যুক্তরাষ্ট্রের এইচ-১বি ভিসা সবচেয়ে বেশি পান কোন দেশের নাগরিকেরা?

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার উচ্চ-দক্ষ কর্মীদের ভিসা কর্মসূচি এইচ-১বি-র জন্য বার্ষিক ১ লাখ ডলার ফি আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। অল্প কয়েকটি দেশই যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ এইচ-১বি ভিসা পেয়ে থাকে—এবং এই তালিকার শীর্ষে রয়েছে ভারত ও চীন।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫ লাখ মানুষ এইচ-১বি ভিসার মাধ্যমে কাজ করেন। তাদের বেশিরভাগই তিন বছর পরপর স্ট্যাটাস নবায়ন করেন।
নিয়োগকর্তারা সাধারণত মার্কিন কর্মী খুঁজে না পেলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মতো বিশেষায়িত দক্ষতাসম্পন্ন বিদেশি কর্মী নিয়োগের জন্য এইচ-১বি ভিসার ওপর নির্ভর করে। প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো এই ভিসার সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী হলেও উৎপাদন, অর্থ, শিক্ষা, রিটেইল ও স্বাস্থ্যসেবা খাতের নিয়োগকর্তারাও এই কর্মসূচি ব্যবহার করে।
কোন দেশের নাগরিকেরা বেশি পান?
প্রতি বছর প্রায় ৮৫ হাজার নতুন এইচ-ওয়ানবি ভিসা দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এই কোটার বাইরে রাখা হয়।
গত বছর মার্কিন সরকার প্রায় ৪ লাখ ২৫ হাজার এইচ-১বি ভিসার আবেদন পেয়েছিল। আবেদনকারীদের মধ্যে থেকে লটারির মাধ্যমে প্রাপকদের নির্বাচন করা হয়। এই কর্মসূচিতে আধিপত্য বিস্তার করে আছেন ভারতীয়রাই।
রয়টার্সের বরাত দিয়ে ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, ২০২০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে মোট অনুমোদিত এইচ-১বি ভিসার প্রায় ৭৩.৭ শতাংশ পেয়েছে ভারত। এরপরেই ১৬ শতাংশ ভিসা নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে চীন।
কানাডা প্রায় ৩ শতাংশ ভিসা নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। তাইওয়ান ও দক্ষিণ কোরিয়া পেয়েছে প্রায় ১.৩ শতাংশ করে, আর মেক্সিকো পেয়েছে ১.২ শতাংশ। নেপাল, ব্রাজিল, পাকিস্তান ও ফিলিপাইন প্রত্যেক দেশ পেয়েছে প্রায় ০.৮ শতাংশ ভিসা।
ডিপার্টমেন্ট অভ হোমল্যান্ড সিকিউরিটির (ডিএইচএস) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ অর্থবছরেও ৭০ শতাংশের বেশি এইচ-১বি ভিসাধারী ছিলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত। চীনের নাগরিকরা পেয়েছেন নতুন ভিসার ১২ শতাংশ।
আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুধু ২০২৩ অর্থবছরেই অনুমোদিত ভিসার ৮০ শতাংশের বেশি পেয়েছেন ভারত ও চীনের আবেদনকারীরা। কানাডা ছাড়া আর কোনো দেশই এককভাবে ২ শতাংশের কোঠা স্পর্শ করতে পারেনি।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে 'ওপেন ডোরস রিপোর্ট অন ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশনাল এক্সচেঞ্জ'-এর প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর প্রধান উৎস হিসেবে চীনকে ছাড়িয়ে গেছে ভারত। ২০২৩-২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে রেকর্ড ৩ লাখ ৩১ হাজার ভারতীয় শিক্ষার্থী ছিলেন।
বিবিসির জানুয়ারির প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই মাসে ১০ লাখেরও বেশি ভারতীয়, নির্ভরশীলসহ, চাকরিভিত্তিক গ্রিন কার্ডের অপেক্ষায় ছিলেন।
২০২৩ সালে, এইচ-১বি ভিসাধারীদের বেশিরভাগই বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত (স্টেম) ক্ষেত্রে কাজ করেছেন। তাদের গড় বার্ষিক বেতন ছিল ১ লাখ ১৮ হাজার ডলার।
এদিকে ন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর আমেরিকান পলিসির তথ্য অনুসারে, ২০২৪ অর্থবছরে এই কর্মসূচির সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী ছিল অ্যামাজন। প্রতিষ্ঠানটি এ সময় ৩ হাজার ৮৭১ জন নতুন এইচ-১বি কর্মী নিয়োগ দিয়েছে। অন্যান্য প্রযুক্তি জায়ান্ট—গুগল, মেটা, অ্যাপল ও আইবিএম—শীর্ষ ১০-এর মধ্যে রয়েছে।
শ্রমিক সংকট মোকাবিলার জন্য কংগ্রেস ১৯৯০ সালে এইচ-১বি কর্মসূচি চালু করে।