গ্রিনল্যান্ডে নজর ট্রাম্পের: নতুন জাহাজ, জেট, সদর দপ্তর দিয়ে প্রতিরক্ষা বাড়াবে ডেনমার্ক
গ্রিনল্যান্ড ও আর্কটিক অঞ্চলের নিরাপত্তা শক্তিশালী করতে ৪.২ বিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত প্রতিরক্ষা বাজেট ঘোষণা করেছে ডেনমার্ক। একইসঙ্গে দেশটি যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও ১৬টি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান কিনতে ৪.৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করবে। এতে দেশটির উন্নত জেটের সংখ্যা ৪৩-এ দাঁড়াবে। খবর বিবিসি'র।
ডেনমার্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ট্রোলস লুন্ড পাউলসেন বলেছেন, 'এই চুক্তির মাধ্যমে আমরা এই অঞ্চলে ডেনিশ সশস্ত্র বাহিনীর সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়েছি।'
এটি এমন সময়ে হচ্ছে যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবার গ্রিনল্যান্ড কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তিনি গ্রিনল্যান্ডকে 'জাতীয় ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ' বলে উল্লেখ করেছেন।
ডেনমার্ক গ্রিনল্যান্ড ও ফ্যারো দ্বীপপুঞ্জের সঙ্গে মিলে আর্কটিক অঞ্চলে নিরাপত্তা জোরদারের জন্য নতুন প্রতিরক্ষা পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। পরিকল্পনায় দুইটি নতুন আর্কটিক জাহাজ, সমুদ্র পর্যবেক্ষণ বিমান, ড্রোন এবং সতর্কতা রাডার রাখা হয়েছে। এছাড়া গ্রিনল্যান্ডের রাজধানী নুকে নতুন আর্কটিক কমান্ড সদর দপ্তর স্থাপন করা হবে এবং জয়েন্ট আর্কটিক কমান্ডের অধীনে নতুন একটি সামরিক ইউনিট গঠন করা হবে।
ডেনমার্কের সেনাপ্রধান মাইকেল হাইল্ডগার্ড বলেছেন, 'সশস্ত্র বাহিনীর কাজ হলো রাজ্যের সব অংশে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং প্রয়োজনে ন্যাটোর আওতায় গ্রিনল্যান্ড, ফ্যারো দ্বীপ ও ডেনমার্ককে রক্ষা করা।'
পরিকল্পনার মধ্যে গ্রিনল্যান্ড ও ডেনমার্কের মধ্যে একটি 'আন্ডারসী কেবল' স্থাপনও রয়েছে। ডেনমার্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, এটি প্রতিরোধ ক্ষমতা জোরদার ও ন্যাটোর দায়িত্বের অংশ। যদিও কোনো দেশ বা শত্রুর নাম উল্লেখ করা হয়নি।
এরই মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গ্রিনল্যান্ডের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, গ্রিনল্যান্ডের ৫৭ হাজার বাসিন্দা 'আমাদের সঙ্গে থাকতে চায়'।
গ্রিনল্যান্ডে 'কোল্ড ওয়ার' (স্নায়ুযুদ্ধ)-এর সময় থেকে একটি মার্কিন রাডার ঘাঁটি আছে এবং দীর্ঘদিন ধরে এটি ওয়াশিংটনের জন্য কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
যদিও দ্বীপটি বিস্তৃত স্বায়ত্তশাসন ভোগ করে, এটি এখনও ডেনমার্কের অংশ।
ট্রাম্প বলেছেন, গ্রিনল্যান্ড চীনা ও রাশিয়ার জাহাজ নজরদারির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, জাহাজগুলো 'সব জায়গায় ছড়িয়ে আছে'।
গ্রিনল্যান্ড উত্তর আমেরিকা থেকে ইউরোপে যাওয়ার সংক্ষিপ্ততম পথে অবস্থিত, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এখানে একটি বড় আমেরিকান স্পেস সুবিধাও আছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে গ্রিনল্যান্ডের প্রাকৃতিক সম্পদ, যেমন বিরল খনিজ, ইউরেনিয়াম ও লোহা খনির প্রতি আগ্রহ বেড়েছে।
