পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে ভারতের স্টেলথ ফাইটার প্রকল্পের কাঠামো অনুমোদন

পাকিস্তানের সঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ের সামরিক সংঘাতের পর— সমরাস্ত্র প্রতিযোগিতার নতুন অধ্যায়ে পা রেখেছে উপমহাদেশ। এরমধ্যে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দেশটির সবচেয়ে উন্নত স্টেলথ যুদ্ধবিমান নির্মাণ প্রকল্পের জন্য একটি কাঠামো অনুমোদন করেছে।
আজ মঙ্গলবার (২৮ মে) ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এসব তথ্য জানিয়েছে।
ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত এয়ারোনটিক্যাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে এবং শিগগিরই যুদ্ধবিমানটির প্রোটোটাইপ তৈরিতে আগ্রহী প্রতিরক্ষা শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে প্রাথমিক আগ্রহপত্র আহ্বান করবে। এই স্টেলথ ফাইটারটি হবে দুই ইঞ্জিনবিশিষ্ট পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান।
ভারতীয় বিমানবাহিনীর জন্য এই প্রকল্প অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে ভারতের বায়ুসেনার যুদ্ধবিমানের স্কোয়াড্রন সংখ্যা ৩১-এ নেমে এসেছে, যেখানে দরকার ৪২ স্কোয়াড্রন। একই সময়ে চীন দ্রুতগতিতে তাদের বিমানবাহিনীর সক্ষমতা বাড়াচ্ছে। পাকিস্তানের বিমান বাহিনীর (পিএএফ) কাছে রয়েছে চীনের অন্যতম আধুনিক যুদ্ধবিমান জে-১০। অচিরেই চীনের তৈরি জে-৩৫ যুদ্ধবিমানও যুক্ত হচ্ছে পিএএফের বহরে।
এই অবস্থায়, নড়েচড়ে বসতে হচ্ছে ভারতকে।
ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই স্টেলথ যুদ্ধবিমান প্রকল্পে একটি দেশীয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অংশীদারিত্ব করবে সরকার। প্রতিষ্ঠানগুলো এককভাবে বা যৌথ উদ্যোগে দরপত্র দিতে পারবে। সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য দরপত্র উন্মুক্ত থাকবে।
চলতি বছরের মার্চে ভারতের একটি প্রতিরক্ষা কমিটি সুপারিশ করেছিল যে, দেশটির সামরিক বিমান নির্মাণে বেসরকারি খাতকে অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন, যাতে বিমানবাহিনীর সক্ষমতা বাড়ানো যায়। ভারতে স্থানীয়ভাবে নির্মিত বেশিরভাগ যুদ্ধবিমান প্রস্তুত করে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান— হিন্দুস্তান অ্যারোনটিকস লিমিটেডের (এইচএএল বা হাল)। এতে সংস্থাটির ওপর চাপ কমবে বলেও মতপ্রকাশ করেছে কমিটি।
ভারতীয় বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল অমর প্রীত সিং লাইট ফাইটার জেট— তেজাস সরবরাহে ধীরগতির জন্য এর আগে এইচএএলকে প্রকাশ্যে সমালোচনা করেছিলেন। যদিও প্রতিষ্ঠানটি যুক্তরাষ্ট্রের জেনারেল ইলেকট্রিকের সরবরাহ চেইন সমস্যার কারণে দেরীতে ইঞ্জিন সরবরাহ পাওয়াকে এজন্য দায়ী করে।
পারমাণবিক অস্ত্রধারী প্রতিবেশী দুই দেশ– ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলতি মাসে চার দিনব্যাপী সংঘর্ষে যুদ্ধবিমান, ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন ও কামান ব্যবহৃত হয়েছে। পরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।
রয়টার্সের সঙ্গে দুই দেশের ১৫ জন নিরাপত্তা কর্মকর্তা, প্রতিরক্ষা খাতের নির্বাহী ও বিশ্লেষকের সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে—এই সংঘাতেই প্রথমবারের মতো ভারত ও পাকিস্তান ব্যাপকভাবে ড্রোন ব্যবহারে করেছে। বর্তমানে উভয় দেশ একটি 'ড্রোন অস্ত্র প্রতিযোগিতা'-তে জড়িয়ে পড়েছে।