নিউ মার্কেট এলাকায় প্রকাশ্যে যুবককে কুপিয়ে জখম করল দুর্বৃত্তরা

ঢাকার নিউ মার্কেট এলাকায় এক যুবককে প্রকাশ্যে কুপিয়ে জখম করেছে দুর্বৃত্তরা। রোববার (১৮ মে) রাত সাড়ে ১১টার দিকে সেন্ট্রাল রোড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। হামলার একটি ভিডিও পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
আহতের নাম সাইফ হোসেন মুন্না। নিউ মার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম মাহফুজুল হক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানান, মুন্না বর্তমানে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) চিকিৎসাধীন। হামলায় তিনি দুই হাত ও মেরুদণ্ডে গুরুতরভাবে আঘাত পেয়েছেন।
তিনি বলেন, 'ঘটনার পরপরই পুলিশের একটি টহল দল ঘটনাস্থলে যায়। আমরা ভুক্তভোগীর পক্ষকে অভিযোগ দিতে বলেছি।'
ভিডিওতে দেখা যায়, তিন রাস্তার মোড়ে দুই যুবক দাঁড়িয়ে ছিলেন। হঠাৎ একজন অন্যজনকে মারধর শুরু করেন। এর কিছুক্ষণ পর দুটি মোটরসাইকেলে করে তিন যুবক এসে ঘটনাস্থলে যোগ দেন। মোটরসাইকেল থেকে নেমে দুইজন যুবক ওই ব্যক্তিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন।
এ সময় পাশ দিয়ে পথচারী ও যানবাহন চলাচল করলেও কেউ এগিয়ে আসেনি। পরে হামলাকারীরা চলে গেলে স্থানীয় লোকজন ও পথচারীরা আহত ব্যক্তিকে উদ্ধার করে।
স্থানীয়রা জানান, মুন্না সেন্ট্রাল রোড এলাকার বাসিন্দা এবং বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তিনি ১৬ নং ওয়ার্ড বিএনপি-র সাধারণ সম্পাদক মঈনুদ্দীন মইনুর ঘনিষ্ঠ।
যোগাযোগ করা হলে মঈনুদ্দীন মইনু টিবিএসকে বলেন, 'কলাবাগান থানার ওসি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন এবং মুন্না হামলাকারীদের শনাক্ত করেছেন। তাই আমরা কলাবাগান থানায় মামলা করব। মুন্নার শারীরিক অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল হলে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করব।'
তিনি জানান, হামলাকারীদের মধ্যে দুজনকে তারা শনাক্ত করেছেন—একজনের নাম এমসি শুভ, অন্যজন রানা।
মইনুর অভিযোগ, শুভ ও যুবদলের সাবেক নেতা শাহ আলম সৈকতকে বিভিন্ন পার্টি প্রোগ্রামে একসঙ্গে দেখা গেছে।
তিনি আরো বলেন, 'এক মাস আগে পুলিশ অস্ত্রসহ শুভকে গ্রেপ্তার করলেও যুবদলের একটি পক্ষ থানায় গিয়ে তাকে ছাড়িয়ে আনে। অথচ মুন্না একজন পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির মানুষ। তার বাবা-মা কেউ বেঁচে নেই। তিনি তার দুই বোনের সঙ্গে নিজেদের বাড়িতে থাকেন। এই হামলার পেছনে শত্রুতাই মূল কারণ।'
যোগাযোগ করা হলে যুবদলের সাবেক সদস্য সচিব শাহ আলম সৈকত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, 'এই হামলার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।'
তিনি আরও বলেন, 'অনেকে পার্টির প্রোগ্রামে আসে, ছবি তোলে। কারও সঙ্গে এক ফ্রেমে ছবি তোলা মানেই সে আমার অনুসারী নয়।'
তিনি জানান, ঘটনাটি নিয়ে তিনি দলের শীর্ষ নেতাদের অবহিত করেছেন।
রমনা বিভাগের পুলিশ সূত্র জানায়, স্থানীয় চাঁদাবাজি ও প্রভাব বিস্তার নিয়ে মইনু ও সৈকতের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। ধারণা করা হচ্ছে, সেই বিরোধ থেকেই মুন্নার ওপর হামলা হয়েছে।