ভারতে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ হলে পাকিস্তানকে আরও হামলার হুঁশিয়ারি দিলেন মোদি

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সোমবার পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ভারতের ওপর আবারও হামলা হলে সীমান্ত পেরিয়ে 'সন্ত্রাসবাদীদের ঘাঁটি' লক্ষ্য করে ফের অভিযান চালানো হবে। তিনি আরও বলেন, ইসলামাবাদের তথাকথিত 'পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইল' দিয়ে ভারতকে দমন করা যাবে না।
ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে 'সন্ত্রাসীদের ক্যাম্প' দাবি করে হামলা চালানোর পর এটি ছিল মোদির প্রথম প্রকাশ্য মন্তব্য। তার বক্তব্যে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে নয়াদিল্লির অবস্থান আরও কঠোর হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যদিও এই সংঘর্ষ শুরুর আগেই ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক উত্তপ্ত ছিল।
এর আগে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্ততায় পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। তার দুই দিন পর এই মন্তব্য করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
চার দিন ধরে টানা গোলাগুলি ও হামলার পর এই যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আসে। ওই সময়ে উভয় দেশ পরস্পরের সামরিক ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়। এতে বহু বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়।
গত মাসে ভারতীয় কাশ্মীরে হিন্দু পর্যটকদের ওপর ইসলামপন্থি জঙ্গিদের হামলায় ২৬ জন নিহত হয়। এর জবাবে বুধবার (৭ মে) ভারত পাকিস্তান ও পাক-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে 'সন্ত্রাসী ঘাঁটি' বলে চিহ্নিত নয়টি স্থানে হামলা চালায়।
তবে ইসলামাবাদ কাশ্মীর হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং একটি নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছে।
টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে নরেন্দ্র মোদি বলেন, 'ভারতে যদি জঙ্গি হামলা হয়, তাহলে উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে… আমাদের হিসাব অনুযায়ী। তিনি আরও বলেন, 'আসন্ন দিনগুলোতে আমরা পাকিস্তানের প্রতিটি পদক্ষেপ পর্যবেক্ষণ করব… পাকিস্তান কী ধরনের মনোভাব গ্রহণ করে, সেটাও আমরা বিচার করব।'
মোদি বলেন, 'পারমাণবিক অস্ত্রের হুমকির আড়ালে যে সন্ত্রাসী ঘাঁটি গড়ে তোলা হচ্ছে, ভারত সেগুলোর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট ও চূড়ান্ত আঘাত হানবে।' এ সময় তিনি কাশ্মীর হামলার পর পাকিস্তানের সঙ্গে সংলাপ শুরুর এবং আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য নয়াদিল্লির শর্তগুলোও তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, 'ভারতের অবস্থান স্পষ্ট, সন্ত্রাস ও সংলাপ একসঙ্গে চলতে পারে না। সন্ত্রাস ও বাণিজ্যও একসঙ্গে চলতে পারে না। এবং পানি ও রক্ত একসঙ্গে প্রবাহিত হতে পারে না।' এ মন্তব্যের মাধ্যমে তিনি দুই দেশের মধ্যে হওয়া পানি বণ্টন চুক্তির প্রতি ইঙ্গিত করেন, যেটি পরে ভারত স্থগিত করেছিল।
তার এই বক্তব্যের পর ইসলামাবাদের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।