ধর্মীয় ভাবগম্ভীর পরিবেশে সারা দেশে পালিত হচ্ছে আশুরা

আজ রবিবার, ইসলামি বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী মুহাররম মাসের ১০ তারিখ। এই দিনে যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগম্ভীর পরিবেশে সারা দেশে পালিত হচ্ছে মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় অনুষ্ঠান আশুরা।
হিজরি ৬১ অব্দে সংঘটিত কারবালার হৃদয়বিদারক ঘটনার স্মরণে এই দিনটি পালিত হয়। এদিন মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রিয় দৌহিত্র হযরত ইমাম হুসাইন (রা.) পরিবার-পরিজন ও ৭২ সঙ্গীসহ ইয়াজিদের সৈন্যদের হাতে কারবালার প্রান্তরে শাহাদাত বরণ করেন; প্রিয় নবীর (সা.) শিক্ষা ও আদর্শ রক্ষায় তাদের এ আত্মত্যাগ স্মরণীয় হয়ে আছে।
এই উপলক্ষে আজ (৬ জুলাই) দেশে সরকারি ছুটি।
এদিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকায় হোসেনি দালান থেকে তাজিয়া মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি বকশীবাজার লেন, লালবাগ মোড়, শহিদ মিনার সড়ক, এতিমখানা মোড়, আজিমপুর মোড়, নীলক্ষেত মোড়, মিরপুর রোড, ঢাকা কলেজ, সায়েন্স ল্যাবরেটরি, ধানমণ্ডি আবাসিক এলাকা, বিজিবি গেট-৪ হয়ে ধানমণ্ডি লেক কারবালায় গিয়ে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
দুপুর ১টা পর্যন্ত পাওয়া সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, বিপুল সংখ্যক মানুষ এই মিছিলে অংশ নিয়েছেন। মিছিলটি রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অতিক্রম করার সময় যোগ দেন তারা।
এর আগে, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে আশুরা পালনের লক্ষ্যে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বলে জানান ডিএমপির ভারপ্রাপ্ত কমিশনার ও অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মো. সারোয়ার।
তিনি জানান, ২৭ জুন থেকে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে শিয়া সম্প্রদায়সহ অন্যান্য ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের অংশগ্রহণে আয়োজিত শোকানুষ্ঠানে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এ ছাড়া, হোসেনি দালান, বড় কাটারা, মোহাম্মদপুর বিহারী ক্যাম্প, শিয়া মসজিদ, বিবিকা রওজা, মিরপুর পল্লবী বিহারী ক্যাম্পসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
পাশাপাশি দেশের প্রধান ইমামবাড়াগুলোকে সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে এবং যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় ডিএমপির বিশেষায়িত ইউনিট মোতায়েন করা হয়েছে।
এর আগে, শনিবার (৫ জুলাই) পবিত্র আশুরা উপলক্ষে বার্তা দেন প্রধান উপদেষ্টা ড.মুহাম্মদ ইউনূস।
ওই বার্তায় সমাজে সমতা, ন্যায়বিচার ও শান্তি প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং মুসলিম উম্মাহর ঐক্য, সংহতি ও নিরবিচার অগ্রগতির জন্য শুভকামনা জানান প্রধান উপদেষ্টা।
ওই বার্তায় অধ্যাপক ইউনূস বলেন, 'ইসলামের সাহসী সৈনিকদের এই ত্যাগ, যারা জুলুম ও অবিচারের বিপরীতে দাঁড়িয়ে অন্যায়ের মোকাবিলা করেছিলেন, তা বিশ্বের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।'
পবিত্র আশুরার শোকাবহ এই দিনে ইসলামের সর্বশ্রেষ্ঠ নবী ও রাসুল হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রাণপ্রিয় দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসেন (রা.)–সহ কারবালার প্রান্তরে মর্মান্তিকভাবে শাহাদাত বরণকারী সবার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন অধ্যাপক ইউনূস।