অধস্তন কর্মীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ানোর পর প্রধান নির্বাহীকে বরখাস্ত করল নেসলে

একজন 'সরাসরি অধস্তন কর্মীর' সঙ্গে 'প্রেমের সম্পর্ক' থাকার বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানাননি—এই অভিযোগে প্রতিষ্ঠানে যোগদানের মাত্র এক বছরের মাথায় প্রধান নির্বাহীকে বরখাস্ত করেছে নেসলে।
কিট ক্যাট চকলেট বার ও নেসপ্রেসো কফি ক্যাপসুল প্রস্তুতকারী এই সুইস ফুড জায়ান্ট জানিয়েছে, কোম্পানির চেয়ারম্যান ও প্রধান স্বতন্ত্র পরিচালকের নেতৃত্বে তদন্তের পর লরেন্ট ফ্রেইক্সকে 'অবিলম্বে' চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
বিবিসি জানতে পেরেছে, কোম্পানির গোপন তথ্য ফাঁসের ব্যবস্থার (হুইসেলব্লোয়িং চ্যানেল) মাধ্যমে পাওয়া একটি প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এই তদন্ত শুরু হয়েছিল।
নেসলের চেয়ারম্যান পল বাল্ক বলেন, 'এই সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি ছিল। নেসলের মূল্যবোধ ও সুশাসন আমাদের কোম্পানির শক্তিশালী ভিত্তি। নেসলেতে দীর্ঘদিনের সেবার জন্য আমি লরেন্টকে ধন্যবাদ জানাই।'
বিবিসি আরও জানতে পেরেছে, লরেন্ট এমন একজন কর্মীর সঙ্গে ছিলেন যিনি কোম্পানির নির্বাহী বোর্ডে নেই। বিষয়টি স্বার্থের সংঘাত তৈরি করায় তদন্ত শুরু হয়।
বাল্কের পাশাপাশি স্বতন্ত্র পরিচালক পাবলো আইলাও 'বাইরের স্বাধীন আইনি পরামর্শকের সহায়তায়' লরেন্টের বিরুদ্ধে এই তদন্ত তত্ত্বাবধান করেন।
ফিনান্সিয়াল টাইমস পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি শুরুতে ফ্রেইক্সের সঙ্গে একজন কর্মীর সম্পর্ক নিয়ে উদ্বেগ জানানো হয়েছিল। তখন একটি অভ্যন্তরীণ তদন্তের পর অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন বলে জানানো হয়।
তবে অভিযোগ আসা অব্যাহত থাকায় নেসলে বাইরের আইনি পরামর্শকের সহায়তায় আরেকটি তদন্ত পরিচালনা করে। এরপরই অভিযোগগুলো প্রমাণিত হয় বলে জানানো হয় প্রতিবেদনে।
নেসলের একজন মুখপাত্র বলেন, প্রাথমিক অভ্যন্তরীণ তদন্তের পরপরই বাইরের তদন্ত শুরু হয়েছিল।
ফ্রেইক্স প্রায় ৪০ বছর ধরে নেসলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। গত সেপ্টেম্বরে মার্ক স্নাইডারের স্থলাভিষিক্ত হয়ে তিনি বৈশ্বিক প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
নেসলে জানিয়েছে, বরখাস্ত হওয়ার কারণে তিনি কোনো বিদায়ী আর্থিক প্যাকেজ (এক্সিট প্যাকেজ) পাবেন না।
২০০১ সাল থেকে নেসলেতে কর্মরত ফিলিপ ন্যাভারাটিলকে নতুন প্রধান নির্বাহী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এর আগেও সহকর্মীদের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়ে তদন্তের পর অনেক কোম্পানি তাদের প্রধান নির্বাহীদের বরখাস্ত করেছে।
তেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বিপির প্রধান নির্বাহী বার্নার্ড লুনি সম্পর্কের বিষয়টি প্রথমে 'সম্পূর্ণ স্বচ্ছভাবে' না জানানোর দায়ে পদত্যাগ করেন।
একজন কর্মীর সঙ্গে প্রধান নির্বাহী স্টিভ ইস্টারব্রুককে প্রেমের সম্পর্ক ছিল, এমনটা জানার পর ম্যাকডোনাল্ডস ২০১৯ সালে তাকে বরখাস্ত করে। তবে পরে তদন্তে দেখা যায়, এই নির্বাহী আরও তিনজন কর্মীর সঙ্গে সম্পর্কে ছিলেন।