ইউক্রেন যুদ্ধের ‘রক্তপাত থামাতে’ সোমবার পুতিনকে ফোন দেবেন ট্রাম্প

সোমবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইউক্রেন যুদ্ধে 'রক্তপাত বন্ধ করার' চেষ্টা নিয়ে এই আলোচনা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। খবর বিবিসির।
ট্রুথ সোশাল-এ এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, স্থানীয় সকাল ১০টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা) পুতিনের সঙ্গে এই ফোনালাপ হবে। পরে তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং কয়েকটি নেটো দেশের নেতাদের সঙ্গেও কথা বলবেন।
গত শুক্রবার ইস্তানবুলে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে তিন বছর পর প্রথম সরাসরি আলোচনা হলেও কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। তবে একটি বন্দি বিনিময়ের বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে।
ট্রাম্প বলেছিলেন, যদি পুতিন ইস্তানবুল আলোচনায় অংশ নেন, তবে তিনিও সেখানে উপস্থিত থাকবেন। তবে পুতিন সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। ট্রাম্পের দাবি, যুদ্ধ শেষ করতে বাস্তব অগ্রগতি কেবল তখনই আসবে, যখন তিনি ও পুতিন সরাসরি মুখোমুখি হবেন।
ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ রুশ বার্তা সংস্থাগুলোকে জানিয়েছেন, ট্রাম্প-পুতিন ফোনালাপের প্রস্তুতি চলছে। তিনি বার্তা সংস্থা তাসকে বলেন, আলোচনার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
ট্রুথ সোশাল পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, 'আশা করি এটি একটি ফলপ্রসূ দিন হবে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে এবং এই ভয়াবহ যুদ্ধ—যেটি কখনোই শুরু হওয়া উচিত ছিল না—তা শেষ হবে।'
ইউরোপীয় নেতারাও চলমান সংঘর্ষে অন্তত ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির জন্য রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছেন।
ট্রাম্প ও পুতিনের সম্ভাব্য শীর্ষ বৈঠক নিয়েও আলোচনা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও ট্রাম্প বলছেন, রাশিয়া তার প্রত্যাশার তুলনায় ধীরগতিতে এগোচ্ছে, তবে মার্কিন মধ্যস্থতার চেষ্টা তারা স্বাগত জানিয়েছে। শনিবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ও রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের মধ্যে ফোনালাপে এমনটা উঠে আসে।
রাশিয়া ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রায় আগ্রাসন শুরু করে।
ইস্তাম্বুল বৈঠকের পর ইউক্রেন ফের একটি পূর্ণাঙ্গ এবং শর্তহীন যুদ্ধবিরতির দাবি জানায়। তবে ইউক্রেনীয় এক কর্মকর্তার বরাতে জানা গেছে, মস্কো নতুন কিছু 'অগ্রহণযোগ্য' দাবি তুলেছে। এর মধ্যে রয়েছে—ইউক্রেনকে তার নিজস্ব ভূখণ্ডের একটি বড় অংশ থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে হবে, যুদ্ধবিরতির শর্ত হিসেবে।
রুশ প্রতিনিধিদলের প্রধান ও পুতিনের উপদেষ্টা ভ্লাদিমির মেদিনস্কি জানান, আলোচনায় তারা সন্তুষ্ট এবং ভবিষ্যতে যোগাযোগ চালিয়ে যেতে আগ্রহী।
তবে ওই আলোচনা শেষে কিছুক্ষণ পরই সুমি অঞ্চলে একটি যাত্রীবাহী বাসে রাশিয়ার ড্রোন হামলায় ৯ জন নিহত হয়। এ ঘটনাকে 'বেসামরিক নাগরিকদের ইচ্ছাকৃত হত্যা' বলে মন্তব্য করেছেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। তিনি মস্কোর বিরুদ্ধে আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার আহ্বান জানান।
রাশিয়া এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য না করলেও রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম জানায়, তারা সুমি প্রদেশে একটি 'সামরিক প্রস্তুতিস্থল' লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে।