গাজামুখী নৌবহরে ইসরায়েলি নৌযানের ‘হুমকি’, সাইবার হামলার অভিযোগ
গাজার উদ্দেশ্যে মানবিক সহায়তা নিয়ে যাত্রাকারী আন্তর্জাতিক নৌবহর অভিযোগ করেছে, তাদের নৌযানের কাছে ইসরায়েলি নৌযানগুলো পৌঁছে "বিপজ্জনক ও ভীতিপ্রদ চালচলন" করেছে। আজ বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার অবরোধ ভাঙার পথে এগোনোর সময় এই ঘটনা ঘটে।
বহরের সংগঠকরা জানান, দুইটি ইসরায়েলি "যুদ্ধজাহাজ" দ্রুত গতিতে এগিয়ে এসে বহরের দুটি নৌযান— আলমা ও সিরিয়ুসকে— ঘিরে ফেলে। এ সময় সব ধরনের নেভিগেশন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। বহরের এক সংগঠক থিয়াগো আভিলা সংবাদ সম্মেলনে একে "সাইবার হামলা" বলে বর্ণনা করেন।
পরে আংশিকভাবে বহরের যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়। তবে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি।
'গ্লোবাল সমুদ ফ্লোটিলা' নামে পরিচিত এই অভিযানে অংশ নিচ্ছে ৪০টিরও বেশি বেসামরিক নৌযান এবং প্রায় ৫০০ মানুষ রয়েছেন। যাদের মধ্যে আছেন বিভিন্ন দেশের সংসদ সদস্য, আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মী। সুইডিশ জলবায়ু আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গও বহরের সঙ্গে রয়েছেন।
'বিপজ্জনক আচরণ', ড্রোন হামলা
গাজায় ইসরায়েলি অবরোধ ভাঙতে এবং খাদ্য ও ওষুধ পৌঁছে দিতে এই সর্বশেষ সমুদ্রযাত্রা শুরু হয়েছে। বহরটি বর্তমানে গাজার উপকূল থেকে ১২০ নটিক্যাল মাইল দূরে অবস্থান করছে, যে অঞ্চল ইসরায়েল কড়াভাবে পাহারা দিচ্ছে যাতে কোনো নৌযান গাজার দিকে যেতে না পারে।
সংগঠকরা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সকালে তারা গাজায় পৌঁছাতে চান।
সমুদ ফ্লোটিলা'র এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের এই বৈরী পদক্ষেপগুলো ৪০টিরও বেশি দেশের নিরস্ত্র বেসামরিক নাগরিকদের চরম ঝুঁকিতে ফেলেছে। তবুও বহর তার গন্তব্যের দিকে অগ্রসর হবে।
ইসরায়েলি নৌযানে কারা পরিচালনা করছে তা স্পষ্ট নয়। তবে বহরের ইনস্টাগ্রাম পেজে প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, আগ্নেয়াস্ত্র-সজ্জিত একটি সামরিক জাহাজের অবয়ব, যা বহরের বেসামরিক নৌযানের খুব কাছাকাছি চলে এসেছে।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স নিশ্চিত করেছে যে, ভিডিওটি সিরিয়ুস নৌযান থেকেই ধারণ করা, কারণ এর রিগিং ও লাইনের সঙ্গে নৌকাটির আগের ফাইল চিত্র মিলে গেছে। তবে সামরিক জাহাজটির পরিচয় বা ভিডিওটি কবে ধারণ করা হয়েছে তা নিশ্চিত করা যায়নি।
এর আগেও গাজা ফ্লোটিলা ড্রোন হামলার মুখে পড়ে। ড্রোনগুলো স্টান গ্রেনেড ও চুলকানির গুঁড়া ছোড়ে, এতে কিছু ক্ষতি হলেও কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। ইসরায়েল সে সময়ও কোনো মন্তব্য করেনি, তবে স্পষ্ট জানিয়েছিল যে যেকোনো মূল্যে গাজায় পৌঁছানোয় বাধা দেওয়া হবে।
ইতালি ও স্পেন এই ফ্লোটিলার উদ্ধার ও মানবিক প্রয়োজনে সহায়তার জন্য তাদের নৌবাহিনীর জাহাজ মোতায়েন করেছে, তবে জানিয়েছে তারা সামরিকভাবে হস্তক্ষেপ করবে না। পাশাপাশি তুরস্কের ড্রোনগুলোও বহরের ওপর নজর রাখছে।
তবে ইতালি ও স্পেন জানিয়েছে, গাজার ১৫০ নটিক্যাল মাইলের মধ্যে বহর প্রবেশ করলে নিরাপত্তাজনিত কারণে তারা আর অনুসরণ করবে না।
