Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Saturday
July 26, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
SATURDAY, JULY 26, 2025
বার্নার্ড ম্যাডফ: মাত্র ৬,৪৮০ কোটি ডলার প্রতারণার পরম পুরুষ!

ইজেল

সৈয়দ মূসা রেজা
21 January, 2023, 06:50 pm
Last modified: 21 January, 2023, 07:33 pm

Related News

  • প্রতারণা ঠেকাতে এখন থেকে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করতে পারবে সিঙ্গাপুর পুলিশ
  • এনএসআই’র এজেন্ট সেজে ২ কোটি টাকা আত্মসাৎ: অভিযুক্ত মমতাজ গ্রেপ্তার
  • ‘হ্যালো, আপনি কি ইংরেজি বলতে পারেন?’: সন্দেহজনক কলের ফাঁদে পড়লে যা হতে পারে
  • ছবি নয় জাদুঘরকে খালি ক্যানভাস বিক্রি করা শিল্পীকে ৬৭ হাজার ইউরো ফেরতের নির্দেশ
  • বাংলাদেশি ব্যবসায়ী নেতাদের জন্য 'আন্তর্জাতিক পুরস্কারের' এক মায়াবী জগত!

বার্নার্ড ম্যাডফ: মাত্র ৬,৪৮০ কোটি ডলার প্রতারণার পরম পুরুষ!

কচুগাছ কাটতে কাটতে ডাকাত হয় বলে বাংলা প্রবাদে দাবি করা হয়েছে। এ প্রবাদ অনুসরণ করে প্রতারণার প্রথম পর্বে ম্যাডফ শিকার বানালেন নিকটজনদের। এদের মধ্যে রয়েছেন ম্যাডফের বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়-পরিজন। লং আইল্যান্ড এবং ম্যানহাটনের ক্লাবের ইয়ার-দোস্তরা। ইহুদি দাতব্যে নিজ আগ্রহ ঢাকঢোল পিটিয়েই প্রচার করতেন ম্যাডফ। তার ঘনিষ্ঠজনেরাও এতে সায় দিতেন। তারপর নিজ ‘কু-আশা’র কুয়াশায় জড়িয় ফেললেন হাডাশার মতো দাতব্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে। এ থেকে রক্ষা পেল না টুফটস এবং ইয়েসশিভার মতো বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। ইউরোপ, লাতিন আমেরিকা এবং এশিয়ার আনুষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী সংস্থা এবং ধনাঢ্য পরিবারগুলো এ জালে জড়াল। 
সৈয়দ মূসা রেজা
21 January, 2023, 06:50 pm
Last modified: 21 January, 2023, 07:33 pm

জন্ম তার এপ্রিলে। মারাও যান এপ্রিলে। কারাদণ্ডের সূচনাও হয় এপ্রিলে। এ যুগের সবচেয়ে বড় আর্থিক কেলেঙ্কারির খলনায়ক, প্রতারণার পরম পুরুষ মারা গেলেন নর্থ ক্যারোলিনার বাটনারের ফেডারেল কারাগারের এক হাসপাতালে। তখন তার বয়স ৮২ বছর। দিনটি ছিল ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ এপ্রিল। লোকটার  নাম বার্নার্ড লরেন্স ম্যাডফ। সংক্ষেপে বার্নি ম্যাডফ। প্রতারণার পরিমাণ ছিল ৬,৪৮০  কোটি বা ৬৪.৮ বিলিয়ন ডলার। 

মানুষ ঠকিয়ে অর্থ কামানোর জন্য বেছে নিয়েছিলেন পঞ্জি প্রক্রিয়া বা স্কিম। লোভ দেখিয়ে মানুষের পকেট খালি করার ফন্দিফিকিরকে সাধারণভাবে পঞ্জি স্কিম বলা হয়। এ নামকরণ কেন হলো আগে, বরং সে কাহিনিই জেনে নিই। ইতালির ব্যবসায়ী চার্লস পঞ্জির মাথা থেকে বের হয় প্রথমে এভাবে গণহারে মানুষ ঠকিয়ে নিজের পকেট ভারী করার বুদ্ধি। তিনি আমেরিকায় এসে তিন মাসে শতভাগ লাভ হবে বলে প্রলোভন দেখান। নতুন বিনিয়োগকারীদের টাকা নিয়ে পুরান বিনিয়োগকারীদের 'লাভে'র টাকা দিতেন। এভাবে মাত্র এক বছরেরই হাতিয়ে নেন ২০ মিলিয়ন বা দুই কোটি ডলার। তার প্রতারণা ধরা পড়ে এবং মামলায় ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হয়ে যায়। তাকে কারাদণ্ড দেওয়া হয় ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দে।  

ম্যাডফকে দেওয়া হয়েছিল দেড় শ বছরের কারাদণ্ড। ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ফেব্রুয়ারি মাসে আগাম মুক্তির আবেদন করেন তিনি। আদালতে জমা দেওয়া আরজিতে দাবি করা হয়, মূত্রগ্রন্থি বা বৃক্ক অর্থাৎ কিডনি ব্যাধি চূড়ান্ত অবস্থায় রয়েছে। ১৮ মাসের কম সময় বাঁচবেন। রোগ সারাবার জন্য নয় বরং তাকে বাঁচিয়ে রাখার মতো চিকিৎসা চলছে। সে সময় ওয়াশিংটন পোস্টকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি নিজে প্রতারণায় জড়িত থাকার বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, সত্যিই মারাত্মক ভুল করেছি। 

তিনি আরও বলেন, মরণব্যাধিতে ভুগছি। এ রোগের কোনো ওষুধ নেই। আর এর মধ্যেই ১১ বছর কয়েদ খাটা হয়ে গেছে। সত্যি বলতে কী, খুবই কষ্ট পেয়েছি। 

কষ্ট পাওয়ার মতো কাজের সূচনা ম্যাডফ কিন্তু করেন নিকটজনদের দিয়েই। কচুগাছ কাটতে কাটতে ডাকাত হয় বলে বাংলা প্রবাদে দাবি করা হয়েছে। এ প্রবাদ অনুসরণ করে প্রতারণার প্রথম পর্বে ম্যাডফ শিকার বানালেন নিকটজনদের। এদের মধ্যে রয়েছেন ম্যাডফের বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়-পরিজন। লং আইল্যান্ড এবং ম্যানহাটনের ক্লাবের ইয়ার-দোস্তরা। ইহুদি দাতব্যে নিজ আগ্রহ ঢাকঢোল পিটিয়েই প্রচার করতেন ম্যাডফ। তার ঘনিষ্ঠজনেরাও এতে সায় দিতেন। তারপর নিজ 'কু-আশা'র কুয়াশায় জড়িয় ফেললেনে হাডাশার মতো দাতব্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে। এ থেকে রক্ষা পেল না টুফটস এবং ইয়েসশিভার মতো বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। ইউরোপ, লাতিন আমেরিকা এবং এশিয়ার আনুষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী সংস্থা এবং ধনাঢ্য পরিবারগুলো এ জালে জড়াল। 

হিসাব-নিকাশের বিস্তারিত বিবরণ। বিনিয়োগকারী এবং নিয়ন্ত্রকদের তার প্রতি সুগভীর আস্থাই হলো তার পুঁজি। চতুর শিয়ালের মতো একই কুমিরছানাকে নানা রূপে ও ভাবে দেখিয়েছেন। কেউ ধরতে পারেননি শঠতা।  ১৯৯০-এর দশকের শুরুর দিকে মারাত্মক মন্দা, ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দের বিশ্বব্যাপী আর্থিক সংকট এবং ২০০১ খ্রিষ্টাব্দের সেপ্টেম্বরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলাকে কেন্দ্র করে আর্থিক জগতে সৃষ্ট ভূমিকম্পকে পাশ কাটাতে পারেন তিনি। জালিয়াতির সাথে এসব সংকট পাড়ি দেন। কিন্তু ২০০৭-এর মাঝামাঝি বন্ধকি বাজারে আর্থিক মন্দার সূচনা ঘটে। সেপ্টেম্বর ২০০৮-এ লেম্যান ব্রাদার্সের ব্যর্থতার মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে। আর এ সময়েই ম্যাডফের পতনের শুরু হয়।

হেজ তহবিলসহ অন্যান্য প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী তাদের নিজ নিজ খদ্দেরের চাহিদার মুখে পড়ে। সে সময় চাহিদা সামাল দেওয়ার জন্য  ম্যাডফ অ্যাকাউন্ট থেকে শত শত মিলিয়ন ডলার তুলতে আরম্ভ করে তারা। ২০০৮-এর ডিসেম্বর নাগাদ এভাবে ১,২০০ কোটি বা ১২ বিলিয়নেরও বেশি ডলার তুলে নেওয়া হয়।  ম্যাডফের তহবিলে অবস্থা সামাল দেওয়ার জন্য নতুন করে নামমাত্র ডলারের আমদানি হতে থাকে।

এভাবে তাসর ঘর, বালুর প্রাসাদ ধসে পড়ার মুখোমুখি হয়ে নিজ দুই ছেলের কাছে মুখ খুললেন ম্যাডফ। অবশ্য তিনি 'তফাত যাও, তফাত যাও! সব ঝুট হ্যায়, সব ঝুট হ্যায়' বলে প্রলাপ বকেননি। কিন্তু স্বীকার করেন, লাভজনক অর্থ-ব্যবস্থাপনার যে মোহজাল এতকাল তিনি বিস্তার করেছেন। তার 'সব ঝুট হ্যায়।' ম্যাডফ নিজ মুখেই বলেন, তার সবই 'মহা মিথ্যা।' ছেলে দুজন 'বাপ কা ব্যাটা' হয়ে রইলেন না। বরং বাবার এই স্বীকারোক্তির কথা মার্কিন আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে জানালেন। পরের দিন ২০০৮-এর ১১ ডিসেম্বর ম্যাডফকে নিজের ম্যানহাটন পেন্টহাউস থেকে গ্রেপ্তার করা হলো।

রাতারাতি বিত্তশালী থেকে পথের ভিখারির দশায় পড়লেন লাখো মানুষ। ফ্লোরিডার পাম বিচ থেকে পারস্য উপসাগর অবধি বিস্তারিত অঞ্চলজুড়ে প্রতারিত মানুষের হাহাকারের ধ্বনি-প্রতিধ্বনি শোনা যেতে লাগল। বিগত দুই দশক ধরে লাভের চাপাবাজি করেছেন, সেগুলোকে হিসাবে নিয়ে প্রতারণার আর্থিক মূল্য কাগজ-কলমে গিয়ে ঠেকল ৬,৪৮০ কোটি বা ৬৪.৮ বিলিয়ন ডলার। 

অন্তত দুজন এ রকম আচমকা ক্ষতির ধকল সইতে পারলেন না। আত্মহননের পথে চলে গেলেন। 'বাবুদের তাল পুকুরে হাবুদের ডাল কুকুরে'র মতো মাসের পর মাস তাড়িয়ে বেড়াল ম্যাডফের এক বিনিয়োগকারীকে। মামলার পর মামলায় পড়তে থাকলেন বেচারা। ম্যাডফের ফন্দিবাজি কারবারে তার ভূমিকাই এর প্রধান কারণ। প্রাণঘাতী হৃদ্রোগের কবলে পড়লেন শেষ পর্যন্ত। কোনো কোনো বিনিয়োগকারী হারালেন ঘরবাড়ি। বন্ধুবান্ধব, স্বজন-পরিজনেরা মুখ ফিরিয়ে নিল। এভাবেই তাদের বাড়ির দরজার চিরতরে বন্ধ হয়ে গেলে এসব মানুষের জন্য। এভাবেই এসব হতভাগাকে ঠেলে দেওয়া হলো ধ্বংসের পথে। 

পাপ বাপকেও ছাড়ে না। ম্যাডফও রক্ষা পেলেন না। গ্রেপ্তার হওয়ার ঠিক দুই বছরের দিনটিতে,  ২০১০-এর ১১ ডিসেম্বরে ম্যানহাটনের অ্যাপার্টমেন্টে আত্মহত্যা করলেন ম্যাডফের বড় ছেলে মার্ক। মার্কের আইনজীবী মার্টিন ফ্লুমেনবাউম বলেন, 'বেচারা নিজের বাবার ভয়ংকর অপরাধের নির্দোষ শিকার। দুই বছর ধরে লাগামহীন মিথ্যা অভিযোগ এবং বাঁকা কথা, ব্যাঙ্গ-বিদ্রƒপের চাপের কাছে শেষ পর্যন্ত নতি স্বীকার করলেন।' মৃত্যুর আগে ফ্লুমেনবাউমের কাছে মার্ক ম্যাডফ কিছু বার্তা পাঠিয়েছিলেন। তার একটিতে বলেন, 'কেউই সত্য কথা বিশ্বাস করতে চায় না। দয়া করে আমার পরিবারের দিকে একটু খেয়াল রাখবেন।' 

বার্নার্ড ম্যাডফের ভাই পিটার আইনজীবী হওয়া সত্ত্বেও রেহাই পেলেন না। বড় ভাইয়ের সংস্থায় প্রধান যোগসাজশকারী কর্মকর্তা হিসেবে অভিযুক্ত হলেন। ২০১২-এর জুনে ফেডারেল ট্যাক্স এবং সিকিউরিটিজ জালিয়াতির অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হলেন। তবে পিটার জ্ঞাতসারে পঞ্জি প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছেন এমন অভিযোগ আনা হয়নি। অন্যদিকে দোষ স্বীকার করেন পিটার।  

ভাইয়ের জালিয়াতির শিকার হতভাগ্য ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণের জন্য ২০১২-এর ডিসেম্বরে পিটারের ব্যক্তিগত সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে মার্কিন সরকার। উপরি হিসেবে জোটে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডও। ২০১৪-এর সেপ্টেম্বরে ম্যাডফের ছোট ছেলে অ্যান্ড্রু কর্কট বা ক্যানসার রোগে মাত্র ৪৮ বয়সে প্রাণ হারান। ২০০৩-এ ক্যানসারের বিরুদ্ধে বিজয়ী হয়েছিল কিন্তু বাবার কেলেঙ্কারি ও কুকীর্তিকে কেন্দ্র করে যে ঝড় বয়ে গেছে, তাতেই ক্যানসার আবার চড়াও হয়েছে বলে দাবি করতেন অ্যান্ড্রু। 

ব্যক্তিগত করুণ ক্ষয়ক্ষতি বাদেও পেশাগত সুনাম ধুয়েমুছে গেছে অনেক সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের। 'জো হ্যায় নামওলা অহিতো বদনাম হ্যায়' পরিস্থিতি তৈরি করল ম্যাডফ। তারপরও আইন-আদালত বা সংবাদমাধ্যমের প্রতি 'মেরা অঙ্গনে মে তোমহারা কেয়া কাম হ্যয়' ধোয়া তারা তুলতে পারেননি। জে এজরা মেরকিন এবং ফেয়ারফিল্ড গ্রিনউইচ গ্রুপসহ এক ডজনেরও বেশি বিশিষ্ট হেজ ফান্ড এবং অর্থ ব্যবস্থাপক স্বীকার করতে বাধ্য হয় যে তারা নিজ নিজ খদ্দেরের টাকা ম্যাডফের সংস্থায় বিনিয়োগ করেছেন। ম্যাডফ যে প্রতারণা ও জালিয়াতির জাল বিছিয়ে রেখেছে, এটি শনাক্ত করতে বা বুঝতে পারেনি তারা। ম্যাডফের সংস্থায় বিনিয়োগের জন্য খদ্দেররা ভরসা করছিলেন সুইস প্রাইভেট ব্যাংকার, গ্লোবাল কমার্শিয়াল ব্যাংক এবং বড় বড় অ্যাকাউন্টিং ফার্মগুলোর ওপর। ম্যাডফের বিনিয়োগ পর্যবেক্ষণ করাই ছিল এসব সংস্থাগুলোর অন্যতম কাজ। সে কাজে ব্যর্থ হওয়ায় তাদের আদালতে আসামির কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দেয় তাদের খদ্দেররা।   

প্রধানত শেয়ারবাজার খাতের অব্যবহৃত অর্থ দিয়ে ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে গড়ে তোলা হয়েছিল মার্কিন সিকিউরিটিজ ইনভেস্টরস করপোরেশন (এসইসসি)। ম্যাডফের দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার জেরে এ সংস্থাকে বিশাল অঙ্কের ক্ষতিপূরণ দিতে হয়। এর আগে দেউলিয়া হয়ে যাওয়া সব প্রতিষ্ঠানের জন্য যে অর্থ দিয়েছে, তার চেয়েও বেশি খসে গেছে এ দফায়। ক্ষতিপূরণ পাওয়ার পরও খুশি হননি ক্ষতিগ্রস্তরা। তাদের হামলার শিকার হতে হয় করপোরেশনকে। কারণ, তারা ধরে নেন তাদের প্রাপ্য ক্ষতিপূরণ থেকে ভুলভাবে বঞ্চিত করেছে করপোরেশনটি। 

শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার জন্য এই করপোরেশন স্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু ম্যাডফের বেলায় এ কাজে পুরোই ব্যর্থ হয়েছে করপোরেশনটি। যদিও ১৯৯২ থেকে অন্তত ছয় দফা ম্যাডফের জালিয়াতি তৎপরতাবিষয়ক তথ্য গোপনে ফাঁস করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এসবের ওপর ভিত্তি করে সফল তদন্ত চালাতে পারেনি এই সংস্থা। অর্থাৎ ৭৫ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে লজ্জাজনক অবস্থায় পড়েছে মার্কিন সিকিউরিটিজ ইনভেসটিগেটর প্রটেকশন করপোরেশন।

ব্রুকলিনে র‌্যালফ এবং সিলভিয়া (মুন্টনার) ম্যাডফের ঘরে ১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দের ২৯ এপ্রিল জন্মগ্রহণ করেন বার্নার্ড লরেন্স ম্যাডেফ। পূর্ব ইউরোপ থেকে আগত একটি শ্রমজীবী পরিবার এটি। জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছাকাছি এক এলাকায় বেড়ে ওঠেন তিনি। ১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দে রুথ আলপেরানকে বিয়ে করেন। রুথের বাবা ম্যানহাটনের ছোট কিন্তু জমজমাট অ্যাকাউন্টিং ব্যবসায় জড়িত ছিলেন। ১৯৬০-এ হফস্ট্রা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। তার আগেই নিজের ব্রকারেজ ফার্ম বার্নার্ড এল ম্যাডফ ইনভেস্টমেন্ট সিকিউরিটিজ নিবন্ধন করেন এসইসিতে। গরমকালে লাইফগার্ড দায়িত্ব পালন করেন। স্কুলজীবন থেকেই লনে বাগানে পানি দেওয়ার যন্ত্র বসানোর ব্যবসা করতেন তিনি। এ থেকে পাওয়া টাকা দিয়ে শেয়ার ব্যবসায় নামলেন তিনি। কিছুদিন আইনশাস্ত্র নিয়েও লেখাপড়া  করেন। ভালো না লাগায় সব ছেড়েছুড়ে 'ব্যবসায়' পুরোপুরি আত্মনিয়োগ করেন। তারপরই তাক লাগানো উত্থানের পালা শুরু হলো। 

ঝামেলায় যে পড়েননি, তা নয়। তবে সেগুলো তেমন কোনো ক্ষতি করতে পারেনি। নিজ খদ্দেরদের লাভের টাকার জোগান প্রায় নিয়মিতই দিয়ে গেছেন তিনি। অর্থায়ন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, খদ্দেরদের লোভ নয় বরং বিনিয়োগ নিয়ে তাদের আতঙ্ককে সামাল দিতে পেরেছেন। তার জোরেই ম্যাডফের পক্ষে পঞ্জি প্রক্রিয়া বা জালিয়াতি বছরের পর বছর ধরে নির্বিবাদে চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়েছে। টলমল অস্থির বাজারেও চোখধাঁধানো লাভ নয় বরং প্রতিশ্রুত লাভের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পেরেছেন তিনি। এ ছাড়া যে লাভ হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছেন, তা-ও বজায় রাখতে পেরেছেন। তার ব্যবসা একসময় মার্কিন শেয়ারবাজারের অন্যতম বৃহত্তম প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠেছিল। এ ছাড়া হাত খুলে দানও করতেন। ক্যানসার গবেষণা থেকে শুরু করে অর্থোডক্স ইহুদিদের পরিচালিত বিশ্ববিদ্যালয় ইয়েশিভাতে মুক্ত হাতে অর্থের জোগান দিয়েছেন তিনি। 

প্রতারণার দায়ে গ্রেপ্তার হওয়ার পর তার সব সম্মান হাওয়ায় মিলিয়ে যায়। এক ট্যাবলয়েড তার ঘাড়ে নিউইয়র্ক সিটির সবচেয়ে ঘৃণিত ব্যক্তির তকমা জুড়ে দেয়। প্রতারণার দায়ে ফেঁসে যাওয়ার পর তার সম্পত্তির কিছুই আর অবশিষ্ট ছিল না। মার্কিন সরকার তার কাছে ১৭,০০০ কোটি বা ১৭০ বিলিয়ন ডলার দাবি করে। অর্থাৎ প্রতারণার বছরগুলোতে ম্যাডফের ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলোতে যত টাকার লেনদেন হয়েছে, এ অঙ্ক তার সমান। এ পর্যন্ত ১,৪৪০ কোটি বা ১৪.৪ বিলিয়ন ডলার উদ্ধার করা গেছে। বিনিয়োগকারীদের যে লাভের স্বপ্ন দেখানো হয়েছিলে, সেই বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের তুলনায় এ নেহাতই নস্যি। 

২০০৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ জুলাই থেকে দেড় শ বছরের কারাদণ্ডের সূচনা হয় ম্যাডফের। তাকে পাঠানো হয় মধ্য-নিরাপত্তার বাটনার কারাগারে। 

(এখানেই শিক্ষার আছে অনেক কিছু। প্রথমত পঞ্জি প্রক্রিয়া এখন নানা রূপে নানা নামে তৃতীয় বিশ্বের দেশে দেশে চলছে। তবে ক্ষমতার শালা-শালি, মামা-ভাগনেদের সাথে বখেরা থাকায় এসব নাটের গুরু নব্য ম্যাডফরা কখনোই কারাগারে যান না। বরং 'ভুত' যায় 'ভুত' আসের ছড়ার ভাষ্যে 

'মম চিত্তে 
নাচে নিত্যে
সুখ উতরায়
আয় টাকা আয়
টাকা থই থই 
টাকা থই থই
কি যে আনন্দে
বাজে ছন্দে
টাকা থই থই
টাকা থই থই
হাসি পান্না
নাই কান্না
আসে আর আসে
ঘরে আর ঘাসে
নব ছন্দে, নব গন্ধে
ভালো মন্দে 
তালে তালে
আসে আর আসে
পালে পালে 
রাখি কই কই
টাকা থই থই
সুখ উতরায় 
আয় টাকা আয়
ভূতদের আয়
আয় ডানে-বাঁয়!
রাখি সুইসে 
রাখি কানাডায়!)

Related Topics

টপ নিউজ

প্রতারনা / আর্থিক প্রতারণা / বার্নার্ড ম্যাডফ / পঞ্জি স্কিম

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • বাবার এজেন্ট ব্যাংকের টাকার জন্য ছেলেকে ইসলামী ব্যাংকে হাতুড়ি পেটা, নখ তোলার চেষ্টা; গ্রেপ্তার ৩
  • ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না এমন ব্যাংকগুলোকে মার্জারের আওতায় আনা হবে: আহসান এইচ মনসুর
  • যুগের পর যুগ পেরিয়ে ঢাকার যে ৫ পুরোনো খাবার হোটেল এখনও জনপ্রিয়!
  • সীমান্তে থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়ার প্রাণঘাতী লড়াইয়ের কারণ কী?
  • অতিরিক্ত ভাড়া, ভুতুড়ে ফ্লোর, অগ্রিম ২২০ কোটি: প্রিমিয়ার ব্যাংকের টাকায় যেভাবে পকেট ভরেছে ইকবাল পরিবার
  • এস আলমের বেনামি ঋণ ও শেয়ারের প্রকৃত মালিকানা রাজসাক্ষীর মাধ্যমে প্রমাণ করা হবে: গভর্নর

Related News

  • প্রতারণা ঠেকাতে এখন থেকে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করতে পারবে সিঙ্গাপুর পুলিশ
  • এনএসআই’র এজেন্ট সেজে ২ কোটি টাকা আত্মসাৎ: অভিযুক্ত মমতাজ গ্রেপ্তার
  • ‘হ্যালো, আপনি কি ইংরেজি বলতে পারেন?’: সন্দেহজনক কলের ফাঁদে পড়লে যা হতে পারে
  • ছবি নয় জাদুঘরকে খালি ক্যানভাস বিক্রি করা শিল্পীকে ৬৭ হাজার ইউরো ফেরতের নির্দেশ
  • বাংলাদেশি ব্যবসায়ী নেতাদের জন্য 'আন্তর্জাতিক পুরস্কারের' এক মায়াবী জগত!

Most Read

1
বাংলাদেশ

বাবার এজেন্ট ব্যাংকের টাকার জন্য ছেলেকে ইসলামী ব্যাংকে হাতুড়ি পেটা, নখ তোলার চেষ্টা; গ্রেপ্তার ৩

2
অর্থনীতি

ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না এমন ব্যাংকগুলোকে মার্জারের আওতায় আনা হবে: আহসান এইচ মনসুর

3
ফিচার

যুগের পর যুগ পেরিয়ে ঢাকার যে ৫ পুরোনো খাবার হোটেল এখনও জনপ্রিয়!

4
আন্তর্জাতিক

সীমান্তে থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়ার প্রাণঘাতী লড়াইয়ের কারণ কী?

5
অর্থনীতি

অতিরিক্ত ভাড়া, ভুতুড়ে ফ্লোর, অগ্রিম ২২০ কোটি: প্রিমিয়ার ব্যাংকের টাকায় যেভাবে পকেট ভরেছে ইকবাল পরিবার

6
অর্থনীতি

এস আলমের বেনামি ঋণ ও শেয়ারের প্রকৃত মালিকানা রাজসাক্ষীর মাধ্যমে প্রমাণ করা হবে: গভর্নর

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net