Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Tuesday
June 17, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
TUESDAY, JUNE 17, 2025
তিব্বত স্নো থেকে প্রাইমার, কনসিলার- যেভাবে বদলে গেছে বউয়ের সাজসজ্জা

ফিচার

রাফিয়া মাহমুদ প্রাত
13 November, 2023, 02:45 pm
Last modified: 13 November, 2023, 05:29 pm

Related News

  • বিবাহের প্রলোভন সংক্রান্ত বিধান বাতিল প্রশ্নে হাইকোর্টের রুল
  • চাঁটগাইয়া বিয়ে মানেই কি মহা ধুমধামে আয়োজন? না আর কিছু!
  • বিয়ে করলেন অভিনেত্রী মেহজাবীন
  • বিবাহ কর বাতিল, ডকুমেন্ট সত্যায়ন এখন অনলাইনে
  • বিয়ের ওপর আরোপিত কর প্রত্যাহারের দাবি, ৭ দিনের আল্টিমেটাম

তিব্বত স্নো থেকে প্রাইমার, কনসিলার- যেভাবে বদলে গেছে বউয়ের সাজসজ্জা

বিয়েতে চুপচুপে করে তেল মাখার দিনগুলো শেষ হয়ে যেতে থাকে আশির দশকের দিকে। শুরু হয় পার্লারের যুগ। বেণির যুগ চলে গিয়ে শুরু হয় বড় খোঁপার যুগ। শর্মিলা ঠাকুর, ববিতা এরা ছিলেন আইকন। খোঁপায়ও প্রকারভেদ ছিল, রিং খোঁপা খুব চলত। বড় খোঁপায় একটা-দুটো ফুল লাগানো শুরু হলো। এরপর মৌসুমীর বিয়ের ছবি দেখে শুরু হলো দু’পাশ থেকে ঝুলিয়ে ফুল লাগানোর চল। বিংশ শতাব্দীতে এল চুল বেণি করে সামনে ঝুলিয়ে রাখা, চুলের কিছু অংশ কোঁকড়া করে ফুল ঝুলিয়ে দেওয়া।
রাফিয়া মাহমুদ প্রাত
13 November, 2023, 02:45 pm
Last modified: 13 November, 2023, 05:29 pm

নয় বছর বয়সে বিয়ে হয়েছিল আমেনা খাতুনের (১০১)। পরনে ছিল তার এক প্যাচে সোনালী জরির লাল শাড়ি। ব্লাউজহীন হাতে ছিল সোনার দুটি বাজু। ব্রিটিশ আমলের কথা বলছি। যখন আমেনার মতো লাল জরির কাতান সিল্ক শাড়ি আর গা ভর্তি সোনার গয়না পরে বিয়ের পিঁড়িতে বসতো বালিকাবধূরা। কপালে তাদের এঁকে দেওয়া হতো চন্দন বা কুমকুম। কপাল থেকে শুরু করে গালেরও কিছু অংশ জুড়ে থাকত সে আলপনা। যদিও হিন্দুদের মধ্যে এটি শুরু থেকেই ছিল। তবে বাঙ্গালী মুসলমানদের মধ্যে এর প্রচলন এসেছে আরও পরে। আলপনা ছাড়াও তখনকার বউদের সাজসজ্জার তালিকায় থাকতো- চুলের জন্য একটি সুগন্ধী তেল, রঙ্গিন ফিতা, আলতা ও চুড়ি। এটুকুতেই হতো বউয়ের সাজের ষোলকলা পূর্ণ।

আলপনা করে নিয়ে আসতো ট্রাঙ্কটাও

সময়-সংস্কৃতি বদলেছে, বউয়ের সাজে এসেছে পরিবর্তন। আচার-অনুষ্ঠানেও তা-ই। এখন যেমন ডালায় করে আসে বউয়ের পোশাকআশাক ও সাজগোজ, তখন ট্রাংকে করে আসতো। সে ট্রাংকটিও থাকত আলপনায় সাজানো। বউয়ের তত্ত্ব যাবে বলে, ঘরের মেয়েরা বিভিন্ন রঙ আর আঙ্গুলের ছোঁয়ায় সাজিয়ে দিত ট্রাঙ্কটি।

এই ট্রাঙ্ক ঘিরে থাকত আবার আরেক উত্তেজনা। ভেতরে কী আছে তা দেখার জন্য আশেপাশে ছোটো থেকে শুরু করে খালা, ভাবি, বোন, ফুপু, মামিরাও উঁকিঝুকি মারতো। বয়স্ক নারীরা আসতেন সবকিছু নিয়ম অনুযায়ী পাঠানো হয়েছে কি-না তা তদারকি করতে। বরপক্ষ থেকে আসা এসব জিনিস বাড়ির বড়রা অনেক সময় ভাগাভাগি করে ব্যবহারও করতেন। তবে বাদ যেতেন অবিবাহিতরা। পাছে তাদের আর বিয়ে না হয়!

আলপনা করে নিয়ে আসতো ট্রাংকটাও, ছবি সংগৃহীত

সুগন্ধী তেল না দিলে বিয়ে হবে না!

ব্রিটিশ আমল থেকে প্রায় সত্তরের দশক পর্যন্ত সুগন্ধী তেল ছিল বউয়ের সাজের অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ। শুধু তেল না, সুগন্ধী তেল হতে হবে। যেহেতু তখন পারফিউম বা বডিস্প্রের এত ব্যবহার ছিল না, তাই সুগন্ধী তেল দিয়েই চলতো সে কাজ। বিশেষ করে হিমকবরী বা গন্ধরাজ তেল ছিল পছন্দের শীর্ষে। হিমকবরী বা গন্ধরাজ তেল যদি ছেলেপক্ষ না আনতো, তবে বিয়েই হবেনা-এমন রবও নাকি ছিল!

চুল বাঁধার জন্য ব্যবহার হতো লাল, হলুদ, সবুজের মতো উজ্জ্বল রঙ্গিন সাটিনের ফিতা। তেল দিয়ে মাথা টেনে দুই বেণি করে পেছন থেকে ঘুরিয়ে চুল বাঁধা হত তখন। এই তেল লেগে নাকি নষ্টও হয়েছে অনেকের বিয়ের শাড়ি। ফলে বিয়ের দিনই সে শাড়ি শেষ!

তবে বিয়েতে চুপচুপে করে তেল মাখার দিনগুলো শেষ হয়ে যেতে থাকে আশির দশকের দিকে। শুরু হয় তখন পার্লারের যুগ। বেণির যুগ চলে গিয়ে শুরু হয় বড় খোঁপার যুগ। শর্মিলা ঠাকুর, ববিতা এরা ছিলেন আইকন। খোঁপায়ও প্রকারভেদ ছিল, রিং খোঁপা খুব চলত। বড় খোঁপায় একটা-দুটো ফুল লাগানো শুরু হলো। এরপর মৌসুমীর বিয়ের ছবি দেখে শুরু হলো দু'পাশ থেকে ঝুলিয়ে ফুল লাগানোর চল। বিংশ শতাব্দীতে এল চুল বেণি করে সামনে ঝুলিয়ে রাখা, চুলের কিছু অংশ কোঁকড়া করে ফুল ঝুলিয়ে দেওয়া। মাঝে কৃত্রিম বা আর্টিফিশিয়াল ফুল চলত ২০১০-২০১০ সালের সময়টায়।

১৯৭৯ সালে বউ সাজে ফেরদৌসী চৌধুরী। ছবি: জেনিফার চৌধুরী

২০২০-এর পর থেকে এলো স্পাইরাল হেয়ার স্টাইল। সেই সাথে আর্টিফিশিয়াল ফুলের জায়গা আবার নিয়ে নিল কাঁচা ফুল। পুরো খোঁপা কাঁচা ফুল দিয়ে ঢেকে দিতে দেখা যায় এখন। এছাড়া চুলখোলা, হাল্কা বেণি, খোঁপা নানারকম হেয়ারস্টাইল এখন দেখা যায়। তবে আগের চেয়ে চুলের সাজে এসেছে স্বস্তি। আগের চুলে স্প্রে বা চুল পাফ করে চুল বাঁধার ফলে, চুলে যেত জট বেঁধে যা সহজে ছাড়তো না। অনেক চুলও পড়তো। কিন্তু এখন চুলের ওপর যেন বেশি চাপ না পড়ে সেদিকে জোর দেওয়া হয়। কখনো আবার বাড়তি চুল লাগানো হয়, যা 'হেয়ার এক্সটেনশন' নামে পরিচিত।

কবরী-সুচিত্রার মতো টানা টানা চোখ, রোজিনা-শবনমের মতো তিল, ববিতার মতো চুলের বড় খোঁপা

দুই দশক আগেও ঘরেই সাজানো হতো বিয়ের বউদের। সুনিপুণ ভাবি বা বোনের হাতে দেওয়া হতো এই দায়িত্ব। সত্তর দশক পর্যন্ত স্নো, পাউডার, কাজল, লিপস্টিক, কপালে-গালে চন্দন এই দিয়েই সাজানো হতো বউকে। বর আসার পর শুরু হতো বউকে সাজানোর পালা। হাতের মেহেদি হোক বা কনের চুল, ভ্রুটা খানিক আকর্ষণীয় করাই হোক বা গালে হালকা গোলাপি আভা ফুটিয়ে তোলা, পুরোটাই নিপুণ হাতে করতেন সেই আপা কিংবা ভাবি। সঙ্গে থাকত সজ্জা বিষয়ে নিপুণ হয়ে উঠতে আগ্রহী তরুণীরা। ঘরেই সাজা হতো বলে সাজতেও বেশি সময় লাগতো না। আধঘণ্টায় বউয়ের সাজ শেষ।

সেসময়টায় ছিল কাজল বা সুরমার যুগ। ঘরে বানানো এসব কাজল মোটা করে চোখের নিচে লেপ্টে দিলেই বউয়ের চোখ বড় বড় দেখাত। সত্তর দশক পর্যন্ত ঘরে বানানো কাজলই ব্যবহৃত হতো। আশির দশকে এলো আইলাইনার, মাশকারা প্রভৃতি। ভারতীয় হোক বা ঢাকাই চলচ্চিত্র, নায়িকাদের দেখে নিজেকে সাজিয়ে তোলার ইচ্ছে বেশিরভাগ রমনীরই ছিল সবসময়। যেমন, চোখের সাজের জন্য কবরী, সূচিত্রার মতো টানা টানা চোখ, আবার রোজিনা, শবনমের মতো তিল, ববিতার মতো চুলের বড় খোঁপা, শাবানা ব্লাউজ কাট ইত্যাদি।

শাড়ির সাথে মিলিয়ে হাতে গ্লিটার পরা হতো তখন; ছবি সংগৃহীত

আনোয়ারা সেতু ছোটো থেকেই সাজসজ্জায় পারদর্শী। বুঝ হবার পর থেকেই সাজগোজের প্রতি তার অনেক ঝোঁক। পরিচিত কারও বিয়ে হলে বউ সাজানোর দায়িত্ব আসত তার ওপর। ১৯৯৪ সালে বিয়ের পর তা থেমে যায়। কিন্তু এখন মেয়ের সাথে নিজেদের পার্লারে শখের কাজটি শুরু করেছেন আবার। ফলে সাজগোজ বিশেষ করে বাঙ্গালী বউদের সাজসজ্জা নিয়ে তার রয়েছে বিস্তর অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান। তিনি বলেন, 'ভারতীয় নায়িকাদের অনুসরণ সবসময়ই আমাদের মধ্যে ছিল। এখন তো পাকিস্তানি সাজপোশাকও ফলো করছি আমরা।'

ফুলের মতো মেকআপ বক্সের কথা মনে আছে?

যাতে লিপস্টিক, ফেস পাউডার, ব্লাশার, আইশ্যাডো সবকিছু একসাথে ভাগ ভাগ করে থাকতো। বোতামে চাপ দিলে, কখনো ফুলের মতো, কখনো ইংরেজি হার্ট শেপে খুলে যেত গোটা মেকআপ বক্সটি। নব্বই দশক থেকে দু'হাজার দশক পর্যন্ত সম্ভবত এর চল ছিল। কোন কোম্পানির বা কোন ব্র্যান্ডের মেকআপ বক্স দেওয়া হচ্ছে তা মুখ্য ছিল না। অথচ এখন প্রতিটি আইটেম থাকে আলাদা এবং আর সাথে ব্র্যান্ডনেম অনুসরণ করা হয়।

একসময় মুখের মেকআপ বলতে ছিল তিব্বত স্নো, পাউডার; ছবি- সংগৃহীত

এখন যেমন ব্লাশন ব্যবহার করা হয়, আগে গালদুটোতে গোলাপী আভা আনার জন্য ব্যবহৃত হতো 'রুজ'। সে রুজ ছিল এক রঙের একটিই ছোটো বক্স। গায়ের রঙ যেমনই হোক, সবাই একই রঙ দিত। লিপস্টিকও তখন এত মিলিয়ে পরা হতোনা। হাতেগোনা কয়েকটি রঙই চলতো। তবে টকটকে বা উজ্জ্বল রঙ ছিল পছন্দ। মেরুন, লাল, খয়েরী, গোলাপী। বেশিরভাগ ছিল লাল। কেউ বিদেশে গেলে বা বিদেশ থেকে আত্মীয় এলে খয়েরি, মেরুন রঙের লিপস্টিক এনে দিত। এখন ঠোঁট আঁকা হয় বউয়ের অন্যান্য সাজের ওপর নির্ভর করে। বিশেষ করে, চোখ। চোখ জমকালো হলে ঠোঁট হবে হাল্কা বা ন্যুড সাজের। আর চোখের সাজ হাল্কা হলে ঠোঁট হবে গাঢ়।

শাড়ির সাথে মিল রেখে গ্লিটার

তখন মেহেদীরও এত চল ছিল না। হলুদের দিন মেহেদী ছোঁয়া হত একটু। এর বদলে আলতা পরত। আলতা না আনলে বরপক্ষের ওপর রাগ করতো কনেপক্ষ। আলতাকে মনে করা হতো নারীর উর্বরতা, মঙ্গলকর, দাম্পত্য সুখের প্রতীক। পায়ে আলতা দিত, বিয়ের আগের দিন মেহেদী দিত। এখন আমরা মেহেদীর জন্য আলাদা আর্টিস্ট ডেকে নিই। তখন তো এত নকশা ছিল না। গোল গোল করে মেহেদি দিত হাতে আর পায়ে দিত আলতা। যার মেহেদীর রঙ যত গাঢ়, তার স্বামী তাকে ততো ভালোবাসবে বলে মজা করতেন নানি-দাদিরা।

মুখের পাশাপাশি হাতেও আলপনা আঁকা হতো। তা কুমকুম দিয়ে হোক, বা গ্লিটার দিয়ে হোক বা অন্যকিছু। আনোয়ারা সেতুর বিয়ে হয় ১৯৯৪ সালে। তিনি বলেন, কাবিনের সময় তার হাতেও আঁকা হয়েছিল আলপনা। লাল নেইলপলিশ দিয়ে হাতের ওপর গোল গোল করে নকশা করা হয়েছিল।

কুমকুমটা এসেছিল ১৯৬০-৬৫ সালের দিকে ভারতীয় ছবি ছায়াছবি থেকে। বোম্বে, কলকাতার ছবিগুলোই অনুসরণ করতো তখন মানুষ সাজের জন্য। যেমনটা এখন আমরা পাকিস্তানি সাজ অনুসরণ করি। এরপর এলো গ্লিটার দিয়ে নকশা করা। কপালে, হাতে দুই জায়গাতেই নানা রঙের বা শাড়ির সাথে মিল করে দেওয়া হতো গ্লিটার। ২০০০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত গ্লিটারের চল দেখা যেত ভালোই।

ছবিতে আনোয়ারা সেতু, হাতে তার নেইলপালিশ দিয়ে আলপনা। কপালে কুমকুম আঁকা। ১৯৯৪ সালের ছবি

পার্লারের শুরু

যদিও ঢাকায় পার্লারের প্রতিষ্ঠা আরও আগেই। তবু পার্লারে যাওয়ার রেওয়াজ সত্তরের দশকেও শুরু হয়নি। কেবল অভিনেত্রী এবং অভিজাত পরিবারের নারীরাই সৌন্দর্যচর্চাকেন্দ্রের সেবা গ্রহণ করতেন তখন। সাধারণ পরিবারের মেয়েদের ঘরের বাইরে গিয়ে বউ সাজার চর্চাটুকু রপ্ত করতে সময় লেগেছে।

ঢাকায় প্রথম বিউটি পারলার চালু করেন চীনা নাগরিক কার্মেল চ্যাং লিউ শেই। যা ১৯৬৫ সালে মে ফেয়ার নামে চালু হয়। কাছাকাছি সময়ে হংকং বিউটি পার্লারও ছিল ঢাকায়। আরও পরে লি বিউটি পারলার চালু হয়। মূলত এ দেশে আসা চীনারাই এই পারলারগুলো পরিচালনা করতেন। স্বাধীনতার পর প্রথম বাঙালি হিসেবে জেরিনা আজগর খোলেন লিভিং ডল বিউটি পারলার। সেটা সত্তরের দশকের কথা।

'৮০ সালের দিকে ধীরে ধীরে মেয়েরা পার্লারমুখী হওয়া শুরু করলো। ধানমন্ডিতে মে ফেয়ার, ইস্কাটনে রাজিয়া বিউটি পার্লার, গুলশানের হংকং বিউটি পার্লার। ধানমন্ডিতে দুটো পার্লার ছিল- রাজিয়া ও মে ফেয়ার। তখন ধানমন্ডি অভিজাতদের আবাসিক এলাকায় রূপ নিচ্ছে। এজন্য ধানমন্ডিতে বেশি ঝুঁকত। ঢাকার বাইরে প্রথম বিউটি পারলার চালু হয় চট্টগ্রামে, লুসি বিউটি পারলার।

প্রথম দিকে বিয়ের সাজ, চুল কাটা—এ রকম দু'তিনটি সেবাই মূলত দেওয়া হতো মেয়েদের পার্লারে।  পার্লারে রূপচর্চা শুরু হয় দুই হাজারের পর থেকে। তার আগে রূপচর্চা চলতো ঘরেই।

'গায়ের রং কালো হয়ে যাবে বলে হবু বউদের বাইরে যেতে বা রোদে যেতে দেওয়া হতোনা। ত্বকের উজ্জ্বলতা আনতে বউদের হলুদ দিয়ে গোসল করাতো। চন্দন কাঠের টুকরো ঘষে ঘষে গুঁড়ো করা হতো। সেগুলো পানিতে মিশিয়ে মাখা হতো মুখে। তবে তখন শুধু চুল আর মুখেরই রূপচর্চা হতো,'  বলেন আনোয়ারা।

বউ সাজাতেন বলে মোটামোটি নামডাক ছিল মায়ার। লালমাটিয়া মহিলা কলেজে পড়ার সময়ে ধানমন্ডির মে ফেয়ারে নিজে কিছুদিন কাজও করেছেন। মায়া ১৯৭১ সালের দিকে মা, খালাদের দেখতেন ঘরেই সাজতে। তিনি বলেন, 'রক্ষণশীল সমাজব্যবস্থায় মেয়েদের বাইরে যাওয়া ছিল সীমিত। সাজার জন্য বাইরে যাওয়ার কথা ভাবাও যেত না। আমার বিয়ে হয় ১৯৮৪ সালে, তখন পার্লারে যাওয়া শুরু করেছে মেয়েরা। ধনীরা পার্লারে গেলেও, অনেক মধ্যবিত্তরা বাড়িতেই সাজতো তখনও।

নব্বইয়ের দশকে এসে বিউটি পারলারের সংখ্যা বেড়ে যায় বাংলাদেশে। বেড়ে যায় সেবা নেওয়ার পরিমাণও। শুরু হয় নগর সংস্কৃতির নতুন ধারা। ঢাকায় জনপ্রিয় সৌন্দর্যসেবাকেন্দ্রগুলোর মধ্যে আছে পারসোনা, ফারজানা শাকিল'স মেকওভার স্যালন, ওমেন্স ওয়ার্ল্ড, রেড বিউটি পারলার অ্যান্ড স্যালন। তবে করোনা আসার দু'এক বছর আগ থেকেই বউদের সাজসজ্জায় এলো একটা বড়সড় পরিবর্তন। আগে যেখানে ভালো পার্লার মানেই ছিল উপরোক্ত কয়েকটি। এখন তার জায়গা দখলে নিয়েছে সিঙ্গেল আর্টিস্টরা। সে তালিকায় শীর্ষে আছে গালা মেকওভার অ্যান্ড স্যালন বাই নাভিন আহমেদ, জাহিদ খান ব্রাইডাল মেকওভার, এলিগ্যান্ট মেকওভার অ্যান্ড ফ্যাশন, স্যালন ৩১, স্প্লেন্ডর বাই আনিকা বুশরা, বেস্পোক মেকআপ আর্টিস্ট্রি প্রমুখ নাম।

শুধু বিয়ের সাজই নয়। বরং বিয়ের কয়েক মাস আগ থেকেই পায়ের নখ থেকে মাথার চুল পর্যন্ত নানা ম্যাসাজ, ফেসিয়াল-হেয়ার মাস্ক, অয়েল ট্রিটমেন্ট নিতে পার্লারমুখী হন রূপসচেতন মেয়েরা।

হাল আমলের বউ সাজ; ছবি-গ্ল্যাম আপ বাই ইসরাতের সৌজন্যে প্রাপ্ত

তিব্বত স্নো থেকে প্রাইমার-কনসিলার

একসময় মুখের মেকআপ বলতে ছিল তিব্বত স্নো, পাউডার। সেখান থেকে এলো প্যানকেক, প্যানস্টিকের যুগ। এখন এসেছে ফাউন্ডেশন, কনসিলার, প্রাইমারের যুগ। এখন শুধু ত্বকের জন্যই লেগে যায় পাঁচ-ছয়টি আইটেম-ময়েশ্চারাইজার, প্রাইমার, কনসিলার, ফাউন্ডেশন, ফেস পাউডার, ব্রোনজার, হাইলাইটার ইত্যাদি। চোখের সাজে কাজল, মাশকারা, আইলাইনারে এসেছে রঙ্গিন ছোঁয়া। আগে যেখানে শুধু কালো রঙের কাজল ব্যবহৃত হতো, এখন নিচের চোখেও নীল-বেগুনি-গোলাপি বা হলুদ রং ব্যবহার করা হচ্ছে। আইশ্যাডোও আর ধরাবাঁধা কয়েকটি রঙে না থেকে লাইল্যাক, লাইটার গোল্ডেন, প্যাস্টেল ব্লু, প্যাস্টেল গ্রিন ব্যবহার করা হচ্ছে এখন। একসময় যা ভাবা যেত না তাই হচ্ছে এখন!

আগে আইব্রো এত সময় নিয়ে, এতভাবে আঁকা হতো না। এখন প্রথমেই আইব্রো আঁকা হয়; যেটায় আগে সবার শেষে হাত দেওয়া হতো। ফলে সময় বেড়েছে। এখন বউয়ের গোটা মুখটাই যেন একটি ক্যানভাস। তাতে সময় নিয়ে, শিল্পীর সৃষ্টি দিয়ে মুখটুকু আঁকা। ফলে আগে যেখানে পার্লারেই দেড় ঘণ্টা লাগত, এখন লেগে যায় তিন-চার ঘণ্টা। এখন পার্লারগুলোতে ভিড়ও বেড়েছে। ফলে আগে থেকে অগ্রিম করে রাখতে হয়।

আগে বউ মানেই ফর্সা, জমকালো সাজ। এখনো জমকালো সাজ আছে। তবে আগে যেখানে বলা হতো, বোঝা না গেলে আবার মেকআপ হলো নাকি? এখন প্রোডাক্টই বানানো হচ্ছে এমন করে, যেন আলাদা করা না যায়। প্রাইমার, সেটিং স্প্রেও এমনভাবে বানানো হচ্ছে, যেন ত্বকে মিশে যায়। আগে আর্টিস্ট কীভাবে সাজাবেন সেটা নির্ভর করতো পুরোপুরি আর্টিস্টের ওপরেই। কিন্তু এখন একজন কাস্টমার এসেই জানিয়ে দিচ্ছে সে কীভাবে সাজতে চায়। তার পোশাক, আশাকের সাথে মিল রেখে, পছন্দের কথা মাথায় রেখেই এখন আর্টিস্টরা সাজিয়ে থাকেন। এমনকি কোন ব্র্যান্ডের বা কোন কোম্পানির আইটেম ব্যবহার হচ্ছে সেটিও জেনে নেন আগে থেকেই।

যার ফলে খরচও গুনতে হচ্ছে বেশি। নব্বইয়ের দশকেও যেখানে সর্বোচ্চ সাজার খরচ ধরা হতো পাঁচ হাজার করে, সেখানে এখন মাঝামাঝি একটি ব্রাইডাল মেকওভারের বাজারে খরচ দাঁড়িয়েছে বিশ থেকে ত্রিশ হাজারের মতো। ব্রাইডাল সাজের জন্য দশ হাজারের নিচে নামলে সাজও বেশিরভাগ সময় মনমতো হয়না। আর যদি কেউ শহরের শীর্ষে থাকা শিল্পীদের হাতেই সাজতে চান, তবে ক্ষেত্র বিশেষে তাকে গুনতে হতে পারে পঞ্চাশ থেকে ষাট হাজার টাকা। এ বিষয়ে আনোয়ারা সেতু বলেন, 'এখন বিয়ের বাজেটে আগে থেকেই এক থেকে দু'লাখ টাকা আলাদা করে রাখা হয় বিয়ের সব অনুষ্ঠানে শুধু সাজার জন্য। খরচের অঙ্কটা বেশি মনে হলেও, যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে একে বাদ দিয়ে যাওয়ার উপায় থাকে না আসলে।'

Related Topics

টপ নিউজ

বিয়ের সাজ / বউসাজ / বিয়ে

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • ইসরায়েলে উড়ে যাওয়া ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র প্রত্যক্ষ করলেন বিমানের পাইলট
  • যুদ্ধবিরতি নয়, তারচেয়ে ‘অনেক বড় কারণে’ জি-৭ সম্মেলন ছেড়ে এসেছি: ট্রাম্প
  • ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন বোমা ব্যবহারের ‘চিন্তা’ ট্রাম্পের; আগেভাগে ছাড়লেন জি৭ সম্মেলন
  • ইরানের নতুন ‘হাজ কাসেম’ ক্ষেপণাস্ত্রের ব্যবহার ইসরায়েলের জন্য হতে পারে হুমকির কারণ
  • নির্বাচনের আগে বিসিএস ২৮তম ব্যাচের কর্মকর্তাদের ডিসি পদে নিয়োগে পুনর্বিবেচনা করছে সরকার
  • ‘আমি চাই না আমার সুন্দর তেহরান গাজা হয়ে যাক’: ইসরায়েলি হামলায় আতঙ্কিত, বিহ্বল ইরানিরা

Related News

  • বিবাহের প্রলোভন সংক্রান্ত বিধান বাতিল প্রশ্নে হাইকোর্টের রুল
  • চাঁটগাইয়া বিয়ে মানেই কি মহা ধুমধামে আয়োজন? না আর কিছু!
  • বিয়ে করলেন অভিনেত্রী মেহজাবীন
  • বিবাহ কর বাতিল, ডকুমেন্ট সত্যায়ন এখন অনলাইনে
  • বিয়ের ওপর আরোপিত কর প্রত্যাহারের দাবি, ৭ দিনের আল্টিমেটাম

Most Read

1
আন্তর্জাতিক

ইসরায়েলে উড়ে যাওয়া ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র প্রত্যক্ষ করলেন বিমানের পাইলট

2
আন্তর্জাতিক

যুদ্ধবিরতি নয়, তারচেয়ে ‘অনেক বড় কারণে’ জি-৭ সম্মেলন ছেড়ে এসেছি: ট্রাম্প

3
আন্তর্জাতিক

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন বোমা ব্যবহারের ‘চিন্তা’ ট্রাম্পের; আগেভাগে ছাড়লেন জি৭ সম্মেলন

4
আন্তর্জাতিক

ইরানের নতুন ‘হাজ কাসেম’ ক্ষেপণাস্ত্রের ব্যবহার ইসরায়েলের জন্য হতে পারে হুমকির কারণ

5
বাংলাদেশ

নির্বাচনের আগে বিসিএস ২৮তম ব্যাচের কর্মকর্তাদের ডিসি পদে নিয়োগে পুনর্বিবেচনা করছে সরকার

6
আন্তর্জাতিক

‘আমি চাই না আমার সুন্দর তেহরান গাজা হয়ে যাক’: ইসরায়েলি হামলায় আতঙ্কিত, বিহ্বল ইরানিরা

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net