১০ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত এই হার আরও বাড়ে—৭৯.৯৮, ৮২.৩১ ও ৮৯ শতাংশ।
২০১৪ সালে সর্বোচ্চ পাসের হার রেকর্ড হয়—৯১ দশমিক ৩৪ শতাংশ। তবে ২০১৫ সাল থেকে আবার পাসের হার কমতে শুরু করে। সেবছর ৮৭.০৪ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছিল। ২০১৬ সালে ছিল ৮৮.২৯ শতাংশ, ২০১৭ সালে ৮০.৩৫, ২০১৮ সালে ৭৭.৭৭ শতাংশ।
২০১৯ ও ২০২০ সালে পাসের হার কিছুটা স্থিতিশীল ছিল—৮২.২০ ও ৮২.৮৭ শতাংশ।
২০২১ সালে করোনা মহামারির প্রভাবে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা নেওয়া হয়। সে বছর পাসের হার রেকর্ড হয় ৯৩.৫৮ শতাংশ।
২০২২ সালে ছিল ৮৭.৪৪ শতাংশ এবং ২০২৩ সালে ৮০.৩৯ শতাংশ।
২০২৪ সালে আবার পূর্ণ নম্বর ও পূর্ণ সিলেবাসে পরীক্ষা নেওয়া হয়। সে বছর গড় পাসের হার ছিল ৮৩.০৪ শতাংশ। কিন্তু ২০২৫ সালে এসে পাসের হার কমে দাঁড়ায় ৬৮ দশমিক ৪৫ শতাংশে—যা গত ১৮ বছরের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন।