নিরাপত্তা উদ্বেগে মহাকাশ কর্মসূচিতে চীনের নাগরিকদের ওপর নাসার নিষেধাজ্ঞা

মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা তাদের সব সুবিধা, উপকরণ ও নেটওয়ার্ক ব্যবহারে চীনা নাগরিকদের প্রবেশাধিকার সীমিত করেছে। এমনকি যাদের বৈধ মার্কিন ভিসা রয়েছে, তারাও এই বিধিনিষেধের আওতায় পড়েছেন।
ব্লুমবার্গ নিউজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৫ সেপ্টেম্বর থেকে ঠিকাদার বা গবেষক শিক্ষার্থী হিসেবে নাসায় কাজ করা চীনা নাগরিকরা সংস্থাটির সব সিস্টেম ও স্থাপনায় প্রবেশাধিকার হারিয়েছেন। পরবর্তীতে নাসা বিষয়টি নিশ্চিত করে জানায়, কাজের নিরাপত্তার স্বার্থে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
চীনের দ্রুত অগ্রসরমান মহাকাশ কর্মসূচি যুক্তরাষ্ট্রকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। এর আগে ওয়াশিংটন নাসাকে চীনের সঙ্গে তথ্য আদান–প্রদান থেকে বিরত রাখায় চীনা নভোচারীরা আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন থেকে বাদ পড়েছিলেন। নতুন এই নিষেধাজ্ঞা দুই দেশের বৈজ্ঞানিক সহযোগিতায় বিদ্যমান অচলাবস্থা আরও গভীর করল।
ব্লুমবার্গ জানায়, হঠাৎ করেই নাসার ডেটা সিস্টেমে চীনা নাগরিকদের প্রবেশাধিকার বন্ধ হয়ে যায়। তারা অনলাইন–অফলাইন মিটিংয়েও অংশ নিতে পারেননি। নাসার মুখপাত্র বেথানি স্টিভেন্স বলেন, 'অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার অংশ হিসেবে চীনা নাগরিকদের শারীরিক ও সাইবার প্রবেশাধিকার সীমিত করা হয়েছে।'
মহাকাশ প্রতিযোগিতায় যুক্তরাষ্ট্র ও চীন বর্তমানে মুখোমুখি অবস্থানে। নাসার ভারপ্রাপ্ত প্রশাসক শন ডাফি বুধবার সাংবাদিকদের বলেন, 'আমরা দ্বিতীয় এক মহাকাশ প্রতিযোগিতার মধ্যে আছি। চীনারা আমাদের আগে চাঁদে ফিরতে চায়, কিন্তু তা ঘটবে না।'
অন্যদিকে, গত বছর চীনের ম্যানড স্পেস এজেন্সির এক কর্মকর্তা মার্কিন উদ্বেগকে 'অপ্রয়োজনীয়' বলে আখ্যায়িত করেছিলেন। তিনি দাবি করেন, চীনের মহাকাশ অনুসন্ধান 'মানবতার জন্য সম্মিলিত অভিযান'।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতারা এ বিষয়ে ভিন্ন অবস্থানে রয়েছেন। গত সপ্তাহে সিনেটের এক শুনানিতে রিপাবলিকান সিনেটর টেড ক্রুজ সতর্ক করে বলেন, 'চীন তাদের লক্ষ্য গোপন করেনি। আমাদের প্রতিপক্ষ প্রভাবশালী মহাকাশ সক্ষমতা অর্জন করলে তা আমেরিকার জন্য গভীর ঝুঁকি বয়ে আনবে।'
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই প্রতিযোগিতা শুধু চাঁদে অবতরণের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বরং চাঁদের বিরল মৃত্তিকা, লোহা, টাইটানিয়াম কিংবা হিলিয়ামের মতো সম্পদ নিয়ন্ত্রণ নিয়েও দুই পরাশক্তির মধ্যে দৌড় চলছে।