'বিউটিফুল সেরিমনি'-তে যুক্তরাষ্ট্রের কথা বলা উচিত ছিল: চীনকে ট্রাম্প

বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ অবসানের ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষে চীনের 'সুন্দর অনুষ্ঠান'-এ জাপানের পরাজয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা বিশেষভাবে উল্লেখ করা উচিত ছিল।
ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, 'আমার মনে হয়েছিল এটি একটি সুন্দর অনুষ্ঠান। আমার মনে হয় এটি খুবই, খুবই মনোমুগ্ধকর।' এর কয়েক ঘণ্টা আগে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, বেইজিংয়ে একত্রিত হওয়া বিদেশি নেতারা যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে পারেন।
ট্রাম্প আরও বলেন, 'আমি গত রাতে ভাষণটি দেখেছি। প্রেসিডেন্ট শি আমার বন্ধু, কিন্তু আমি মনে করি যে গত রাতের ভাষণে যুক্তরাষ্ট্রের কথা উল্লেখ করা উচিত ছিল, কারণ আমরা চীনকে অনেক সাহায্য করেছি।'
ওয়াশিংটনে অবস্থিত চীনা দূতাবাসে মন্তব্যের জন্য অনুরোধ করা হলেও তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং যুদ্ধের ৮০তম বার্ষিকীকে তার সরকার এবং ওয়াশিংটনের সঙ্গে মতবিরোধ থাকা দেশগুলোর সঙ্গে চীনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক প্রদর্শনের একটি প্রধান সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করেছেন।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের পাশে বসে শি তিয়েনআমেন স্কোয়ারে ৫০ হাজারের বেশি দর্শকের সামনে ভাষণ দেন। তিনি কুচকাওয়াজরত সেনা ও অত্যাধুনিক সামরিক সরঞ্জামের প্রদর্শনী পর্যবেক্ষণ করেন।
১৯৩৭ সালে জাপান চীনে হামলা করলে যুদ্ধ বড় রূপ নেয়, যা পরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে নিয়ে যায়। ১৯৪৫ সালে জাপান আত্মসমর্পণ করলে যুদ্ধ শেষ হয়। ১৯৪১ সালে যুক্তরাষ্ট্র চীনের সেনাদের সাহায্য করে এবং জাপানের পরাজয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
বর্তমানের রাজনৈতিক লড়াইয়ে শি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকে 'চীনা জাতির মহান পুনরুজ্জীবন'-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হিসেবে উল্লেখ করেছেন। একজন কর্মকর্তার মতে, শি চীনা জনগণকে সমর্থন ও সহায়তা করা বিদেশি সরকার ও আন্তর্জাতিক বন্ধুদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন, তবে যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা বিশেষভাবে উল্লেখ করেননি।
যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সম্পর্ক বর্তমানে উত্তেজনাপূর্ণ। ইউক্রেন থেকে দক্ষিণ চীন সাগর পর্যন্ত বিভিন্ন নিরাপত্তা ইস্যুতে মতবিরোধ রয়েছে। পাশাপাশি তারা একে অপরের পণ্যের ওপর শুল্ক এড়ানোর জন্য একটি ব্যাপক বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা করছে।
তবে ট্রাম্প বারবার শির সঙ্গে ইতিবাচক ব্যক্তিগত সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেছেন, যা তার সহকারীরা মনে করেন বিশ্বের দুটি বৃহত্তম অর্থনীতির সম্পর্ককে গঠনমূলক দিকে নিয়ে যেতে পারে। তিনি আরও জানিয়েছেন, শিগগিরই শির সঙ্গে দেখা করতে পারেন।
কুচকাওয়াজ শুরু হওয়ার সময় ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যাল-এ শিকে উদ্দেশ করে লিখেছেন, 'অনুগ্রহ করে ভ্লাদিমির পুতিন এবং কিম জং উনকে আমার উষ্ণ শুভেচ্ছা জানাবেন, আপনারা যখন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন।'
ক্রেমলিন জানিয়েছে, তারা কোনো ষড়যন্ত্র করছে না এবং ইঙ্গিত দিয়েছে যে ট্রাম্পের মন্তব্যটি ব্যঙ্গাত্মক।