পাল্টাপাল্টি শুল্ক-বিরোধ এড়াতে স্টকহোমে যুক্তরাষ্ট্র-চীনের দ্বিতীয় দিনের বৈঠক

বিশ্বের বৃহত্তম দুই অর্থনীতির মধ্যে ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য যুদ্ধ থেকে সরে আসতে এবং দীর্ঘদিনের অর্থনৈতিক বিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে সুইডেনের রাজধানীতে দ্বিতীয় দিনের আলোচনা শুরু করেছেন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের কর্মকর্তারা।
আজ মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) স্টকহোমে সুইডেনের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর 'রোজেনবাদ'- এ বৈঠক করছেন তাঁরা।
এই বৈঠকগুলো থেকে তাৎক্ষণিকভাবে বড় কোনো সাফল্যের আশা করা না হলেও, উভয়পক্ষই গত মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে স্বাক্ষরিত শুল্ক চুক্তি আরও ৯০ দিন বাড়াতে রাজী হতে পারে। এটি চলতি বছরের শেষের দিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যে একটি সম্ভাব্য বৈঠকের পথও প্রশস্ত করতে পারে। যদিও সেই বৈঠকের জন্য তাঁর প্রশাসন বাড়তি প্রচেষ্টা করছে আজকেই সেকথা অস্বীকার করেছেন ট্রাম্প।
এর আগে গতকাল সোমবার স্টকহোমের কেন্দ্রে রোজেনবাদে দুই দেশের প্রতিনিধিরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বৈঠক করেন।
মঙ্গলবার সকালে সুইডিশ প্রধানমন্ত্রী উল্ফ ক্রিস্টারসনের সঙ্গে একটি পৃথক বৈঠক করেন মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট। এরপর তিনি চীনের কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনার জন্য রোজেনবাদে পৌঁছান। চীনের ভাইস প্রিমিয়ার হে লিফেংও সভাস্থলে আসেন।
এর আগে প্রথম দিনের আলোচনার পর কোনো পক্ষই কোনো বিবৃতি দেয়নি।
চীনের জন্য আগামী ১২ আগস্টের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি টেকসই শুল্ক চুক্তিতে পৌঁছানো অত্যন্ত জরুরি, নইলে দুই দেশের মধ্যে আবারও একে-অপরের বিরুদ্ধে তিন অংকের হারে শুল্ক আরোপে ফিরবে। এটি তাদের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে কার্যত একপ্রকার নিষেধাজ্ঞা হয়ে উঠবে, যার ফলে বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থায় নতুন করে অস্থিরতা দেখা দিতে পারে।
এর আগে মে ও জুন মাসে চীন-যুক্তরাষ্ট্র কিছু বিষয়ে প্রাথমিক সমঝোতায় পৌঁছালেও— পূর্ণাঙ্গ কোনো চুক্তি এখনও হয়নি। নতুন করে আলোচনার মধ্যেই ট্রাম্প ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে একটি বড় বাণিজ্য চুক্তি করেছেন। ফলে ১৫ শতাংশ শুল্ক দিয়ে বেশিরভাগ ইউরোপীয় পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করা যাবে। একইভাবে জাপানের সঙ্গেও চুক্তি হয়েছে ওয়াশিংটনের। বৃহৎ অর্থনীতির মধ্যে এখন চীনই বাকি। বেইজিং যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার এবং বৈশ্বিক প্রতিদ্বন্দ্বীও।
ফিন্যান্সিয়াল টাইমস সোমবার জানিয়েছে, চীনের সঙ্গে আলোচনায় বিঘ্ন না ঘটাতে যুক্তরাষ্ট্র দেশটিতে প্রযুক্তি রপ্তানিতে দেওয়া বেশকিছু বিধিনিষেধ সাময়িকভাবে স্থগিত রেখেছে, যাতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চীনের প্রেসিডেন্ট শির সঙ্গে সম্ভাব্য বৈঠকের পথে অগ্রসর হতে পারেন।
তবে আজই ট্রাম্প নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম 'ট্রুথ সোশ্যাল'-এ লিখেছেন, "এটি সঠিক নয়, আমি কোনো বৈঠকের চেষ্টা করছি না! আমি চীন যেতে পারি, তবে শুধুমাত্র প্রেসিডেন্ট শি'র আমন্ত্রণে—যা ইতোমধ্যেই জানানো হয়েছে। অন্যথায়, আমার কোনো আগ্রহ নেই!"