দ্বিতীয় বা তৃতীয়বারের ডেঙ্গু আক্রান্তরা বেশি ঝুঁকিতে

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, এ বছর ডেঙ্গুতে ৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ১৭ জন জুলাই মাসের প্রথম ছয়দিনের মধ্যে মারা গেছে।
এদিকে চলতি বছর ডেঙ্গুতে মৃতদের অধিকাংশই দ্বিতীয় বা তৃতীয়বার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। যাদের একবার ডেঙ্গু হয়েছে তাদের জ্বর হলেই ডেঙ্গু পরীক্ষা করা ও চিকিৎসকেরা তত্ত্বাবধানে থাকার পরামর্শ তাদের।
এ বছর সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ডেঙ্গুতে এখন পর্যন্ত ২০ জন মারা গেছে সেখানে।
মুগদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. নিয়াতুজ্জামান বলেন, "আমাদের হাসপাতালে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে যারা মারা গেছে বা একেবারে ক্রিটিক্যাল অবস্থায় চিকিৎসার পর সুস্থ হয়েছে তাদের অধিকাংশই দ্বিতীয় বা তৃতীয়বার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত। প্রেশার, ডায়বেটিস, হৃদরোগ বা অন্য কোন কোমর্বিডিটি যাদের আছে, দ্বিতীয় বা তৃতীয়বার ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে তারা শকে চলে যায়। প্রথমবার ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে শকে চলে যাওয়ার হার কম।"
''আমরা এমন অনেক রোগী পাচ্ছি যাদের সরাসরি আইসিইউতে নিতে হচ্ছে, ওয়ার্ডে নেয়ার সুযোগ থাকছে না। আইসিইউতে ৯৫% ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়েছে। যত মৃত্যু হচ্ছে তার অন্যতম কারণ সেকেন্ড বা থার্ড টাইম ডেঙ্গু আক্রান্ত ও দেরি করে হাসপাতালে আসা', যোগ করেন তিনি।
হাসপাতালে রোগী ভর্তির প্রতিদিনের গ্রাফ বিপদজনক ও দুশ্চিন্তার কারণ বলে জানান ডা. নিয়াতুজ্জামান। তিনি বলেন, "গত মে মাসে নতুন ডেঙ্গু রোগী ছিল ৩০৯ জন, জুনে ১৮৯১ জন, জুলাইয়ের ৬ দিনে ভর্তি হয়েছে ৫৮৮ জন। রোগী লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। রোগী সামলাতে আমরা তিনটি ডেডিকেটেড ডেঙ্গু ওয়ার্ড চালু করেছি, আরো দুইটি ওয়ার্ড প্রস্তুত আছে।"
হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. এম এইচ চৌধুরী লেলিন বলেন, "আমরা বেশিরভাগই সেকেন্ডারি ডেঙ্গু রোগী পাচ্ছি। ডেঙ্গু চার ধরনের- ডেন ১, ডেন ২, ডেন ৩ এবং ডেন ৪।"
"একজন ব্যক্তি যখন এক ধরনের ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়, তখন সে এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে। কিন্তু যখনই অন্য আরেক ধরনে আক্রান্ত হয়, পরিস্থিতি গুরুতর রূপ লাভ করে। এ কারণে হাসপাতালে ভর্তির ৩-৫ দিনের মধ্যে অনেকেই মারা যাচ্ছে," তিনি যোগ করেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, এই বছর ৮০% ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তির তিন দিনের মধ্যে এবং ১৪% চার থেকে দশ দিনের মধ্যে মারা গেছে।
ডা. লেলিন বলেন, এখন মানুষ ডেঙ্গু, কোভিড এবং মৌসুমী জ্বরে আক্রান্ত। তাই কারো জ্বর হলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত।