‘বাগরাম বিমানঘাঁটি ফেরত না দিলে, দেখবেন আমি কী করি’, তালেবানকে ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি

আফগানিস্তান বাগরাম বিমানঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ যুক্তরাষ্ট্রকে ফিরিয়ে না দিলে 'খারাপ কিছু' হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রয়োজনে ঘাঁটি পুনর্দখলের জন্য মার্কিন সেনা মোতায়েনের সম্ভাবনাও সরাসরি নাকচ করে দেননি তিনি।
শনিবার ট্রাম্প তার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশালে লিখেছেন, 'যদি আফগানিস্তান যুক্তরাষ্ট্রের নির্মাণ করা বাগরাম বিমানঘাঁটি ফিরিয়ে না দেয়, তবে খুব খারাপ কিছু ঘটবে।'
গত বৃহস্পতিবার ট্রাম্প জানান, ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের হামলার পর থেকে মার্কিন বাহিনীর ব্যবহার করা এই ঘাঁটি পুনরায় নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলছে। শুক্রবার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে আফগানিস্তানের সঙ্গে তার আলোচনা হচ্ছে।
২০২১ সালে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর তালেবান ঘাঁটিগুলো দখল করে নেয় এবং যুক্তরাষ্ট্রসমর্থিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে।
তবে আফগানিস্তানের কর্মকর্তারা আবারও মার্কিন উপস্থিতির বিরোধিতা করছেন।

বর্তমান ও সাবেক মার্কিন কর্মকর্তাদের মতে, বাগরাম পুনর্দখলের পদক্ষেপ আফগানিস্তানে 'আবার আক্রমণের' মতো দেখাতে পারে। এবং তা করার জন্য ১০ হাজারের বেশি সেনা এবং উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েনের প্রয়োজন হতে পারে।
ট্রাম্প অতীতেও বিভিন্ন কৌশলগত স্থাপনা দখলে নেওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছেন—যেমন পানামা খাল থেকে শুরু করে গ্রিনল্যান্ড। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বাগরামের প্রতিই বিশেষ নজর তার।
বাগরাম ঘাঁটি পুনর্দখলের জন্য মার্কিন সেনা পাঠাবেন কি না—শনিবার এমন প্রশ্নের সরাসরি উত্তর দিতে অপারগতা প্রকাশ করে ট্রাম্প বলেন, 'আমরা সে বিষয়ে কথা বলব না।'
হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, 'আমরা এখন আফগানিস্তানের সঙ্গে কথা বলছি এবং আমরা ঘাঁটিটা চাই, খুব তাড়াতাড়ি। আর যদি তারা তা না করে—যদি তারা তা না করে, তাহলে আপনারা দেখবেন, আমি কী করি।'
'নাইন-ইলেভেনের' হামলার পর থেকে দুই দশক ধরে আফগানিস্তানে মার্কিন বাহিনীর প্রধান বিমানঘাঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে বাগরাম বিমানঘাঁটি।
এক সময় এখানে বার্গার কিং, পিজা হাটের মতো ফাস্ট ফুড রেস্তোরাঁ ও ইলেকট্রনিক্স থেকে আফগান কার্পেট পর্যন্ত বিক্রি করার দোকান ছিল। এছাড়াও এখানে একটি বিশাল কারাগারও ছিল।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশাল এই ঘাঁটি রক্ষা করা আদতে কঠিন হবে এবং এর পরিচালনা ও রক্ষায় ব্যাপক লোকবল লাগবে।
আলোচনার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র তালেবানের কাছ থেকে বাগরাম ঘাঁটি পুনর্দখলে সফল হলেও সেটি আফগানিস্তানে সক্রিয় ইসলামিক স্টেট বা আল-কায়েদার মতো নানা হুমকি থেকে রক্ষা করতে হবে।
এছাড়া ঘাঁটিটি ইরানের উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঝুঁকিতেও পড়তে পারে। সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালানোর পর তেহরান কাতারে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের একটি বড় ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে।