ইরানের বিষয়ে ট্রাম্পের সামরিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা হ্রাসের প্রস্তাব মার্কিন সিনেটরের

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যেন কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়া ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক শক্তি ব্যবহার করতে না পারেন, সেজন্য একজন ডেমোক্র্যাট দলীয় সিনেটর আজ সোমবার একটি আইন প্রস্তাব করেছেন।
ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনায় যখন একটি বিস্তৃত সংঘাতের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, ঠিক তখন এ প্রস্তাব উত্থাপন করা হলো।
ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের ডেমোক্র্যাট দলীয় মার্কিন সিনেটর টিম কেইন দীর্ঘদিন ধরে যুদ্ধ ঘোষণার ক্ষমতা হোয়াইট হাউসের কাছ থেকে কংগ্রেসের হাতে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ২০২০ সালে, কেইন একই ধরনের একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলেন, যাতে ট্রাম্পের ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ক্ষমতা সীমিত করা যায়। সেই প্রস্তাব সিনেট ও হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভে পাস হয়। কয়েকজন রিপাবলিকানও এতে সমর্থন দিয়েছিলেন। কিন্তু প্রস্তাবটি রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ভেটো ঠেকাতে যথেষ্ট ভোট লাভে ব্যর্থ হয়।
কেইন বলেন, তার সর্বশেষ যুদ্ধ ক্ষমতা সংক্রান্ত প্রস্তাবটি জোর দিয়ে বলছে যে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অনুযায়ী যুদ্ধ ঘোষণার একমাত্র ক্ষমতা কংগ্রেসের এবং ইরানের সঙ্গে যেকোনো ধরনের বৈরিতার জন্য অবশ্যই যুদ্ধ ঘোষণা অথবা নির্দিষ্ট সামরিক শক্তি ব্যবহারের স্পষ্ট অনুমোদন থাকতে হবে।
এক বিবৃতিতে কেইন বলেন, 'ইরানের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া ততক্ষণ আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থ নয়, যতক্ষণ না এটা যুক্তরাষ্ট্রকে রক্ষার জন্য জরুরি হয়ে পড়ে। আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন যে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনা দ্রুতই যুক্তরাষ্ট্রকে আরেকটি অন্তহীন যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে পারে।'
মার্কিন আইনের অধীনে, যুদ্ধ ক্ষমতার প্রস্তাবগুলো বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত, যার অর্থ সিনেটকে তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে এবং ভোট দিতে হবে।
ইরানের পারমাণবিক ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিকে ধ্বংস করার লক্ষ্যে গত শুক্রবার হামলা চালায় ইসরায়েল। জবাবে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান।
দুই দেশই হামলা অব্যাহত রেখেছে। এতে বহু বেসামরিক মানুষ নিহত ও আহত হচ্ছেন। এতে বিশ্ব নেতাদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে যে দুই রাষ্ট্রের মধ্যে দীর্ঘদিনের পুরনো এই শত্রুতা বড় ধরনের আঞ্চলিক সংঘাতে রূপ নিতে পারে।
ট্রাম্প একদিকে ইসরায়েলের হামলাকে প্রশংসা করেছেন। অন্যদিকে ইরানের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন যে যুক্তরাষ্ট্র এ সংঘাতে অংশ নিয়েছে। ট্রাম্প তেহরানকে সতর্ক করেছেন যেন তারা তাদের প্রতিশোধের পরিধি বাড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে লক্ষ্য না করে।
গতকাল রোববার কানাডায় এক সম্মেলনে যোগ দিতে যাওয়ার আগে ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল তিনি ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা কমাত কী করছেন।
জবাবে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, 'আমি আশা করি একটা সমঝোতা হবে। আমার মনে হয় এখনই সময় এসেছে সমঝোতার।'
অনুবাদ: রেদওয়ানুল হক