নেপালে কারফিউ ভেঙ্গে রাস্তায় নেমেছেন আন্দোলনকারীরা, পার্লামেন্ট ভবনের সামনে বিক্ষোভ

নেপালে কারফিউ ভেঙ্গে আজ মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানী কাঠমান্ডুর নতুন বানেশ্বরসহ অন্যান্য এলাকায় বিক্ষোভ করছেন তরুণরা। সোমবারের বিক্ষোভ ও দমনপীড়নের পর প্রশাসন এই কারফিউ জারি করে।
সোমবার জেন-জি বিক্ষোভে পুলিশের অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগে শুধু কাঠমান্ডুতেই কমপক্ষে ১৭ জন নিহত হন। ইটাহারিতে নিহত হয়েছেন আরও দুজন। গুরুতর আহত হয়েছেন অন্তত ৪০০ বিক্ষোভকারী।
সরকারি দমননীতির প্রতিবাদে মঙ্গলবার ভোর থেকেই কালাঙ্কি, চাপাগাঁওসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ শুরু হয়। ফেডারেল পার্লামেন্ট ভবনের সামনেও কিছু তরুণ জড়ো হলে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে।
কাঠমান্ডু, ললিতপুর ও ভক্তপুর জেলায় কারফিউ জারি করেছে প্রশাসন। কাঠমান্ডু জেলা প্রশাসন কার্যালয় জানিয়েছে, রিং রোডের ভেতরে সকাল ৮টা ৩০ মিনিট থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ থাকবে। এর আওতায় পড়েছে বলকুমারি ব্রিজ, কোটেশ্বর, সীনামঙ্গল, গাউশালা, চাবাহিল, নারায়ণ গোপাল চৌক, গঙ্গাবু, বলাজু, স্বয়ম্ভূ, কালাঙ্কি, বালখু ও বাগমতি ব্রিজ এলাকা।
ললিতপুরে সকাল ৯টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত কারফিউ থাকবে ২, ৪, ৯, ১৮ ও ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে। ভক্তপুরে সকাল ৮টা ৩০ মিনিট থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি হয়েছে মধ্যপুর ঠিমি, সূর্যবিনায়ক, চাঙুনারায়ণ ও ভক্তপুর পৌর এলাকায়।
এই আদেশে সব ধরনের চলাচল, সমাবেশ, মিছিল, সভা ও অবস্থান কর্মসূচি নিষিদ্ধ করা হয়েছে স্থানীয় প্রশাসন আইন ১৯৭১–এর ৬(৩) ধারায়।
এদিকে, কারফিউ অমান্য করে মঙ্গলবার সকালে নতুন বানেশ্বরের পার্লামেন্ট ভবনের সামনে হঠাৎ জড়ো হন কিছু তরুণ। তারা কোনো ব্যানার বহন করেননি। এক অংশগ্রহণকারী বলেন, 'সোমবারের ঘটনা সরকারের ব্যর্থতা প্রকাশ করেছে। আমি এসেছি যুবকদের পাশে দাঁড়াতে।'
সোমবার নেপালে দুর্নীতি ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ১৯ জন নিহত হন। শাসক দল ও বিরোধী দলের নেতারা সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করেছেন। তাদের মতে, এ মর্মান্তিক ঘটনা দমননীতিরই প্রতিফলন।
পরবর্তীতে রাতে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপসহ বড় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে নেপাল সরকার।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাত ১২টা থেকে কার্যকর হওয়া এ সিদ্ধান্তে এক ডজনের বেশি জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম বন্ধ হয়ে যায়। এর প্রতিবাদে সোমবার হাজারো তরুণ জোরপূর্বক দেশটির পার্লামেন্ট ভবনে ঢুকে পড়ে। তারা ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার দাবি জানায়। একই সঙ্গে তারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানায়।