মোদিকে নিয়ে কটূক্তি: পাটনায় কংগ্রেস-বিজেপি কর্মীদের সংঘর্ষ, কলকাতায় কংগ্রেস কার্যালয়ে হামলা

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তার মা–কে নিয়ে অশালীন মন্তব্যের জেরে শুক্রবার (২৯ আগস্ট) বিহারের পাটনায় কংগ্রেস ও বিজেপি কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে।
এছাড়া, কলকাতায় কংগ্রেসের রাজ্য সদর দপ্তরে বিজেপি কর্মীরা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে কংগ্রেস।
রাজ্যে ভোটের প্রস্তুতির মধ্যে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর 'ভোটার অধিকার যাত্রা' ঘিরে এই উত্তেজনা ছড়ায়।
এক ভিডিওতে দেখা যায়, দুই দলের কর্মীরা দলীয় পতাকার ডান্ডা দিয়ে একে অপরকে মারছেন। দুই রাজ্যেই সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হয়েছেন উভয় দলের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী।
অন্যদিকে কংগ্রেস জানিয়েছে, বিধান ভবনে হামলার নেতৃত্ব দেন রাকেশ সিং নামের এক ব্যক্তি। বিজেপি সমর্থকরা পার্টি অফিসে ভাঙচুর চালায় এবং কংগ্রেস নেতাদের ছবি নষ্ট করে।
রাহুল গান্ধীর পোস্টারে কালি ছেটানো হয়েছে বলেও দাবি তাদের।
এ ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং সন্দেহভাজন ৬ বিজেপি কর্মীকে গ্রেপ্তার করে।
রাজ্য কংগ্রেস নেতাদের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
এর আগে, গতকাল বৃহস্পতিবার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে কংগ্রেসের পতাকা পরিহিত এক ব্যক্তি রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বাধীন 'ভোট চুরির প্রতিবাদে' আয়োজিত সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী মোদি ও তার মাকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য করেন। সেই সময়ে অবশ্য রাহুল গান্ধী সেখানে ছিলেন না।
এ ঘটনার পর বিজেপি রাহুলের বিরুদ্ধে পাটনায় মামলা করে এবং কংগ্রেসের কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানায়।

এর আগে শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীকে গালিগালাজ করা ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানায় দ্বারভাঙা পুলিশ।
এক্স-এ (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে পুলিশ জানায়, 'ঘটনাটি সিমরি থানায় এফআইআরের মাধ্যমে নথিভুক্ত হয়েছে। একজন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।'
ঘটনা নিয়ে আসামের এক নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে কংগ্রেসের তীব্র সমালোচনা করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
তিনি বলেন, 'কংগ্রেস সবসময়ই প্রধানমন্ত্রী মোদিকে গালাগাল করে। এই দলটিই ঘৃণার সংস্কৃতির জন্ম দিয়েছে। তারা অনুপ্রবেশকারীদের বাঁচাতে চায়। রাহুল গান্ধীর উচিত জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়া।'
বৃহস্পতিবার এক পোস্টে শাহ বলেন, 'এই ঘটনা দেশের গণতন্ত্রের গায়ে কলঙ্ক। রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেস তার ইতিহাসের সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে।'
শাহ বলেন, 'এই ঘটনায় পরিষ্কার হয়েছে—কংগ্রেস আবার তাদের পুরনো চরিত্রে ফিরে গেছে, যেখান থেকে তারা বরাবরই দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে বিষাক্ত করেছে।'
বিজেপি সভাপতি জে.পি. নাড্ডাও কংগ্রেসের সমালোচনায় বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী মোদি ও তার প্রয়াত মাকে নিয়ে যে ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে, তা সব শালীনতার সীমা ছাড়িয়ে গেছে।'
তিনি রাহুল গান্ধী ও ওই যাত্রায় অংশ নেওয়া আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবকেও ওই ঘটনার জন্য ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানান।
এদিকে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার ঘটনাটিকে 'অপ্রত্যাশিত ও নিন্দনীয়' বলে অভিহিত করেছেন।
তিনি বলেন, 'দ্বারভাঙায় কংগ্রেস ও আরজেডি প্ল্যাটফর্ম থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তার প্রয়াত মাকে নিয়ে যে অশালীন ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে, তা একেবারে অনুচিত। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই।'
তবে কংগ্রেস নেতা পবন খেরা ঘটনার কথা অস্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, বিজেপি 'গুরুত্বহীন' ইস্যু তুলে মূল বিষয়গুলো থেকে জনমতকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে চাইছে।