যুক্তরাষ্ট্রকে ন্যাটো ছাড়তে বললেন মাস্ক, ইউরোপের প্রতিরক্ষা খরচ দেওয়া বন্ধের দাবিও তুললেন

ন্যাটো থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে জোরালো অবস্থান নিয়েছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্মে তিনি লিখেছেন, 'ইউরোপের প্রতিরক্ষা ব্যয় আমেরিকার বহন করার কোনো যুক্তি নেই।'
রোববার ভোরে এক্স-এ পোস্ট করা একটি বার্তার প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্টের সিনিয়র উপদেষ্টা এ মন্তব্য করেন। ওই পোস্টে যুক্তরাষ্ট্রকে 'অবিলম্বে ন্যাটো ছাড়ার' আহ্বান জানানো হয়।
এক্সের ওই পোস্টের জবাবে টেসলার সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সিইও মাস্ক লেখেন, 'আমাদের সত্যিই তাই করা উচিত।'
এর আগে গত ৩ মার্চ এক্স- রক্ষণশীল বিশ্লেষক বলেন, যুক্তরাষ্ট্রকে শুধু ন্যাটো নয়, জাতিসংঘ থেকেও বেরিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। মাস্ক ওই প্রস্তাবের সঙ্গেও একমত প্রকাশ করেন।
মাস্কের এই মন্তব্য এমন এক সময় এল, যখন এপ্রিলে ৭৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করতে চলা ন্যাটোর ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
৬ মার্চ এনবিসি নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ডোনাল্ড ট্রাম্প তার উপদেষ্টাদের সঙ্গে ন্যাটোতে যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্টতা কীভাবে পুনর্গঠন করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি জোটটির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্টতা এমনভাবে পুনর্গঠন করতে চান, যাতে শুধু প্রতিরক্ষা খাতে জিডিপির নির্দিষ্ট অংশ ব্যয় করা সদস্যরাষ্ট্রগুলোই সুবিধা পায়।
সেদিনই ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, তিনি ন্যাটোর মিত্র দেশগুলোকে জানিয়ে দিয়েছেন—তারা যদি নিজেদের ভাগের অর্থ না দেয়, তাহলে তিনি তাদের রক্ষা করবেন না।
স্নায়ুযুদ্ধের পর প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় কমিয়ে দেওয়া ইউরোপীয় দেশগুলো ন্যাটোতে যোগাযোগ, গোয়েন্দা তথ্য, লজিস্টিকস থেকে শুরু করে কৌশলগত সামরিক নেতৃত্ব ও আগ্নেয়াস্ত্রের জন্য মূলত যুক্তরাষ্ট্রের ওপরই নির্ভরশীল।
এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা গত সপ্তাহে ব্রাসেলসে জরুরি সম্মেলনে মিলিত হন। সেখানে প্রতিরক্ষা খাতে ব্যাপক ব্যয় বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা হয়।
ইইউ কর্মকর্তারা ইউরোপীয় কমিশনের একটি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করেন, যাতে প্রতিরক্ষার জন্য সদস্যদেশগুলোকে সর্বোচ্চ ১৫০ বিলিয়ন ইউরো ঋণ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি চার বছরে দেশগুলোকে প্রতিরক্ষা খাতে মোট ৬৫০ বিলিয়ন ইউরো ব্যয় করার অনুমোদন দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
ইইউ ডিফেন্স কমিশনার আন্দ্রিয়াস কুবিলিয়াস শুক্রবার ব্লুমবার্গ টিভিকে বলেন, 'গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আমরা একধরনের অস্থির পরিস্থিতি লক্ষ করছি। শেষপর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের কৌশল কী হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।'
তবে ২০২৩ সালের একটি আইনের অনুসারে, কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট সিনেটের দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা বা কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়া ন্যাটো থেকে একতরফাভাবে বেরিয়ে যেতে পারবেন না।