বাংলাদেশ, পাকিস্তান থেকে ‘অনুপ্রবেশের’ কারণেই ভারতে মুসলিম জনসংখ্যা বাড়ছে: অমিত শাহ

ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, 'পাকিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশের' কারণে দেশটিতে মুসলিম জনসংখ্যা বাড়ছে।
শুক্রবার দিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় শাহ বলেন, দেশের ভোটাধিকার 'কেবল নাগরিকদেরই থাকা উচিত'।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, অমিত শাহ বলেন, 'মুসলিম জনসংখ্যা ২৪.৬ শতাংশ বেড়েছে, অন্যদিকে হিন্দু জনসংখ্যা কমেছে ৪.৫ শতাংশ। আমি আপনাদের এই কথা বলছি, কারণ এই পরিবর্তন প্রজনন হারের কারণে হয়নি, হয়েছে অনুপ্রবেশের কারণে।'
ধর্মের ভিত্তিতে ভারত ভাগের বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভারতের দুই পাশে পাকিস্তান তৈরি হয়েছিল এবং সেদিক থেকেই অনুপ্রবেশ ঘটেছে, যার ফলে জনসংখ্যার এমন পরিবর্তন হয়েছে।
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, 'আমি আপনাদের অনুপ্রবেশকারী ও শরণার্থীর মধ্যে পার্থক্য বলছি। পাকিস্তান ও বাংলাদেশে যে হিন্দু জনসংখ্যা কমেছে, তাদের অনেকেই ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। আর ভারতে মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধি প্রজনন হারের কারণে হয়নি; অনেক মুসলিম দেশে অনুপ্রবেশ করার কারণে এটি হয়েছে।'
শাহ আরও বলেন, 'ভোটার তালিকায় অনুপ্রবেশকারীদের' অন্তর্ভুক্তি সংবিধানের মূল চেতনাকে নষ্ট করে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, 'ভোটাধিকার কেবল দেশের নাগরিকদেরই থাকা উচিত।'
কিছু রাজনৈতিক দল অনুপ্রবেশকারীদের 'ভোট ব্যাংক' হিসেবে ব্যবহার করছে দাবি করে তিনি প্রশ্ন তোলেন, গুজরাট ও রাজস্থান সীমান্তে কেন অনুপ্রবেশ হয় না। 'আমাদের গুজরাটেও সীমান্ত আছে, রাজস্থানেও আছে, কিন্তু সেখানে অনুপ্রবেশ হয় না।'
তিনি আরও বলেন, অনুপ্রবেশ কোনো রাজনৈতিক বিষয় নয়, এটি একটি জাতীয় সমস্যা।
অমিত শাহ বলেন, 'বিরোধীরা বলে অনুপ্রবেশ ঠেকানোর দায়িত্ব কেন্দ্রের, কারণ বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ) তাদের নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু সীমান্তে এমন কিছু এলাকা আছে যেখানে ভূ-প্রকৃতির কারণে বেড়া দেওয়া সম্ভব নয়।
'শুধু কেন্দ্রের পক্ষে অনুপ্রবেশ ঠেকানো সম্ভব নয়। রাজ্য সরকারগুলো এ ধরনের অনুপ্রবেশকারীদের সুরক্ষা দেয়, কারণ কিছু দল তাদের মধ্যে ভোট ব্যাংক দেখে।'
শাহ বলেন, ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে, আসামে এক দশকের হিসাবে মুসলিম জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার ছিল ২৯.৬ শতাংশ।
'অনুপ্রবেশ ছাড়া এটি সম্ভব নয়। পশ্চিমবঙ্গের অনেক জেলায় এই বৃদ্ধির হার ৪০ শতাংশ; বেশ কয়েকটি সীমান্ত এলাকায় তা ৭০ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছেছে। এটি একটি স্পষ্ট প্রমাণ যে অতীতে অনুপ্রবেশ ঘটেছে,' বলেন তিনি।
শাহ আরও বলেন, ঝাড়খণ্ডে আদিবাসী সম্প্রদায়ের জনসংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে; এর কারণ হলো বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ।