ভেঙে গেল বিশ্বের সবচেয়ে বড় আইসবার্গ 'এ২৩এ'

বিশ্বের সবচেয়ে বড় আইসবার্গ বা হিমশৈল 'এ২৩এ' দ্রুত ভেঙে বেশ কয়েকটি বিশাল খণ্ডে বিভক্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ অ্যান্টার্কটিক সার্ভে (বিএএস)-এর বিজ্ঞানীরা।
১৯৮৬ সালে অ্যান্টার্কটিকার ফিলচনার-রোন আইস শেল্ফ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া এই হিমশৈলের ওজন ছিল প্রায় এক ট্রিলিয়ন মেট্রিক টন এবং আয়তন ছিল ৩,৬৭২ বর্গ কিলোমিটার—যা যুক্তরাষ্ট্রের রোড আইল্যান্ড রাজ্যের চেয়ে কিছুটা বড়। আশির দশক থেকে এটি কয়েকবার 'সবচেয়ে বড় হিমশৈল' হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। যদিও ২০১৭ সালে এ৬৮ এবং ২০২১ সালে এ৭৬-এর মতো কিছু হিমশৈল সাময়িকভাবে এটিকে ছাড়িয়ে যায়।
বিএএস-এর সমুদ্রবিজ্ঞানী অ্যান্ড্রু মেইজার্স জানান, হিমশৈলটি এখন দ্রুত ভাঙছে এবং বড় বড় খণ্ডে বিভক্ত হচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় বরফ কেন্দ্রও এই খণ্ডগুলোকে বড় হিমশৈল হিসেবে চিহ্নিত করেছে। মেইজার্সের মতে, এই 'মেগাবার্গ'টি এখন প্রায় ১ হাজার ৭০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় সংকুচিত হয়েছে, যা প্রায় গ্রেটার লন্ডনের আকারের প্রায় সমান।
এ২৩এ হিমশৈলটি প্রায় ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে অ্যান্টার্কটিকার ওয়েডেল সাগরের তলদেশে আটকে ছিল। সম্ভবত এর আকার ছোট হওয়ার পরই এটি সমুদ্রে ভেসে ওঠার পথ পেয়েছিল।
এ২৩এ বর্তমানে পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন হিমশৈল হিসেবেও পরিচিত। মূল হিমবাহ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর এটি একবার নয়, দু'বার আটকে গিয়ে স্বাভাবিকভাবে ভাঙার প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করতে সক্ষম হয়েছিল। ফলে অন্যান্য হিমশৈলের তুলনায় এটি দীর্ঘ সময় পানিতে স্থিত থাকতে পেরেছে।
মেইজার্সের মতে, এ২৩এ অন্যান্য বড় হিমশৈল যেমন এ৬৮ এবং এ৭৬ এর মতো একই ধরনের ভাঙনের পথে এগোচ্ছে। তবে এ২৩এ সেগুলোর চেয়ে বেশি সময় ধরে একখণ্ড থাকার কারণে বাকিগুলোর তুলনায় আলাদা।
এদিকে, এ২৩এ হিমশৈল ভেঙে যাওয়ার পর বিশ্বের বৃহত্তম হিমশৈলের খেতাব এখন ডি১৫এ-এর দখলে। এর আয়তন প্রায় ৩হাজার বর্গ কিলোমিটার। মেইজার্স জানায় এটি অ্যান্টার্কটিকার উপকূলে, অস্ট্রেলিয়ার ডেভিস ঘাঁটির কাছে, বেশ স্থির অবস্থায় রয়েছে।
এ২৩এ এখনও বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম হিমশৈলের খেতাব ধরে রেখেছে। তবে মেইজার্স সতর্ক করেন, এটি 'আরও খণ্ড খণ্ড হতে থাকায়' 'আগামী সপ্তাহগুলোতে' এই পরিস্থিতি দ্রুত পরিবর্তন হতে পারে। উষ্ণ পানির তাপমাত্রা এবং দক্ষিণ বসন্তের শুরু ইঙ্গিত দিচ্ছে যে এটি সম্ভবত 'এত ছোট ছোট খণ্ডে বিভক্ত হবে যে সেগুলোকে আর ট্র্যাক করা যাবে না'।