যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য উত্তেজনা বাড়ায় চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ধীরগতি

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ায় সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গত তিন মাসে চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমে গেছে। খবর বিবিসির।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪.৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি গত এক বছরের মধ্যে তাদের সবচেয়ে ধীরগতির প্রবৃদ্ধি।
এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে এমন সময়ে, যখন চীন তাদের বিরল খনিজ রপ্তানির ওপর ব্যাপক নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে—যা বৈশ্বিক ইলেকট্রনিক পণ্য তৈরিতে অত্যাবশ্যকীয় খনিজ। এই পদক্ষেপটি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের নাজুক বাণিজ্য শান্তি চুক্তিকে নাড়িয়ে দিয়েছে।
তৃতীয় প্রান্তিকের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি এই সপ্তাহে চীনের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকের সুর নির্ধারণ করবে। ওই বৈঠকে ২০২৬ থেকে ২০৩০ সাল পর্যন্ত দেশের অর্থনৈতিক পরিকল্পনা বা রোডম্যাপ নিয়ে আলোচনা করা হবে।
তৃতীয় প্রান্তিকে চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ছিল ৪.৮ শতাংশ, যা জুলাই পর্যন্ত গত তিন মাসের তুলনায় ৫.২ শতাংশ কম।
চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো জানিয়েছে, নানা চাপ থাকা সত্ত্বেও অর্থনীতি 'দৃঢ় স্থিতিস্থাপকতা ও প্রাণশক্তি' দেখিয়েছে। সংস্থাটি প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে প্রযুক্তি খাত ও ব্যবসায়িক সেবার অগ্রগতিকে কৃতিত্ব দিয়েছে।
বেইজিং এ বছর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে 'প্রায় ৫ শতাংশ'। সরকারের গৃহীত সহায়তা ব্যবস্থার কারণে এখন পর্যন্ত দেশটি বড় ধরনের অর্থনৈতিক ধস এড়াতে সক্ষম হয়েছে।
চীনের বিরল খনিজ রপ্তানির ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপের জবাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানিয়ে চীনা পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন।
মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেছেন, উত্তেজনা কমাতে ও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও তার চীনা সমকক্ষ শি জিনপিংয়ের মধ্যে বৈঠকের আয়োজনের লক্ষ্যে তিনি এই সপ্তাহে মালয়েশিয়ায় চীনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার আশা প্রকাশ করেছেন।
সাম্প্রতিক উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ার আগে, চীনা ব্যবসায়ীরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে হওয়া বাণিজ্যবিরতি বা যুদ্ধবিরতির সুযোগ নিয়ে মার্কিন বাজারে পণ্য রপ্তানি বাড়ায়। এর ফলে সেপ্টেম্বর মাসে চীনের রপ্তানি ৮.৪ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। চীনে আমদানির মোট মূল্যও বেড়েছে।
এক বছর আগের তুলনায় গত মাসে চীনের শিল্প উৎপাদন ৬.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ সফল খাতগুলোর মধ্যে ছিল থ্রিডি প্রিন্টিং, রোবোটিকস ও বৈদ্যুতিক যানবাহন নির্মাতারা।
চীনের সেবা খাত, যার মধ্যে আইটি সাপোর্ট, পরামর্শ সেবা, পরিবহন ও লজিস্টিকস কোম্পানি অন্তর্ভুক্ত, সেখানেও প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে।