ভেনেজুয়েলার মাদুরোর 'দিন শেষ হয়ে আসছে': হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভেনেজুয়েলায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা নিয়ে পরস্পরবিরোধী সংকেত দিয়েছেন। তিনি 'যুদ্ধ'-এর কথা উড়িয়ে দিলেও দক্ষিণ আমেরিকার দেশটির নেতাকে হুমকি দিয়েছেন।
রোববার প্রকাশিত সিবিএস-এর এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প সতর্ক করে বলেন, প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর দিন শেষ হয়ে আসছে। এই মন্তব্যটি এমন এক সময়ে আসে, যখন যুক্তরাষ্ট্র ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে সামরিক উপস্থিতি বাড়াচ্ছে। সেখানে মার্কিন বাহিনী কথিত মাদক-চোরাচালান জাহাজের ওপর একাধিক হামলা চালিয়েছে—যা জাতিসংঘের কর্মকর্তা ও গবেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব আইন এবং আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন।
যখন ট্রাম্পকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্র কি ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে যুদ্ধে যেতে চলেছে, তিনি উত্তর দেন, 'আমার তা মনে হয় না। আমি তেমনটা ভাবি না।'
তবে যখন তাকে জিজ্ঞেস করা হয়, প্রেসিডেন্ট মাদুরোর ক্ষমতায় থাকার শেষ দিন কি গোনা হচ্ছে, তখন ট্রাম্প বলেন, 'আমি বলব হ্যাঁ, আমার তাই মনে হয়।'
মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, 'মাদক-সন্ত্রাসবাদের' বিরুদ্ধে যুদ্ধের অংশ হিসেবে ওয়াশিংটন ভেনেজুয়েলায় সামরিক স্থাপনাগুলোর ওপর হামলার পরিকল্পনা করছে।
তবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার ভেতরে হামলার পরিকল্পনার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। যদিও তিনি এই সম্ভাবনাকে পুরোপুরি নাকচও করেননি।
তিনি বলেন, 'আমি এটা করব, এমনটা বলার পক্ষপাতী নই।' পরে আরও বলেন, 'ভেনেজুয়েলা নিয়ে আমি কী করতে যাচ্ছি, সেটা আমি আপনাকে বলব না।'
'বিচারবহির্ভূত হত্যা'
মাদক পাচারের অভিযোগে অভিযুক্ত ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো অভিযোগ করেছেন, ওয়াশিংটন তথাকথিত মাদকবিরোধী অভিযানের আড়ালে কারাকাসে সরকার পরিবর্তনের অজুহাত তৈরি করছে এবং ভেনেজুয়েলার তেলসম্পদ দখল করতে চাইছে।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে মার্কিন সামরিক বাহিনী ক্যারিবিয়ান ও প্রশান্ত মহাসাগরে এক ডজনেরও বেশি জাহাজে হামলা চালিয়েছে, যাতে অন্তত ৬৫ জন নিহত হয়েছে। এই অভিযানের ফলে অঞ্চলজুড়ে বিভিন্ন সরকারের তীব্র সমালোচনা দেখা দিয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক প্রধান ভলকার তুর্ক এবং বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা বলেছেন, সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে শুরু হওয়া এই হামলাগুলোকে 'বিচারবহির্ভূত হত্যা' হিসেবে গণ্য করা উচিত— এমনকি হামলার লক্ষ্যবস্তু যদি পরিচিত মাদক-চোরাচালানকারীও হয়ে থাকে।
তাদের মতে, এসব হামলা কোনো বিচারিক প্রক্রিয়া ছাড়াই পরিচালিত হয়েছে, যা মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
ওয়াশিংটন এখন পর্যন্ত কোনো প্রমাণ প্রকাশ করেনি যে তাদের হামলার লক্ষ্যবস্তু ব্যক্তিরা মাদক চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত ছিল বা তারা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কোনো হুমকি সৃষ্টি করেছিল।
